আজ তেহরানে মুখোমুখি বসলেন মনমোহন-জারদারি

আজ ইরানে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে পাক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। পাকিস্তানের মাটিতে ভারত বিরোধী জঙ্গি কার্যকলাপ সহ সন্ত্রাস, সবকিছুই আলোচনায় ওঠার সম্ভবনা রয়েছে।

Updated By: Aug 30, 2012, 10:14 AM IST

ন্যাম সম্মেলনের ফাঁকে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির সঙ্গে বৈঠকে বসলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। মুম্বই সন্ত্রাস ইস্যুতে দোষীদের শাস্তিদানের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয় নয়াদিল্লি। গতকালই কসাভের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের পরে আজকের বৈঠক বিশেষভাবে তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকের আগে আজ ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চে সন্ত্রাস ইস্যুতে সুর চড়িয়েছেন মনমোহন সিং। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গোটা বিশ্বকে এক নীতি নেওয়ার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে বৈঠকে নয়াদিল্লি শেষমেষ কী বার্তা দেয়, সেদিকে তাকিয়ে পর্যবেক্ষক মহল।
বুধবার ২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাসের ঘটনায় অভিযুক্ত একমাত্র জীবিত সদস্য আজমল আমির কসাভের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে বম্বে হাইকোর্টের রায়ই বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্ট। মনমোহন-জারদারির বৈঠকে নিশ্চিতভাবেই মুম্বই সন্ত্রাসের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। মুম্বই সন্ত্রাসের বিচার নিয়ে নিয়ে পাকিস্তান ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে নিজের অসন্তোষের কথাও জারদারিকে জানাতে পারেন মনমোহন সিং। জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ইরানে রয়েছেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এম এম কৃষ্ণাও। সুপ্রিমকোর্টের রায় ঘোষণার পর পাকিস্তান সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। কসাভকে নিয়ে এস এম কৃষ্ণার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী হিনা রাব্বানি খারও। ২৬/১১ মু্ম্বই সন্ত্রাসের ঘটনা থেকে অন্য যেকোনও দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে দুই দেশের সহযোগিতা প্রয়োজন বলেই মন্তব্য করেছেন তিনি।
২৬/১১ মুম্বই সন্ত্রাস ছাড়াও অসমে হিংসার ঘটনা নিয়েও পাক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কথা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিং বুধবার অসমের হিংসা নিয়ে পাকিস্তানকে তথ্য বিনিময় করা হবে বলে জানিয়েছেন। এবিষয়ে পাক বিদেশমন্ত্রীকে জিঞ্জাসা করা হলে নিজের অসন্তোষের কথা জানান তিনি। বুধবার ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমেদিনাজাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
২০০১-এ ইরান সফরে গিয়েছিলেন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী। তারপর এই প্রথম ইরান সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী। পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে এই মুহূর্তে মার্কিন প্রশাসনের রোষানলের মুখে ইরান। তাই আহমেদিনাজাদ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল করার জন্য ভারতের ওপর ক্রমশই চাপ বাড়াচ্ছে ওয়াশিংটন। এই পরিস্থিতিতে ১২০টি দেশের নির্জোট সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের উপস্থিতি যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। তেহেরানে অনুষ্ঠিত জোট নিরপেক্ষ সম্মেলন নিয়ে ভারতীয় কূটনীতিকরা খুব একটা আশাবাদী না হলেও, দিল্লির কাছে এই সফর খুবই গুরুত্বের। কারণ পরমাণু জ্বালানী সরবরাহকারী দেশ হিসেবে ভারতের কাছে ইরানের গুরুত্ব দীর্ঘ মেয়াদী। মধ্য এশিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনেও অবস্থানগত দিক দিয়ে দিল্লির কাছে তেহেরানের গুরুত্ব অপরিসীম।

.