বীরভূমে থেকেও নানুরে গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী

বীরভূম গিয়েও নানুরের বাসাপাড়ায় তৃণমূলের ২৭ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী। ২০০০ সালের ২৭ জুলাই নানুনের সূচপুরে ১১ জন দলীয় কর্মী নিহত হন। তারপর থেকেই এই দিনটি নানুর দিবস হিসাবে পালন করে তৃণমূল। ২০১০ পর্যন্ত প্রতিবছরই এই দিনটিতে নানুরে গেছেন তৃণমূল নেত্রী।

Updated By: Jul 27, 2012, 04:13 PM IST

বীরভূম গিয়েও নানুরের বাসাপাড়ায় তৃণমূলের ২৭ জুলাইয়ের অনুষ্ঠানে গেলেন না মুখ্যমন্ত্রী। ২০০০ সালের ২৭ জুলাই নানুনের সূচপুরে ১১ জন দলীয় কর্মী নিহত হন। তারপর থেকেই এই দিনটি নানুর দিবস হিসাবে পালন করে তৃণমূল। ২০১০ পর্যন্ত প্রতিবছরই এই দিনটিতে নানুরে গেছেন তৃণমূল নেত্রী। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর একবারও নানুরে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। আজ মুখ্যমন্ত্রী বোলপুরে থাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা আশা করেছিলেন তিনি বাসাপাড়ার অনুষ্ঠানে যাবেন। কিন্তু, তা না হওয়ায় ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীদের একাংশ। আজ বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠে মুখ্যমন্ত্রীর জনসভা আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে জেলায় তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। অভিযোগ, সেই কারণেই নানুরের অনুষ্ঠানে যাননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে, মুখ্যমন্ত্রী না গেলেও আজ নানুরে নিহত দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানান মুকুল রায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র।
বীরভূমের বোলপুরে মহকুমা শাসকের অফিসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের বৈঠক শেষ হয়েছে। এদিন বোলপুরে একটি আইটি হাবেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। সেই সঙ্গে মুরারই ও নলহাটিতে পলিটেকনিক কলেজের শিলান্যাস করবেন তিনি। এরপর বিকেলে ডাকবাংলো মাঠে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুষ্ঠানে ভূমিহীনদের পাট্টা, ইমাম ভাতা, নিজ গৃহ নিজ ভূমি প্রকল্প সহ একগুচ্ছ কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। আগামিকাল তিনি যাবেন বর্ধমানে।
এদিকে বীরভূমে মুখ্যমন্ত্রীর সফরে বিতর্ক ছড়িয়েছে আইটি হাবের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে। বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরের সামনেই শুক্রবার তৃণমূলেরই পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতা কৃষকরা। এই কৃষকদের কাছ থেকেই চাষযোগ্য জমি নিয়ে হাবটি তৈরি করা হয়েছে। জমিদাতাদের অভিযোগ, তাঁরা জমির ন্যায্য দাম পাননি। জমির দাম একরপ্রতি ১৫ লাখ টাকা করে হলেও একরপ্রতি মাত্র ৪৮ হাজার টাকা তাঁরা হাতে পেয়েছেন। প্রতিবাদে বোলপুর মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান জমিদাতাদের একাংশ। ২০১০ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সোনা চৌধুরীর হত্যার ঘটনায় পুলিসি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে চান সোনা চৌধুরীর স্ত্রী ও ছেলে। অভিযোগ ওঠে গোষ্ঠীকোন্দলের জেরেই খুন হতে হয় নানুরে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা এই নেতাকে। ২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও এই ঘটনায় চার্জশিট পেশ করেনি পুলিস। নিহতদের পরিবারের অভিযোগ, অভিযুক্তদের ধরতে তেমন উদ্যোগী হয়নি পুলিস। বারবার পুলিসের কাছে জানিয়েও কোনও ফল না মেলায় অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দরবার করতে চলেছেন সোনা চৌধুরীর পরিবারের সদস্যেরা।
গতকাল রাতে মুখ্যমন্ত্রীর থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বোলপুর সার্কিট হাউসে। অভিযোগ, সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থায় খুশি না হওয়ায়, মুখ্যমন্ত্রীকে সার্কিট হাউসে রাখতে চান নি তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা। ফলে মুখ্যমন্ত্রীকে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হোটেলে। অথচ সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর ঘর ছাড়া নিরাপত্তাকর্মীদের থাকার মত যথেষ্ট সংখ্যক ঘর না ছিল না। ফলে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীনিকেতনে জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের অতিথি নিবাসে। সেখানে চারটি ঘর খালি করে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সঙ্গে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত করা হয়। গোটা ঘটনায় প্রশাসনের তরফে গাফিলতির অভিযোগ উঠছে।

.