তালিবান যোদ্ধাদের মৃতদেহে প্রস্রাবের ভিডিওটি নকল নয়, জানাল পেন্টাগন
বিশ্বজুড়ে প্রবল নিন্দা ও সমালোচনার চাপে শেষমেশ নতিস্বীকার করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্বজুড়ে প্রবল নিন্দা ও সমালোচনার চাপে শেষমেশ নতিস্বীকার করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তালিবান সেনার মৃতদেহের উপর প্রস্রাব করছে আফিগানিস্তানে মোতায়েন ৪ মার্কিন ফৌজি। বৃহস্পতিবার ইউটিউব ও অন্যান্য ওয়েবসাইটে এই ভিডিও ফুটেজ প্রকাশিত হওয়ার পরই আলোড়ন পড়ে যায় গোটা বিশ্বে। প্রশ্ন ওঠে আফগানিস্তানে মোতায়েন মার্কিন সেনার সংস্কার ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, ৩ তালিবান সেনার মৃতদেহের উপর ৪ জন প্রস্রাব করতে করতে অশালীন মন্তব্য করছে। ওই চারজনের পরণেই রয়েছে মার্কিন মেরিন কমব্যাট ইউনিফর্ম। প্রকাশিত ভিডিওটির সত্যতা নিয়ে প্রথমে প্রশ্ন তুললেও বিশ্বজুড়ে প্রবল নিন্দার চাপে শুক্রবার পেন্টাগন জানাল, ভিডিওটি মিথ্যে নয়। মার্কিন মেরিনের ওই ৪ সেনাকেও চিহ্নিত করা গিয়েছে। ওই সেনারা মার্কিন সেকেন্ড মেরিনের থার্ড ব্যাটেলিয়ানের সদস্য। ভিডিওটি তোলা হয়েছিল ২০১১-র মার্চ ও সেপ্টেম্বর মাঝামাঝি, যে সময় মার্কিন সেকেন্ড মেরিন আফগানিস্তান সফর শেষ করে বেস ক্যাম্পে ফিরছিল। নির্দিষ্ট কোনও অঞ্চলের নাম না জানাতে পারলেও, আফগানিস্তানের হেলমন্দ প্রদেশের উত্তরের কোনও একটি অঞ্চলে ভিডিওটি তোলা হয়েছে বলেও জানায় পেন্টাগন।
যদিও ওই ৪ মার্কিন সেনার নাম জানানো হয়নি। পেন্টাগন আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত ৪জন সেনা এখনও আফগানিস্তানে মোতায়েন রয়েছে। আফগানিস্তান সরকার সূত্রে খবর, ওয়েবসাইটগুলিতে ভিডিওটি প্রকাশিত হওয়ার পরই রাতে আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে ফোন করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব নিওন পানেত্তা। কারজাইকে তিনি জানান, ওই ঘটনার তদন্ত চলছে। দোষীদের কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। কারজাইকে পানেত্তা বলেন, `এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে ঘটনাটি কোনও ভাবেই মার্কিন সেনার সংস্কার ও গ্রহণযোগ্যতার প্রতিফলন নয়।` আফগানিস্তান থেকে ধীরে ধীরে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। বেশ কয়েক মাস ধরেই একথা বলছে ওয়াশিংটন। আফগান ও কাতার সরকারের সঙ্গে আলোচনায় বসতে আগামী সপ্তাহে আফগানিস্তান ও কাতার যাচ্ছেন মার্কিন বিদেশ মন্ত্রকের বিশেষ কূটনৈতিক প্রতিনিধিদল। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে যুদ্ধের পর শান্তি আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছে তালিবানের রাজনৈতিক শাখা।
প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজটির প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তালিবানরা জানায়, এই ভিডিও ফুটেজটি আফগানিস্তানে হিংস্র মার্কিন সেনার অত্যাচারের আরও একটি প্রমাণ। তবে তা শান্তি আলোচনায় কোনও প্রভাব ফেলবে না। যদিও পরে একটি বিবৃতিতে মার্কিন সেনার কড়া সমালোচনা করে তালিবানরা। তাই তালিবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ভিডিও ফুটেজটির কোনও প্রভাব পড়বে কি না তা এখনই বলা যাচ্ছে না। মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে আমেরিকার মুসলিম মানবাধিকার সংগঠনগুলিও। মার্কিন সেনার কড়া ভাষার নিন্দা করে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লিওন পানেত্তাকে চিঠি দিয়েছে দ্য কাউন্সিল অফ আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস। চিঠিতে মার্কিন সেনা আইন ও মার্কিন আইন মোতাবেক দোষীদের কড়া শাস্তিরও দাবি করেছে তারা।