#উৎসব: এডিনবার্গেও ঢাকের বাদ্যি! পুজোর আমেজ জুড়ে দিয়েছে ভূগোল-বিভক্ত বাঙালিকে
এডিনবার্গ দুর্গোৎসবে বরাবর সাবেকিয়ানা ও আধুনিকতা হাত ধরাধরি করেই থাকে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্রিটেনের মাটিতে বসন্তের বিদায়বেলা এখন। কিন্তু বাসন্তী নয়, সে-মাটিতে এখন আশ্বিনের চিরায়ত অকালবোধনের পুজোরই শুভ আয়োজন। সেখানেও নিবিড় শারদোৎসব।
আশ্বিনের শারদপ্রাতে যখন বেজে ওঠে আলোর বেণু তখন সুয়েজ মেডিটেরানিয়ান পেরিয়ে পুজোয় মাতেন প্রবাসী বাঙালিও। পুজোর আমেজ জুড়ে দিয়েছে ভূগোল-বিভক্ত বাঙালিকে। গঙ্গার তীরবর্তী বাঙালি আর টেমস তীরবর্তী বাঙলি বা আটলান্টিকের ওপারের বাঙালির মধ্যে তাই কোনও ফারাক জন্মায়নি। পুজোর মন্ত্রে, মন্দ্রে, সুরে, ছন্দে, গন্ধে, বর্ণে মর্মে মর্মে এক অনাবিল আচ্ছন্নতা অনুভব করেন সমস্ত বাঙালি।
স্কটল্যান্ডের বাঙালিও এর থেকে আলাদা নন। আশ্বিনের ভাসা মেঘ সুদূর বাংলা থেকে কখন যে আগমনীর রঙে ছুঁয়ে দেয় পরবাসের আকাশকেও-- কেউ টের পায় না। বৃহত্তর ব্রিটেনের আকাশবাতাসে শিউলি-কাশফুল না থাক, এখানকার বসন্ত-অপরাহ্নের প্রকৃতি এটুকু বলে দেয় যে, 'মা আসছেন'। তবে এখন তো আর মা 'আসছেন' নয়, এখন মা এসে পৌঁছেছেন। আর এই আবহেই স্কটল্যান্ডের 'সাবাশ' ('স্কটিশ অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গলি আর্টস অ্যান্ড হেরিটেজ') কমিটির আয়োজনে প্রস্তুত হয়ে উঠেছে 'বেলফিল্ড কমিউনিটি সেন্টার'। সেখানে পুজো এখন আলোয় আবেগে স্পন্দে উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন: #উৎসব: পুরোহিত নন, মা এখানে পুজো নেন শবরদের হাতে!
ইউকে'র ষাটের বেশি পুজোর মধ্যে বয়সে নবীন হলেও এডিনবরার এই দুর্গোৎসবের কথা এখন বাংলাতেও শোনা যায়। ২০১৬ সালে স্কটল্যান্ডের কয়েকজন প্রবাসী বাঙালির হাত ধরে এ পুজোর সূচনা হয়েছিল। এ বছর এডিনবরার এ পুজোয় ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, দশমী-- পুজোর প্রতিদিনই শোনা যাবে আগমনীর সুর, বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠে মাতোয়ারা হবে মণ্ডপের অলিন্দ।
আট বছরে পদার্পণ করা এডিনবার্গ দুর্গোৎসবে বরাবর সাবেকিয়ানা ও আধুনিকতা হাত ধরাধরি করেই থাকে। বাংলা ও বাঙালির যুগলবন্দির ব্যাপারটাই প্রতিবার মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় এ পুজোয়। সেখানে মায়ের বোধন, অঞ্জলি, সন্ধিপুজো, কুমারী পুজো-- সবই সমাধা হয় নিবিড় আন্তরিকতা ও নিষ্ঠায়। থাকে শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, ঢাক-কাঁসর বাদ্য, ধুনুচিনাচ। আর এই সমস্ত পুজো-পর্বটা জুড়ে, ষষ্ঠী থেকে দশমী থাকে নাটক-গান-আবৃত্তি-আড্ডা-বিতর্ক নিয়ে জমজমাট সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।
সব শেষে নির্ধারিত দিনে ও লগ্নে বিষণ্ণ মনে মাকে কৈলাসের পথে এগিয়ে দেওয়া। সেই বিষাদের মধ্যে দিয়েই আরেকটা বছরের অপেক্ষ।
আরও পড়ুন: #উৎসব: এই অষ্টধাতুর প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সম্রাট আকবর