পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে যাওয়ার অঙ্গীকার

প্রত্যেকদিনই আমরা শুনছি পৃথিবী বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে পৃথিবীর আবহাওয়া। শুনছি বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব। দেখছিও উষ্ণায়নের প্রভাবে কীভাবে উত্তাল হচ্ছে প্রকৃতি। মানুষের কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ প্রকৃতির উত্তাল অভিশাপ কেড়ে নিচ্ছে কত প্রাণ। ধ্বংস হচ্ছে চারপাশ। গলছে হিমবাহ। বরফ কমছে এভারেস্টেও। শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। বাড়ছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা। আমরা দেখছি, শুনছি, একে অপরকে দোষারোপ করছি। কিন্তু বুঝছি কি?

Updated By: Jun 5, 2013, 03:01 PM IST

প্রত্যেকদিনই আমরা শুনছি পৃথিবী বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে পৃথিবীর আবহাওয়া। শুনছি বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রভাব। দেখছিও উষ্ণায়নের প্রভাবে কীভাবে উত্তাল হচ্ছে প্রকৃতি। মানুষের কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ প্রকৃতির উত্তাল অভিশাপ কেড়ে নিচ্ছে কত প্রাণ। ধ্বংস হচ্ছে চারপাশ। গলছে হিমবাহ। বরফ কমছে এভারেস্টেও। শুকিয়ে যাচ্ছে নদী। বাড়ছে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা। আমরা দেখছি, শুনছি, একে অপরকে দোষারোপ করছি। কিন্তু বুঝছি কি?
নিজেদের স্বার্থে ধ্বংসের খেলায় মেতে আছি। ভণ্ড ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে অস্বীকার করছি নিজেদের কর্তব্যটাও। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছি আমরাই, জীবকুলের শ্রেষ্ঠ মানুষ।
সেই ১৯৭২-এ রাষ্ট্রসঙ্ঘ জুন মাসের পাঁচ তারিখ বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে। তারপরে কেটে গেছে ৪১টি বছর। প্রতি বছরই পরিবেশ সম্পর্কে সামগ্রিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারা বিশ্বজুড়েই মহাসমারহে পালিত হয় এই দিনটি। কিন্তু আসলে সচেতনতা কি সত্যিই বৃদ্ধি পাচ্ছে?
এই বছর বিশ্বপরিবেশ দিবসের আয়োজক দেশ মোঙ্গলিয়া। বিষয়, ভাব, খাও, বাঁচাও। পরিবেশ বাঁচাতে খাদ্য সংরক্ষণ ঠিক কতটা জরুরী সে বিষয়েই সচেতনতা বৃদ্ধি করতেই এই বিষয়টি বেছেছে ইউএনইপি (ইউনাইটেড নেশন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম)।
প্রতিবছর সারা পৃথিবীর মোট খাবারের এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হয়। (তথ্য সূত্র ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন)। অন্যদিকে পৃথিবীর প্রতি সাতজনে একজন মানুষ অনাহারে দিন কাটায়। প্রতিদিন খাদ্যের অভাবে প্রতি দিন পাঁচ বছরের কম বয়সী ২০,০০০ শিশু মারা যায়।
যথাযথ ভাবে খাদ্য সংরক্ষণ একাধারে যেমন কমাবে অনাহার জনিত মৃত্যুর হার, তেমনই সংরক্ষণ করবে শক্তি,অর্থের। এমকি প্রচুর খাদ্য উৎপাদন পরিবেশের উপর যে বিপরীত প্রভাব ফেলে কমিয়ে ফেলবে তাও।
ইউএনইপি খাদ্য উৎপাদনের জন্য পৃথিবীর মোট বসবাসযোগ্য জমির ২৫% জন্য ব্যয় হয়। ৮০% অরণ্য ধ্বংসের কারণ খাদ্য উৎপাদন। গ্রীন হাউস গ্যাসের ৩০% উৎস খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া। ৭০% পানীয় জল খাদ্য তৈরি করতেই চলে যায়।
আপাত দৃষ্টিতে আমাদের নিরীহ ক্ষুদ্র পদক্ষেপ যে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কী ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি করে যাচ্ছে, তার অশনি সঙ্কেত প্রতি মুহূর্তে আমাদের চোখের সামনে দিন দিন প্রবল হচ্ছে। তাও আমরা বুঝেও বড় অবুঝ হচ্ছি। আসুন না, নিজেদের কায়েমি স্বার্থের বেড়া ভেঙে আসলে নিজেদেরই স্বার্থরক্ষা করতে এগিয়ে আসি এক পা। আমাদের ছোট ছোট চেষ্টাই সুন্দর, সুরক্ষিত করেতুলতে পারে আমাদের চারপাশ। প্রকৃতির সঙ্গে অসম যুদ্ধে না গিয়ে তাকে ভালবাসলে আখেরে লাভটা কিন্তু আমদেরই। পৃথিবী যদি সুরক্ষিত হয় সুরক্ষিত হবে মানবসভ্যতাই। আমরাতো আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে দিয়েই বেঁচে থাকি। নিজেদের বেঁচে থাকাকে অকাল প্রয়াণের হাত থেকে রক্ষা করতে আসুন না, আজ ৪২ তম বিশ্ব পরিবেশ দিবসে অঙ্গীকারবদ্ধ হই। বেঁচে থাকার জন্যই বাঁচিয়ে রাখি নীল আকাশ, সবুজ অরণ্য, অতল সমুদ্র।

.