সতেরো বছর পর জানতে পারলেন মৃত সন্তান বেঁচে রয়েছে, মাতৃত্বের দাবিতে আদালতে মা
মাতৃত্বের স্বীকৃতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক মহিলা। হুগলির পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা কেয়া মজুমদারের অভিযোগ, তিনি ভালবেসে এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিবার সেই বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই সন্তান জন্ম নেওয়ার পর তাকে মৃত বলে জানিয়েছিলেন তাঁরই বাবা। কিন্তু ১৭ বছর পর কেয়া বুঝতে পারেন, বাবার ঘোষণা করা মৃত সন্তান বেঁচে রয়েছে। সেই সন্তানকে ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
মাতৃত্বের স্বীকৃতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক মহিলা। হুগলির পাণ্ডুয়ার বাসিন্দা কেয়া মজুমদারের অভিযোগ, তিনি ভালবেসে এক যুবককে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু তাঁর পরিবার সেই বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই সন্তান জন্ম নেওয়ার পর তাকে মৃত বলে জানিয়েছিলেন তাঁরই বাবা। কিন্তু ১৭ বছর পর কেয়া বুঝতে পারেন, বাবার ঘোষণা করা মৃত সন্তান বেঁচে রয়েছে। সেই সন্তানকে ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
হুগলির খন্যানের বিজয় নারায়ণ কলেজের বাংলার শিক্ষিকা কেয়া মজুমদার। ১৯৯৫ সালে ভালবেসে বিয়ে করেন প্রবীর মজুমদারকে। প্রবীর মজুমদারের সাইকেলের ব্যবসা রয়েছে। শুরু থেকেই কেয়ার বাবা বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য এই সম্পর্ক মেনে নেননি। ১৯৯৭ সালের ৪ অগাস্ট কেয়া একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। কেয়ার বাড়ি বরানগরের টেগোর পার্কে। প্রিম্যাচিওর বেবি হওয়ায় তাকে ও সন্তানকে মারওয়ারি রিলিফ সোস্যাইটিতে ভর্তি করা হয়। জন্মের ৫ দিন বাদে বৈদ্যনাথবাবু কেয়া ও প্রবীরকে জানান সন্তান মারা গিয়েছে। তারপর কাপড়ে মোড়া একটি দেহ কবরও দেওয়া হয়।
এরপর কেটে গিয়েছে সতেরো বছর। কিন্তু হঠাত্ করে একদিন বাবার কথায় সন্দেহ হয় কেয়ার। এরপরই খোঁজখবর নিতে শুরু করেন কেয়া। জানতে পারেন, বাবা প্রায় রোজই আদ্যাপীঠের একটি হোমে যান। সন্দেহ তীব্র হয়। কেয়া একদিন নিজেই ওই হোমে চলে যান। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, তাঁর বাবা ওই হোমে সুরথ প্রসাদ সিং নামে একটি ছেলেকে রোজ দেখতে আসেন। তারপর একদিন হোমে গিয়ে সুরথের সঙ্গে দেখা করেন কেয়া। কেয়ার দাবি, সতেরো বছরের সুরথই তাঁর সন্তান।
কিন্তু এখানেও গণ্ডগোল। মাতৃত্বের দাবিতে কেয়া হোমে যান। জানতে পারেন, দ্যুতিপ্রাণা দে নামে এক মহিলার সন্তান হিসেবে হোমের খাতায় নথিভুক্ত রয়েছে সুরথের নাম। বিচারের আশায় বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কেয়া। কিন্তু সুরাহা হয়নি। সন্তানকে ফিরে পেতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন মজুমদার দম্পতি। ডিএনএ পরীক্ষাতেও রাজি কেয়া। বেলঘরিয়া থানাকে ঘটনার তদন্ত করে এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
সতেরো বছর পর সন্তানকে ফিরে পাওয়ার লড়াই, তার পরতে পরতে জড়িয়ে নাটকীয় উপাদান। মজুমদার দম্পতি এখন আদালতের দিকেই তাকিয়ে।