FBI Raided Trump’s Home: আমেরিকায় কি গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা? এফবিআইয়ের তল্লাশিতে কতটা ফেঁসেছেন ট্রাম্প?
ডোনান্ড ট্রাম্পের বাড়ি থেকে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে দারুণ গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু অন্যের হাতে পড়লে দেশের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে, এমন সর্বোচ্চ পর্যায়ের গোপন সব নথি উদ্ধার হল। স্বভাবতই ডোনান্ড ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকেরা ব্যাকফুটে। আর তারই সূত্রে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফের কি গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র?
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: গত কয়েকদিন ধরে যা চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাতে সে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক হয়ে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ২৪৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের বাসভবনে তল্লাশি করে চোরাই মাল উদ্ধার করল কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। যেমন তেমন চোরাই মাল নয়, ডোনান্ড ট্রাম্পের বাড়ি থেকে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ক্ষতিকর, এমন সব সর্বোচ্চ গোপনীয় ১১ বাক্স নথি উদ্ধার হল। এরপর স্বভাবতই ডোনান্ড ট্রাম্প ও তাঁর সমর্থকেরা একটু ব্যাকফুটে। আর তারই সূত্র আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফের কি গৃহযুদ্ধের মুখোমুখি হতে চলেছে বিশ্বের প্রাচীন এই গণতন্ত্র? প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার-আ-লাগোর এস্টেটে তল্লাশি চালানোর পর, এমনই আশঙ্কা মার্কিন ফেডেরাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিওরিটির এক ফাঁস হওয়া বুলেটিন অনুযায়ী, ওই তল্লাশি অভিযানের পর থেকেই নজিরবিহীন হুমকির মুখে পড়েছেন এফবিআই কর্তারা। সোশ্য়াল মিডিয়ায় চরমপন্থীরা সশস্ত্র গৃহযুদ্ধের আহ্বানও জানাচ্ছেন।
গত সপ্তাহেই রিকি শিফার নামে এক ৪২ বছর বয়সী উগ্র ট্রাম্প সমর্থক, সিনসিনাটি শহরের এফবিআই দফতরে ঢুকে একটি নেইল গান নিয়ে হামলা চালিয়েছিলেন। তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রিকি শিফার ট্রাম্পের ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায় ৩৬৪টি পোস্টে খোলাখুলি সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি এফবিআই এজেন্টদের মৃত্যুকামনাও করেছিলেন। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিওরিটির ওই ফাঁস হওয়া বুলেটিনটি প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ফ্লোরিডার ওই বাড়িতে হানা দেওয়ার পর থেকেই এফবিআই, ডিএইচএস, ফেডারেল পুলিশ এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এফবিআই এজেন্টদের ব্যক্তিগতভাবে নিশানা করা হচ্ছে।
এই হুমকির বেশিরভাগটাই আসছে অনলাইনে। তবে হুমকিগুলিকে খুবই উদ্বেগজনক মনে করা হচ্ছে। এজেন্ট ও সরকারি কর্মকর্তাদের বেছে বেছে নিশানা করা হচ্ছে। অনলাইনে চিহ্নিত করা হচ্ছে ফেডেরাল এজেন্টদের। তাঁদের বিরুদ্ধে কী ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করা হবে, সেই বিষয়েও আলোচনা চলছে। এমনকি, তাঁদের বাড়ির ঠিকানা, পরিবারবর্গের পরিচয়ের মতো স্পর্শকাতর তথ্যও সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সব মহলই বেশি উদ্বিগ্ন ২০২২ সালের মিডটার্ম নির্বাচন নিয়ে। কেননা, সকলের আশঙ্কা এই ধিকি ধিকি আগুন ওই নির্বাচনকে ঘিরে দাউ দাউ করে জ্বলে উঠতে পারে।
অনেকেই বলছেন, খানাতল্লাশির এ ঘটনাকে ব্যবহার করে ট্রাম্প রাজনৈতিকভাবে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করবেন। তিনি ইতিমধ্যে নিজেকে একজন 'রাজনৈতিক শহিদ' হিসেবে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু তাতে কতদূর চিঁড়ে ভিজবে তা নিয়ে ট্রাম্প-পক্ষই সম্ভবত খুব আত্মবিশ্বাসী নয়। কেননা ট্রাম্পের বাড়িতে যেসব নথি পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রভাণ্ডার সংক্রান্ত নথিও ছিল। বিদেশি শত্রুর হাতে যা পড়লে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পক্ষে তা যথেষ্ট বিপজ্জনক হতে পারত। বলা হচ্ছে, নির্বাচনে পরাজিত হয়ে হোয়াইট হাউস ছেড়ে আসার সময়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এসব নথি সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী এসব নথির একমাত্র মালিক মার্কিন সরকার, যার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জাতীয় মহাফেজখানার। তা হলে ট্রাম্প কেন এসব নথি সঙ্গে এনেছেন? তিনি ছাড়া আর কে কে এই নথি দেখার সুযোগ পেয়েছে? বিদেশিদের হাতে তা পড়েছে কি? সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।