ইরানের তেল কেনায় ভারতকে সাময়িক ছাড়পত্র দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
ভারত মোট জ্বালানি তেলের ৮০ শতাংশ আমদানি করে বিদেশ থেকে। সৌদি আরব, ইরাকের পর ভারতের তেল আমদানি তালিকায় রয়েছে ইরান। চাহিদার মোট ১০ শতাংশ তেল আমদানি করা হয় এই দেশ থেকে
নিজস্ব প্রতিবেদন: আপাতত স্বস্তি ভারতের। তার সঙ্গে চিন ও জাপান সহ ৭টি দেশের। সোমবার মার্কিন বিদেশসচিব স্পষ্ট করলেন এ কথা। ইরানের উপর চাপ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে, এমন কথা স্মরণ করিয়ে মাইক পম্পেও বলেন, ভারত, জাপান, চিন, ইতালি, গ্রিস, দক্ষিণ কোরিয়া, তুরস্ক এবং তাইওয়ান আপাতত ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখতে পারবে। তবে, রৌহানি সরকারের সঙ্গে লেনদেন যে কমিয়ে আনতে হবে, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।
সোমবার দ্বিতীয় দফায় আরও কড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপল ইরানের উপর। জানা গিয়েছে, ইরানের ব্যাঙ্ক ও এনার্জি সেক্টরে কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে। এছাড়া ইউরোপ ও এশিয়ার যে সব দেশ এবং সংস্থা ইরানের কাছ থেকে তেল আমদানি করবে এই নিষেধাজ্ঞা তাদের উপর ধার্য হবে। উল্লেখ্য, ৪ নভেম্বর প্রথম দফায় আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ইরানের উপর চাপানো হয়।
আরও পড়ুন- মার্কিন নিষেধাজ্ঞা গর্বের সঙ্গে অবজ্ঞা করছি: ইরানের প্রেসিডেন্ট রৌহানি
ভারত মোট জ্বালানি তেলের ৮০ শতাংশ আমদানি করে বিদেশ থেকে। সৌদি আরব, ইরাকের পর ভারতের তেল আমদানি তালিকায় রয়েছে ইরান। চাহিদার মোট ১০ শতাংশ তেল আমদানি করা হয় এই দেশ থেকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতকে ছাড় দেওয়ায় আপতত তেলের চাহিদার ঘাটতি হবে না। তবে, মার্কিন আর্থিক নিষেধাজ্ঞ এড়াতে গেলে ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছেদ করতেই হবে। ইরানে চাবাহার বন্দর তৈরি করে আফগানিস্তান এবং ভারতে বাণিজ্যিক সম্পর্ক নতুন করে ত্বরান্বিত হয়। আফগানিস্তানের সঙ্গে নতুন করিডর তৈরি হওয়ায় পরোক্ষভাবে লাভবান হবে আমেরিকাও। সে দিকটাও নজরে রাখছে হোয়াইট হাউজ।
উল্লেখ্য, আজ এক টেলিভিশন সাক্ষাত্কারে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি বলেন, “আমেরিকার ইতিহাসে এমন নজির আছে কি-না জানা নেই, হোয়াইট হাউজে যিনি এলেন তিনিই আইন এবং আন্তর্জাতিক বিধি নিষিধের বিরোধী।” মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেও যদিও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “আমরা কী করছি শুধু দেখতে দেখুন। নজিরবিহীনভাবে বাজার থেকে জ্বালানি তেল উত্পাদন কমিয়েছি। দেখি কীভাবে মোকাবিলা করে তারা।” গত মে মাসে বারাক ওবামার সময়ের পরমাণু চুক্তি ইরানের সঙ্গে ভঙ্গ করে একাধিক ক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপান ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন- কর্মীদের হেনস্থা ঠেকাতে সংস্থা তেমন সক্রিয় নয়, বিক্ষোভ গুগল কর্মীদের
২০১৩ সালে ক্ষমতায় আসেন হাসান রৌহানি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিভিন্ন পদক্ষেপে সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। যার ফলস্বরূপ কোপ পড়ে ইরানের উপর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তে প্রবল সমালোচনা করেছে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চিন এবং রাশিয়া। ইউরোপের অনেক দেশের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।