সংকটে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি, পাক সেনার জন্য বাংকার তৈরিতে ব্যস্ত চিন
অনেকেই মনে করেন যে সিপিইসি যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল যে ভবিষ্যতে এই প্রোজেক্ট খুবই ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা কোনওদিনই চিনের ঋণের নীতিকে সামলাতে পারবেনা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রোজেক্টের পরিকল্পনা করা হয়েছিল যাতে বালুচিস্তানের গদার পোর্টে সরাসরি নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করতে পারে চিন এবং এই একালার খনিজকে নিজেদের দখলে রাখতে পারে। এর পাশাপাশি এই প্রোজেক্ট পাকিস্তানের উপর ঋণের বোঝা চাপাবে বলেও জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ফের সঙ্কটে দক্ষিণ এশিয়ার (South Asia) স্থিতাবস্থা। তাইওয়ানের (Taiwan) সীমান্তে ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার পরে এবার পাকিস্তানের (Pakistan) দিকে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দিয়েছে চিন (China) সরকার। জানা গিয়েছে বালুচিস্তান (Balochistan) এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (Pak Occuppied Kashmir) একটি খুবই গুরুত্বপুর্ণ একটি সামরিক ব্যবস্থা তৈরিতে পাকিস্তান সেনাকে সাহায্য করছে চিনের সেনা। চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক সমঝোতার (CPEC) অধীনে পাকিস্তান সেনার হয়ে এই কাজ করছে তারা। সিন্ধ (Sindh) অঞ্চলের খুজদারের (Khuzdar) কাছে নবাবশাহ (Nawabshah) থেকে ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে সেহ্বান-হায়দ্রাবাদ হাইওয়ের (Sehwan-Hyderabad Highway) পাশে রানিকোট (Ranikot) এলাকায় কাজ করতে দেখা গিয়েছে চিনা সেনাদেরকে। বালুচিস্তানের এই অঞ্চলে গুহার মতন স্টোরেজ তৈরি করতে দেখা গিয়েছে তাদেরকে। বালুচিস্তানে মোতায়েন পাকিস্তানের খুজদার মিসাইল রেজিমেন্ট এই অঞ্চল ব্যবহার করে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সারদায় দশ থেকে ১২ জন চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সেনাকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। এই অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার তৈরি করতে দেখা গিয়েছে তাদেরকে। পাকিস্তান সেনার ৪০ ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের ক্যাম্পে এই ব্যবস্থা তৈরি করছে তারা। পাশাপাশি দশ থেকে ১৫ জন চিনা সেনাকে কাজ করতে দেখা গিয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অন্য একটি সেনা ক্যাম্পে। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কেল গ্রামের থেকে ১২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ফুল্লাওয়াইতে পাক সেনার ক্যাম্পেও একই কাজ করতে দেখা গিয়েছে তাদেরকে।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী কেন্দ্রীয় সরকারকে এই বিষয় রিপোর্ট দিয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। তাঁরা জানায় যে নিয়ন্ত্রনরেখার কাছাকাছি এলাকায় নতুন করে বাঙ্কার তৈরি এবং পুরনো বাঙ্কারকে মেরামত করার কাজ করছে পাকিস্তান। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে প্রজেক্টগুলির কাজ শেষ করতে দেরি হওয়ায় বৃদ্ধি পেয়েছে এরিয়ার। এর ফলে চিন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোরকে প্রায় অকেজো করে রেখেছে। এই করিডোর চিনের জিনজিয়াং থেকে বালুচিস্তানের গদার পোর্ট পর্যন্ত বিস্তৃত।
সিপিইসি নিয়ে পাকিস্তানে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। সিপিইসি-র ঋণের উচ্চ সুদের হার প্রোজেক্টগুলির খরচ বাড়িয়েছে। দুর্বল প্রোজেক্ট এবং চিনা কোম্পানিগুলি তাদের সরবরাহ বন্ধ করায় বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা গিয়েছে। এই ঘটনা পাকিস্তানে সমস্যার সৃষ্টি করায় বন্ধ হয়ে যায় সিপিইসি অথোরিটি।
আরও পড়ুন: Joe Biden: মার্কিন ড্রোন হামলায় মৃত ৯/১১-র মাস্টারমাইন্ড, 'ন্যায় প্রতিষ্ঠিত হল' ঘোষণা বাইডেনের
এরফলে চিনকে নিজের কর্তৃত্ব বজায় রাখার জন্য নতুন পদ্ধতি নিতে হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের খনিজকে নিজেদের দখলে রাখা এবং নিজেদের জিনিস আরও বেশি পরিমাণে এখানে রপ্তানি করতে থাকার জন্য চিনকে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয়েছে বলে মনে করছে অনেকেই। এই কারনেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জেনারেলদের খুশি করতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর জন্য নতুন পরিকাঠামো তৈরি করতে সাহায্য করছে চিন।
অনেকেই মনে করেন যে সিপিইসি যখন থেকে শুরু হয় তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল যে ভবিষ্যতে এই প্রোজেক্ট খুবই ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা কোনওদিনই চিনের ঋণের নীতিকে সামলাতে পারবেনা বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই প্রোজেক্টের পরিকল্পনা করা হয়েছিল যাতে বালুচিস্তানের গদার পোর্টে সরাসরি নিজেদের কর্তৃত্ব কায়েম করতে পারে চিন এবং এই একালার খনিজকে নিজেদের দখলে রাখতে পারে। এর পাশাপাশি এই প্রোজেক্ট পাকিস্তানের উপর ঋণের বোঝা চাপাবে বলেও জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)