বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিয়োগে দুর্নীতি ফাঁস ২৪ ঘণ্টার তদন্তে

বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিয়োগে দুর্নীতি ধরা পড়ল চব্বিশ ঘণ্টার তদন্তে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রারকে নিয়োগ করা হয়েছে কী কী যোগ্যতার ভিত্তিতে?

Updated By: May 28, 2014, 12:37 PM IST

------------------------------------------------
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নিয়োগে দুর্নীতি ধরা পড়ল চব্বিশ ঘণ্টার তদন্তে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রারকে নিয়োগ করা হয়েছে কী কী যোগ্যতার ভিত্তিতে? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আমাদের হাতে উঠে এঅসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জয়ন্ত কিশোর নন্দীর নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উচ্চ শিক্ষা দফতরের অন্দরেও। কিন্তু কেন? চব্বিশ ঘণ্টার এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট।

অভিজ্ঞতা , পরীক্ষায় চোখধাঁধানো নম্বরেই কি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম শীর্ষপদে আসীন হওয়ার প্রধান শর্ত? বাস্তব কিন্তু বলছে অন্য কথা। নির্ধারিত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করেও দুহাজার বারোতে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিন অফ স্টুডেন্টস ওয়েল ফেয়ার পদে নিযুক্ত হন জয়ন্ত কিশোর নন্দী। নিয়ম অনুসারে ডিন অফ স্টুডেন্ট পদের জন্য স্নাতকোত্তরে কমপক্ষে পঞ্চান্ন শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি আবেদনকারীর সব পরীক্ষাতেই ধারাবাহিক ভাবে ভাল ফল করা বাঞ্ছনীয়।
শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি এই পদের জন্য প্রয়োজন অভিজ্ঞতারও। উচ্চ শিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুসারে, আবেদনকারীকে পনের বছর সিনিয়র লেকচারার, রিডার, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে কাজ করতে হবে। অথবা আট বছর অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসেবে কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকা এই পদে আবেদন করার জন্য বাঞ্ছনীয়। আবেদন পত্রের সঙ্গে জয়ন্ত কিশোর নন্দী যে তথ্য দিয়েছিলেন তা কি আদৌ পূরণ করে এই শর্তগুলি?

দেখে নেওয়া যাক নিজের কী কী যোগ্যতা উল্লেখ করেছিলেন জয়ন্ত কিশোর নন্দী।তথ্য অনুসারে ঊনিশ অষ্টআশিতে উচ্চমাধ্যমিকে তিনি পয়তাল্লিশ দশমিক পাঁচ শতাংশ নম্বর পান। বিকম অনার্সে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তার প্রাপ্ত নম্বর চুয়াল্লিশ শতাংশ।এর পর চুরান্নবইয়ে অমরাবতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম কম করেন তিনি। প্রাপ্ত নম্বর আট চল্লিশ শতাংশ। বিজ্ঞপ্তিতে যেখানে বলা হচ্ছে স্নাতকোত্তরে কমপক্ষে পঞ্চান্ন শতাংশ নম্বর পাওয়া বাধ্যতামূলক সেখানে কিভাবে চাকরিটি পেলেন জয়ন্ত কিশোর নন্দী? প্রশ্ন উঠছে কিভাবেই বা এক বছরের মাথায় তাঁকে রেজিস্ট্রারের গুরু দায়িত্ব দেওয়া হল?

নিজের কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে যে তথ্য দিয়েছেন জয়ন্ত কিশোর নন্দী তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। আইবিএস নাগপুরে দুহাজার চার সালের অগস্ট থেকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন বলে আবেদনে জানিয়েছিলেন জয়ন্ত কিশোর নন্দী। সেই আইবিএস নাগপুরের ওয়েবসাইট কিন্তু বলছে অন্য কথা। ওয়েব সাইট অনুসারে দুহাজার আটে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হয়। সেখানে জয়ন্ত কিশোর নন্দী অ্যাসাসিয়েট ডিনের দায়িত্বে ছিলেন প্রশ্ন উঠছে তা হলে কিভাবে চার বছর আগে থেকে অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন জয়ন্ত কিশোর নন্দী?

নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে কেন নিয়োগ করা হল জয়ন্ত কিশোর নন্দীকে? উত্তরটা দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা রমা প্রসাদ গিরি। গোটা বিষয়টাই যে শিক্ষায় দলতন্ত্রের ফসল স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ আন্দোলনে নামছে তাও চব্বিশ ঘণ্টাকে স্পষ্ট জানিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা।

শুধু নিয়োগ বেনিয়মই নয় ফেব্রুয়ারি মাসের একটি অডিটে বিশ্ববিদ্যায়লের আর্থিক দুর্নীতিও প্রকাশ্যে এসেছে। প্রায় আট লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা ওভার পেমেন্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।

.