কমিশনের সঙ্গে চরম সংঘাতের পথে রাজ্য

শেষ পর্যন্ত কমিশনের সঙ্গে চরম সংঘাতের পথেই যাচ্ছে রাজ্য সরকার। মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে, এ সপ্তাহেই সরকার কমিশনকে চূড়ান্ত চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেবে, দুদফাতেই হবে পঞ্চায়েত ভোট। ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হবে না। কমিশন তাতে রাজি না হলে সরকার এক তরফা ভাবেই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেবে বলেই মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে।

Updated By: Mar 11, 2013, 11:07 PM IST

শেষ পর্যন্ত কমিশনের সঙ্গে চরম সংঘাতের পথেই যাচ্ছে রাজ্য সরকার। মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে, এ সপ্তাহেই সরকার কমিশনকে চূড়ান্ত চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেবে, দুদফাতেই হবে পঞ্চায়েত ভোট। ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করা হবে না। কমিশন তাতে রাজি না হলে সরকার এক তরফা ভাবেই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেবে বলেই মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে।
পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে সরকারের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এরকম বিরোধের সাক্ষী আগে কখনও থাকেনি রাজ্য। বেশ কয়েক মাস ধরেই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়েছে রাজ্য সরকার। পুজোর পরেই পঞ্চায়েত ভোট হবে বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কমিশন জানিয়েছিল, তারা তৈরি নয়। তারপরে শীতকালে ভোট চায় সরকার।
 
 
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সেই কাজ শেষ হবে। তাই ফেব্রুয়ারিতে ভোট করা সম্ভব নয়। ফেব্রুয়ারিতে ভোট হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে হবে বলেও জানায় কমিশন। বর্তমান পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ মে মাস পর্যন্ত। আইন মেনে তার আগে পঞ্চায়েতগুলি ভাঙা যাবে না বলেও কমিশন যুক্তি দেয়।    
 
বিরোধ তারপরেও চলতে থাকে। কমিশন তিন দফায় ভোট চাইলেও সরকার চেয়েছিল এক দফায় ভোট। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে পরামর্শ চান রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। শেষ পর্যন্ত দু দফায় ভোটে রাজি হয় সরকার। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সরকার রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে ২০ ও ২৪ এপ্রিল দু দফায় ভোট করার কথা বলে।
 
২০ ফেব্রুয়ারি কমিশন সরকারকে পাল্টা চিঠিতে জানায় ভোট হোক তিন দফায়, ২৮ এপ্রিল এবং ২ মে ও ৬ মে। ১৪ মার্চ ফের কমিশনকে চিঠি দিয়ে সরকার জানায়, তারা ২৪ ও ২৮ এপ্রিল দুদফায় ভোট করতে চায়।
 
সাতই মার্চ রাজ্যকে দেওয়া চিঠিতে কমিশন জানিয়ে দেয়, তারা আগের অবস্থানে অনড়। ভোট হোক তিন দফায়, ২৮ এপ্রিল এবং ২ মে ও ৬ মে। কমিশনের যুক্তি আইন অনুযায়ী সব কাজ শেষ করে তার আগে ভোট করা সম্ভব নয়।
 
বিরোধ বাধে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়েও। কমিশনের প্রস্তাব পঞ্চায়েত ভোট হোক আটশো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে। অতি সম্প্রতি তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগে নারাজ সরকার প্রয়োজনে ভিন রাজ্য থেকে পুলিস এনে ভোট করতে চায়।
 
আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করার অধিকার রাজ্য সরকারের হাতেই। আর নির্ঘণ্ট প্রকাশ থেকে ভোট পরিচালনার পুরো দায়িত্ব কমিশনের। কমিশনের যুক্তি, ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার দায়িত্ব তাদের। সেজন্যই তারা কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে তিন দফায় ভোট করার প্রস্তাব দিয়েছে।
 
সোমবার রাজ্য সরকারের সূত্রে জানা গিয়েছে, এ সপ্তাহেই ফের কমিশনকে চূড়ান্ত চিঠি দেওয়া হবে। তাতে সরকার স্পষ্টই জানিয়ে দেবে দু দফাতেই হবে পঞ্চায়েত ভোট। সম্ভবত ২৪ ও ২৮ এপ্রিলই ভোটের দিন করার বলবে সরকার। ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীও নিয়োগ করা হবে না। কমিশন তাতে একমত না হলে সরকার এক তরফা ভাবেই ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেবে বলেই মহাকরণ সূত্রে জানা গেছে।

.