Hunger : খাচ্ছেন কিন্তু ভাবছেন কি? ১ মিনিটে না-খেয়ে মরছে ১১ জন!
জানেন কী, আপনি আরাম করে যতক্ষণে একটি রোলও শেষ করতে পারেন না, ততক্ষণে একাধিক মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। বর্তমানে না খেতে পেয়ে অতিমারির থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন। সংঘাতে জর্জরিত দেশ আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া এক্ষেত্রে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষ যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষের শিকার।
সৃজিতা মৈত্র
দেশে এখন উৎসবের আমেজ। কালী পুজোর দিন আবহাওয়া খারাপ হওয়াতে কালী পুজোর মজা সেভাবে নিতে না পারলেও, আজকে দলে দলে মানুষ ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে গিয়েছেন। ঠাকুর দেখা হবে অথচ পেট পুজো হবে না, তা কী হয়? স্বাভাবিক ভাবেই রোল-চাউমিনের দোকানেও বেশ ভালই ভিড়। আসলে সব পুজো একদিকে, আর পেটপুজো একদিকে। কিন্তু জানেন কী, আপনি আরাম করে যতক্ষণে একটি রোলও শেষ করতে পারেন না, ততক্ষণে একাধিক মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। অক্সফামের একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১ মিনিটে পৃথিবীর প্রায় ১১ জন মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে, যা গত বছরের পরিসংখ্যান থেকে প্রায় ছয়গুণ বেশি।
অক্সফাম হল একটি দারিদ্র্য দূরীকরণের কাজ চালিয়ে যাওয়া সংস্থা। বৃহস্পতিবার ‘দ্য হাঙ্গার ভাইরাস মাল্টিপ্লাইস’ নামে একটি রিপোর্টে তারা জানিয়েছেন করোনা অতিমারির সময় প্রতি মিনিটে প্রায় সাতজন মানুষ মারা যেতেন। তবে বর্তমানে না খেতে পেয়ে তার থেকে বেশি সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন। অক্সফামের এই সমীক্ষা থেকে আরও ভয়ংকর তথ্য উঠে আসছে। কোভিড-19 ও নানা যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বহু মানুষ আজ দুর্ভিক্ষের শিকার। প্রায় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ মানুষ সকালে জানেন না তারা রাতে কী খাবেন! আদেও সকালের খাবারটি ঠিক করে পাওয়া যাবে কী না সেটাও তাদের জানা নেই। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মানুষ যুদ্ধের কারণে দুর্ভিক্ষের শিকার। অন্যদিকে করোনার কারণে সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা যে এর অন্যতম কারণ তো বটেই। অতিমারির কারণে বাজারে খাবারের সামগ্রীর মূল্য প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
অক্সফামের ওই রিপোর্টে তারা হাঙ্গার হটস্পট অর্থাৎ, যে দেশগুলিতে দুর্ভিক্ষের সবথেকে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে তারও উল্লেখ রয়েছে। তার মধ্যে সংঘাতে জর্জরিত দেশ আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়ার উল্লেখ আছে। অক্সফাম জানিয়েছেন, তারা প্রায় ৭০০ জন কর্মীর সাহায্যে ৬৮ টি দেশে এই সমীক্ষার কাজ চালিয়েছেন। লক্ষ লক্ষ মানুষের এই মুহূর্তে দরকার শুধু তিনবেলা পেট ভরে খাবার। বিশেষজ্ঞরা মতে, বর্তমানে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলিতে ক্ষুদাকেও একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : দুনিয়ার দুয়ারে আকাল, অভুক্ত থাকতে হবে ৩৫ কোটি মানুষকে!
যদিও এই বিষয়ে ভারতও খুব একটা পিছিয়ে নেই। প্রকাশিত হয়েছে চলতি বছরের গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স, তথা বিশ্ব ক্ষুধা সূচক। রিপোর্ট বলছে, ভারত তার আগের অবস্থানের চেয়ে কয়েক ধাপ নেমে গিয়েছে। ক্ষুধা-পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে ভারতে। সোজা কথায়, খিদের জ্বালা আরও বেড়েছে ভারতে। ২০২২ সালের বিশ্ব ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার সূচকে ১০৭ তম স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত। একমাত্র যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সমস্ত দেশের পিছনে চলে গিয়েছে ভারত।