বীরভূমের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব- কেন কাজলকে ধরতে এগোচ্ছে না পুলিস?
বীরভূমের বাহিরীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিহত তিন। অভিযোগের তির কাজল শেখ গোষ্ঠীর দিকে। খোদ অনুব্রত মণ্ডল চাইছেন এই সুযোগে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে গারদে পুরতে। তবুও কেন কাজলকে ধরতে এগোচ্ছে না পুলিস?
ওয়েব ডেস্ক: বীরভূমের বাহিরীতে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিহত তিন। অভিযোগের তির কাজল শেখ গোষ্ঠীর দিকে। খোদ অনুব্রত মণ্ডল চাইছেন এই সুযোগে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীকে গারদে পুরতে। তবুও কেন কাজলকে ধরতে এগোচ্ছে না পুলিস?
কেষ্ট বনাম কাজল। বীরভূমে তৃণমূলের ইকুয়েশন এককথায় এটাই। সোমবার বোলপুর-পালিতপুর সড়কের ওপর বাহিরীতে প্রকাশ্যে খুন নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরার অনুগামী তিন তৃণমূল কর্মী। গদাধর আবার অনুব্রতর ঘনিষ্ঠ। তাই, দুয়ে দুয়ে চার। খুনের ঘটনায় অভিযোগের আঙুল কাজল শেখ গোষ্ঠীর দিকে।
সূত্রের খবর, কাজল শেখকে গ্রেফতারের জন্য বোলপুর থানার ওপর চাপ রয়েছে খোদ অনুব্রত মণ্ডলের। তারপরও কেন কাজল শেখের টিকি ছুঁতে পারছে না পুলিস? তা হলে কি
শুধুমাত্র অনুব্রতর কথায় এগোতে চাইছে না বোলপুর থানা? আরও ওপর থেকে নির্দেশ আসার অপেক্ষা? সেই নির্দেশ কি আসবে?
বীরভূমের নানুর, লাভপুর, বোলপুর ও বর্ধমানের কেতুগ্রাম, মঙ্গলকোটে তৃণমূলের সংগঠনে কাজল শেখই শেষ কথা। অজয়ের ধারে বালি খাদানের বখরা আদায় থেকে শুরু করে নানারকম তোলাবাজি। কাজল শেখের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তোলাবাজির সেই টাকার একটা অংশ দলের তহবিলে না যাওয়াই আশ্চর্যের।
বীরভূম-বর্ধমানের অন্তত ৫টি বিধানসভা এলাকায় দলীয় সংগঠন টিকিয়ে রাখতে কাজল শেখ ছাড়া উপায় নেই। তাই কি ব্যুমেরাং হওয়ার আশঙ্কায় এখনই তাঁর গ্রেফতার চাইছে না তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব?
লোকে বলে জেলায় একমাত্র কাজল শেখকেই খানিকটা সমঝে চলেন অনুব্রত মণ্ডল। ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখতে, অনুব্রত যাতে একেবারে ফাঁকা মাঠ পেয়ে না যান সে জন্যই কি কাজল শেখকে গরাদের এ পারে রাখার চেষ্টা?
বাহিরীতে তিন তৃণমূল কর্মী খুনের সময় বিধানসভায় মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন কাজল শেখ ও গদাধর হাজরা। তাই, কাজলের কাছে অ্যালিবাই আছে। বীরভূমে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামাল দিতে ফিরহাদ হাকিমকে দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
সোমবার ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে বৈঠক করতে কাজল শেখ কেন বিধানসভায় যান? মন্ত্রী ও নানুরের বিধায়ক গদাধর হাজরার সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়? কাজল শেখের গ্রেফতার খুঁচিয়ে দিতে পারে এ সব অস্বস্তিকর প্রশ্নও।
বাম আমলে তৃণমূল করতে গিয়ে খুন হন কাজল শেখের বাবা-দাদা। 2011 সালে তৃণমূলের নানুর দখলে কাজল শেখের অবদানের কথা মানেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই, রাজনৈতিক মহলের মতে শুধুমাত্র কেষ্টর আবদারে কাজ হবে না। চাই আরও ওপরমহলের নির্দেশ। কাজলকে গ্রেফতারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব নিলে তবেই পদক্ষেপ করবে পুলিস। তার আগে শুধুমাত্র অনুব্রতর কথায় নয়।