জামাত নেতার ফাঁসির নির্দেশ
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সচিব জেনারেল আলি আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে ফাঁসির নির্দেশ দিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সচিব জেনারেল আলি আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদকে ফাঁসির নির্দেশ দিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।
মুজাহিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাতটির মধ্যে পাঁচটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে বলা হয়েছে, প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে ১, ৬ ও ৭ নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। তিন নম্বর অভিযোগে মুজাহিদকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি রাষ্ট্রপক্ষ। এই দুটি অভিযোগ থেকে মুজাহিদকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের ২০৯ পৃষ্ঠার রায়ে ছিল ১১৮টি অনুচ্ছেদ। সংক্ষিপ্ত রায় ৩৭ পৃষ্ঠার।
বিচারক শাহিনুর ইসলাম বলেন, ১৯৭১- মুজাহিদ ইসলামী ছাত্রসংঘে (জামায়াতের তত্কালীন ছাত্রসংগঠন) রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আল বদর বাহিনীর ওপর তাঁর নিয়ন্ত্রণ ছিল।
এক নজরে মুজাহিদের বিরুদ্ধে সাত অভিযোগ--
প্রথম অভিযোগ- একাত্তরে ইত্তেফাক-এর তত্কালীন কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে অপহরণ ও হত্যা।
দ্বিতীয় অভিযোগ, ফরিদপুরের হিন্দু-অধ্যুষিত তিনটি গ্রাম বৈদ্যডাঙ্গি, মাঝিডাঙ্গি ও বালাডাঙ্গিতে হামলা ও অর্ধশতাধিক হিন্দুকে হত্যার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ।
তৃতীয় ও চতুর্থ অভিযোগ হলো, ফরিদপুরের রথখোলা গ্রামের রণজিত্ নাথ ও গোয়ালচামট খোদাবক্সপুর গ্রামের আবু ইউসুফকে নির্যাতন।
পঞ্চম অভিযোগ , একাত্তরের ৩০ আগস্ট মতিউর রহমান নিজামীকে নিয়ে মুজাহিদ ঢাকার নাখালপাড়ার পুরোনো এমপি হোস্টেলে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে যান। সেখানে আটক সুরকার আলতাফ মাহমুদ, বদি, রুমি, জুয়েল, আজাদকে দেখে একজন পাকিস্তানি ক্যাপ্টেনকে বলেন, রাষ্ট্রপতির সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার আগে এঁদের মেরে ফেলতে হবে। ওই সিদ্ধান্ত অনুসারে মুজাহিদ সঙ্গীদের সহযোগিতায় তাঁদের অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করেন।
ষষ্ঠ অভিযোগ মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (বর্তমানে শারীরিক শিক্ষা কলেজ) পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে মুজাহিদ দলীয় নেতাদের নিয়ে বাঙালি নিধনের পরিকল্পনা ও ষড়যন্ত্র করতেন।
সপ্তম অভিযোগে , একাত্তরের ১৩ মে পাকিস্তানি সেনা ও স্থানীয় রাজাকারদের নিয়ে মুজাহিদ ফরিদপুরের হিন্দু-অধ্যুষিত বাকচর গ্রামে হামলা চালান। সেখানে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।