Kolkata Doctor Rape and Murder Case: আরজি কর ছুঁয়ে দিল লস অ্যাঞ্জেলসকেও! 'তিলোত্তমা'র হাহাকার এবার হলিউডে!

Kolkata Doctor Rape and Murder Case: কী অমানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করে শেষ আমাদের অভয়া, আমাদের তিলোত্তমা! চোখ ঝাপসা হয়ে আসে আমাদের, গলা বুজে আসে আমাদের, বীভৎস রাগে হাত-পা কাঁপতে থাকে আমাদের।

Updated By: Aug 16, 2024, 06:16 PM IST
Kolkata Doctor Rape and Murder Case: আরজি কর ছুঁয়ে দিল লস অ্যাঞ্জেলসকেও! 'তিলোত্তমা'র হাহাকার এবার হলিউডে!

নিবেদিতা হাজরা

লস অ্যাঞ্জেলেস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র: যে তিলোত্তমার মাটিতে 'মা' বন্দিত হন প্রতি শরতে, আচমকা সেই শহরেই 'মা'য়ের দু'পা ভেঙে নব্বই ডিগ্রি বাঁকিয়ে দেওয়া হয়, 'মা'য়ের স্পাইনাল কর্ড দামি বুটের আঘাতে থেঁতলে দেওয়া হয়, 'মা'য়ের গলা টিপে রাখা হয় ঠিক ততক্ষণ, যতক্ষণ না দম আটকে আসে, 'মা'য়ের যৌনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করা হয় পাশবিক ভাবে, 'মা'য়ের স্তন নখের আঁচড়ে রক্তাত হয়ে পড়ে থাকে ভোররাতে।

কিছু 'মান-হুঁশ' হতে না পারা হোমোসেপিয়েন্স তাদের পাশবিক থাবায় আবারও এক নিমেষে শেষ করে দিল ৩১ বছর বয়সি এক 'মা'য়ের প্রাণ। এক নিমেষে সারাজীবনের মতো শূন্য হয়ে গেল অসহায় এক বাবা-মায়ের কোল, শেষ হয়ে গেল রাতের পর রাত জেগে অক্লান্ত পরিশ্রম করে পড়াশোনা করে সফল ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন, শেষ হয়ে গেল আগামী নভেম্বরে প্রিয় বন্ধুটির সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্ন। সব শেষ হয়ে গেল! কী অমানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করে শেষ হল আমাদের অভয়া, আমাদের তিলোত্তমা! চোখ ঝাপসা হয়ে আসে আমাদের, গলা বুজে আসে আমাদের, বীভৎস রাগে হাত-পা কাঁপতে থাকে আমাদের। 

কিন্তু এর পর কী? আর কতদিন চলবে এইসব? 

কাল নির্ভয়া ছিল, আজ তিলোত্তমার চলে যাওয়া, আবার আগামীকাল ফতিমা কিংবা উমা চলে যাবে। ধর্ষণের নিত্য নতুন কলাকৌশল নিয়ে গবেষণায় আমরা এগিয়ে যাব। দিল্লির ফাঁকা রাস্তা হোক, উত্তরপ্রদেশের ধানক্ষেত হোক কিংবা কলকাতার অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন কোনও প্রতিষ্ঠান আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হল-- কিছু অসুস্থ মস্তিষ্কের আর অসুস্থ মনওয়ালা পুরুষ এক তাল নারীশরীরের জন্য অপেক্ষা করে সর্বদা। 

কিন্তু এবার কোথাও একটা দাঁড়ি টানার সময় এসেছে আমাদের। কলকাতা শহরের মেয়েদের 'রাত দখলে'র ডাকে হাজার হাজার নারী পুরুষ পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে হেঁটেছেন সারারাত, সারা ভারতও হেঁটেছে। এবার সেই কষ্ট, দুঃখ আর রাগ আছড়ে এসে পড়েছে বিদেশের মাটিতেও। 

রুটিরুজির তাগিদে দেশ ছেড়েছি আমরা অনেকেই। কিন্তু নিজের ভালোবাসার শহরে তিলোত্তমার মর্মান্তিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউই। আমেরিকার বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন শহরে বাঙালিরা জমায়েত হচ্ছেন, যে যার মতো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, আটলান্টা, অস্টিন, ক্যালিফোর্নিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মানুষজন একত্রিত হচ্ছেন প্রতিবাদ জানাতে। শুধু বাঙালিরা নন, প্রবাসে থাকা ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষও সামিল হচ্ছেন এই প্রতিবাদে। যেমন আগমী ১৮ অগাস্ট লস অ্যাঞ্জেলেস এবং লস অ্যাঞ্জেলেসের আশেপাশের শহরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা প্রবাসী বাঙালিরা জমায়েত হবেন লেক হলিউড পার্কে সকাল ১১ টা থেকে। 

জানি, প্রতিবাদ করে সব সমস্যা সমাধান হবে না, ফিরে আসবে না আমাদের 'তিলোত্তমা', মোমবাতির তলার অন্ধকারে চাপা পড়ে যাবে অনেক কিছুই। কিন্তু তা-ও প্রতিবাদটা দরকার, রাস্তায় নামাটা দরকার-- নিজেদের জন্য, নিজেদের 'মা'য়েদের জন্য, 'মেয়ে'দের জন্য, 'বোন'দের জন্য, হাজার হাজার 'অভয়া'দের জন্য, ভবিষ্যৎ পৃথিবীর জন্য, সঠিক বিচারের জন্য, ঘুণ ধরা স্থবির সিস্টেমকে নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.