ফার্গুসনে পুলিসের উপর গুলি চালানোর ঘটনা ক্ষমাহীন, ছাড় পাবে না আততায়ী: ওবামা
মিসোরির ফার্গুসনে দুই পুলিস কর্মীর উপর গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ঘটনাটিকে 'ক্রিমিনাল অ্যাক্ট' আখ্যা দিয়ে ওবামা জানিয়েছেন কোনও অবস্থায় ক্ষমা করা হবে না আততায়ীকে। প্রসঙ্গত, আততায়ী একজন না একাধিক সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় ওবামা সরকার। আততায়ীর খোঁজে এখন চিরুনি তল্লাসি চলছে ফার্গুসনে।
ওয়াশিংটন: মিসোরির ফার্গুসনে দুই পুলিস কর্মীর উপর গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ঘটনাটিকে 'ক্রিমিনাল অ্যাক্ট' আখ্যা দিয়ে ওবামা জানিয়েছেন কোনও অবস্থায় ক্ষমা করা হবে না আততায়ীকে। প্রসঙ্গত, আততায়ী একজন না একাধিক সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নয় ওবামা সরকার। আততায়ীর খোঁজে এখন চিরুনি তল্লাসি চলছে ফার্গুসনে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে একটি লাইভ টেলি সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সেন্ট লুইসের এই শহরতলী অঞ্চলে পুলিসের বিরুদ্ধে ওঠা বর্ণ বৈষম্যের কথা স্বীকার করে নিলেও তিনি বলেছেন '' বর্তমানে ফার্গুসনে প্রশাসনের আচরণ আপত্তিকর। অত্যাচার চলছে সেখানে। মানুষের প্রতিবাদের বিবিধ কারণও রয়েছে। কিন্তু এই ধরণের অপরাধ মূলক আচরণ ক্ষমাহীন।''
বৃহস্পতিবার সকালে ফার্গুসনে গুলিবিদ্ধ হন দুই পুলিস অফিসার। মিসোরির ফার্গুসনে পুলিস হেডকোয়ার্টারের সামনে প্রতিবাদীদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় গুলিবিদ্ধ হন তাঁরা।
গত কয়েক বছর ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে ফার্গুসনের শহরতলী সেন্ট লুইস। বার বার সেখানকার কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের উপর শ্বেতাঙ্গ পুলিস অফিসারদের অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। গত অগাস্টে শ্বেতাঙ্গ এক পুলিস অফিসার নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরকে খুন করার পর প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে ফার্গুসন।
সেন্ট লুইস কাউন্টি পুলিস প্রধান জন বেলমার জানিয়েছেন শুধুমাত্র পুলিস অফিসার হওয়ার 'অপরাধে' গুলি বিদ্ধ হতে হয়েছে ওই দু'জনকে। বিক্ষোভরত জনতা হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে ওঠার পরেই গুলি চলে এই দু'জনের উপর।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় দু'জনেই এখন হাসপাতালে ভর্তি। যদিও দু'জনেরই জ্ঞান আছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।
নিরস্ত্র ১৮ বছরের মাইকেল ব্রাউনকে খুন করেও মিসোরির আদালতের রায়ে বেকসুর খালাস পেয়েছে শ্বেতাঙ্গ পুলিস অফিসার ডারেন উইলিয়ামস। এর পরেও আর বেশ কয়েকবার একই কায়দায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে বারবার উঠেছে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ। সে দেশের অ্যাফ্রো-আমেরিকানদের কী বিপুল বৈষম্যের শিকার হতে হয় প্রতি নিয়ত এই একটা ঘটনার হার ধরে বেড়িয়ে এসেছিল সেই ভয়ঙ্কর সত্যিটা।
বহুদিন ধরেই ফার্গুসনের পুলিস চিফ থমাস জ্যাকসনের পদত্যাগ দাবি করছিলেন সেখানকার সাধারণ মানুষ। প্রসঙ্গত জ্যাকসনের পদত্যাগের ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই জড়ো হতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা।
প্রাথমিকভাবে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভই চলছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই রাওট গিয়ার পরে দু'ডজন পুলিস তাদের ঘিরে ধরলে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে শুরু করে। কোনও প্ররোচনা ছাড়াই অন্তত দু'জনকে আটক করা হয়।
মধ্যরাতে হঠাৎ করেই গুলির শব্দে অরাজকতা তৈরি হয়। ভয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পালাতে শুরু করেন বিক্ষোভকারীরা। ইন্টারনেটে প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও অনুযায়ী রাওট শিল্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ঘিরে ছিল সশস্ত্র পুলিস।
বেলমারের দাবি বিক্ষোভকারীদের মধ্যেই লুকিয়ে ছিল আততায়ী।
তিনি বলেছেন ''সত্যি বলতে কে গুলি চালিয়েছিল এই মুহূর্তে সে সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। কিন্তু কোনওভাবে তারা নিজেদের ভিড়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখতে সমর্থ হয়েছিল।''
তবে অ্যাক্টিভিস্ট ডের ম্যাককেসন টুইটারে দাবি করেছেন আততায়ীর সঙ্গে প্রতিবাদীদের কোনও সম্পর্ক নেই।
ম্যাককেসন জানিয়েছেন সেই সময় তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ৫০০মিটার দূর থেকে ওই পুলিস অফিসারের উপর গুলি চলেছে বলে তাঁর দাবি।
কিছুদিন আগেই এক তদন্ত রিপোর্টে উঠে আসে ফার্গুসন কর্তৃপক্ষ পুলিসকে কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাজে লাগাচ্ছে । যার ফলে সেখানে 'বিষাক্ত পরিবেশ' তৈরি হয়েছে।
ওবামা জানিয়েছেন যারা গুলি চালিয়েছে তারা অপরাধী। তাদের গ্রেফতার করা আবশ্যক।