ছত্তিসগড়ের পর এবার বড় মাও হামলার আশঙ্কা রাজ্যে

ছত্তিসগড়েই শেষ নয়। আগামীদিনে বড়মাপের মাওবাদী হামলা হতে পারে বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গেও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, রণকৌশল আমূল বদলে ফেলায়, আশঙ্কা থাকলেও বস্তারে মাওবাদী হামলা প্রতিরোধ করা যায়নি। সংগঠনের খোলনলচে মাওবাদীরা এখনও আগের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর।

Updated By: May 26, 2013, 06:25 PM IST

ছত্তিসগড়েই শেষ নয়। আগামীদিনে বড়মাপের মাওবাদী হামলা হতে পারে বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গেও। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, রণকৌশল আমূল বদলে ফেলায়, আশঙ্কা থাকলেও বস্তারে মাওবাদী হামলা প্রতিরোধ করা যায়নি। সংগঠনের খোলনলচে মাওবাদীরা এখনও আগের থেকেও বেশি ভয়ঙ্কর।
এক নজরে দেখে নেব মাওবাদী সংগঠনের বর্তমান অবস্থা আর পরিকল্পনার কথা
২৪ নভেম্বর, ২০১১
কিষেণজির মৃত্যু
কিষেণজির মৃত্যুতে বড় ধাক্কা খেয়েছিল মাওবাদীদের সংগঠন। বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলে দুর্বল হয়ে পড়ে তাদের প্রতিরোধ। পরিস্থিতি বুঝে জরুরি বৈঠকে বসে মাও শীর্ষ নেতৃত্ব। কৌশলগত ত্রুটি খুঁজে বের করতে শুরু হয় আত্মসমীক্ষা।  
কাঠগড়ায় পশ্চিমবঙ্গ লাইন--
---------------------
মাওবাদী আত্মসমীক্ষায় বিতর্কের ঝড় ওঠে পশ্চিমবঙ্গ লাইন নিয়ে
 
সমালোচনার মুখে পড়ে গণ আন্দোলনে সরাসরি দলের শীর্ষ নেতাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কৌশলও
 
পশ্চিমবঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের পাশাপাশি, লালগড়কে কেন্দ্র করে গণ আন্দোলন গড়ে উঠেছিল
 
কিষেণজি, বিকাশের মতো একাধিক মাওবাদী শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যেই সেই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে থাকেন
 
শীর্ষস্থানীয় নেতারা সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় গণ সংগঠনগুলি এসে গিয়েছিল পুলিসের নজরদারিতে
 
ফলে জঙ্গলমহলে গণ আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়ার পর অন্য নামে কোনও সংগঠন গড়ে তুলে তাকে উজ্জীবিত করার উপায় ছিল না
 
যদিও, প্রকাশ্যে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত না হয়েও মাওবাদীদের হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে দেশের বহু গণসংগঠন
এই বিতর্কের পর সংগঠনের খোলনলচে পাল্টানোর কাজে হাত লাগায় মাওবাদী শীর্ষ নেতৃত্ব।
সংগঠনে সংস্কার
দণ্ডকারণ্যের নিরাপদ ঘাঁটিতেই সংগঠনের সদর দফতর রেখে দেওয়া হয়
 
কেন্দ্রীয় কমিটি ও পলিটব্যুরোর কাঠামোও অপরিবর্তিত রাখে মাওবাদীরা
 
যদিও, কেন্দ্রীয় কমিটির নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন রাজ্য ও সীমান্ত কমিটির খোলনলচে বদলে ফেলা হয় 
 
সংগঠনের বিভিন্ন কমিটির অনেকেই ধরা পড়ে গিয়েছিলেন। সেই সুযোগে পুরোনো কমিটি আমূল বদলে ফেলা হয়
 
গণ সংগঠনের বহু নেতাকেও মূল সংগঠনের বিভিন্ন কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়  
 
মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজ, শ্রমিকশ্রেণি ও স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের মধ্যে নতুন করে সংগঠনকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়
সংগঠনের সংস্কারের পাশাপাশি, নেতাদের চলাফেরার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনে মাওবাদীরা।
নিয়ন্ত্রণে নেতারাও
---------------
সিদ্ধান্ত হয় শীর্ষ নেতারা একাধিক দিন এক জায়গায় থাকবেন না
 
মোবাইল যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়
 
যোগাযোগ ব্যবস্থা ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় প্রাচীনকালের চিঠিপত্রের যুগে
 
চিঠিপত্র আদানপ্রদানের ক্ষেত্রেও কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে ক্যুরিয়ার না করারই সিদ্ধান্ত হয় 
সশস্ত্র সংগ্রামের ক্ষেত্রেও কয়েকটি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মাওবাদী নেতৃত্ব।
রণনীতি বদল
-----------
সশস্ত্র সংগ্রামের আক্রমণাত্মক নীতি থেকে অনেকটাই সরে এসে শক্তি সঞ্চয়ের সিদ্ধান্ত নেয় মাওবাদীরা
 
বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি করা যাবে এমন ক্ষেত্রেই আক্রমণের পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়
 
সিদ্ধান্ত হয়, নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত আক্রমণ চালানো হবে
শনিবার ছত্তিসগড়ে বাস্তারে কংগ্রেসের কনভয়ে হামলাও মাওবাদীদের সাম্প্রতিক রণনীতিরই ফসল। গণ সংগঠনের মাধ্যমে ওই কনভয় সম্পর্কে আগাম তথ্য মাওবাদীদের কাছে অনেক আগে থেকেই ছিল প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশাতেও এরকম বড় ধরনের হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেননি গোয়েন্দারা। তবে এখনই আরেকটা হামলার পথে মাওবাদীরা যাবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

.