রাশিয়ার কোটে বল ঠেলে মার্কিন আইনসভায় ক্ষমা চাইলেন জুকারবার্গ

মঙ্গলবার, জুকারবার্গকে যৌথ শুনানিতে ডেকে ছিল মার্কিন বিচারবিভাগীয় এবং বাণিজ্য বিষয়ক কমিটি। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ৮ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার পুরো দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন জুকারবার্গ।

Updated By: Apr 12, 2018, 04:18 PM IST
রাশিয়ার কোটে বল ঠেলে মার্কিন আইনসভায় ক্ষমা চাইলেন জুকারবার্গ
ছবি- টুইটার

নিজস্ব প্রতবিদেন: ‘মাথা নত’ করে ক্যাপিটাল হিলে প্রবেশ করলেও, পুরোপুরি মচকাননি ফেসবুক কর্তা মার্ক জুকারবার্গ। মার্কিন সেনেট এবং কংগ্রেসে দু’দিন ধরে ম্যারাথন জেরা চলল মার্ক জুকারবার্গের। এই দু’দিনে মোট ১০ ঘণ্টার জেরায় অংশগ্রহণ করেছিলেন দুই কক্ষের কমপক্ষে ৯১ জন জনপ্রতিনিধি। একের পর এক প্রশ্নবাণ উড়ে এসেছে জুকারবার্গের দিকে। কখনও ‘ঢোক’ গিলেছেন, কখনও জলের গ্লাসে চুমুক দিয়ে গলা ভিজিয়েছেন। কখনও বা জবাব দিয়েছেন বিতর্কিত প্রশ্নে। কিন্তু ফেসবুক কর্তার সুর ছিল একেবারে খাদে। তবে, নিজের দোষ ঢাকতে বল ঠেলে দিয়েছেন রাশিয়ান হ্যাকারদের কোটে। রাশিয়ান হ্যাকারদের দাপটে শুধু ফেসবুক নয়, অনেক সংস্থাই ক্ষতিগ্রস্থ বলে দাবি জুকারবার্গের।

আরও পড়ুন- মালদ্বীপে ‘চিনা আগ্রাসনে’ উদ্বেগ প্রকাশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের

মঙ্গলবার, জুকারবার্গকে যৌথ শুনানিতে ডেকে ছিল মার্কিন বিচারবিভাগীয় এবং বাণিজ্য বিষয়ক কমিটি। প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ৮ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বেহাত হওয়ার পুরো দায় নিজের কাঁধে নিয়েছেন জুকারবার্গ। তিনি বলেছেন, “ফেসবুক শুরু করেছিলাম আমিই। আমিই সংস্থার পরিচালনা করছি। তাই, পুরো দায়ভার আমারই। ” শুধুই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নয়, তাঁর ব্যক্তিগত তথ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা  সংস্থার কাছে চলে গিয়েছে বলে দাবি করেন এদিন।

আরও পড়ুন- ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে লড়ছেন অবসরপ্রাপ্ত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ বিচারপতি

সুপরিকল্পিতভাবে ডেটা সংগ্রহে ফেসবুকের ডিফল্ট সেটিংসে কোনও পরিবর্তন আনছে কিনা তা নিয়ে ফেসবুকের কাছ থেকে  হ্যাঁ ও না-এ জবাব চেয়েছিলেন নিউ জার্সির ডেমোক্র্যাট সদস্য ফ্রাঙ্ক পালোনি। জবাবে জুকারবার্গ জানান, এমন কিছু সমস্যা রয়েছে যেখানে এক কথায় উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির আরও প্রতিনিধি ক্যাথি ক্যাস্টর প্রশ্ন করেন, ব্যবহারকারীরা ফেসবুক না ঢুকলে, তাহলে কি ডেটা শনাক্ত করতে পারে জুকারবার্গের সংস্থা।ফেসবুক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করেন ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি বেন লুজানও। ডেমোক্র্যাটদের এমনই একাধিক প্রশ্নে দ্বিতীয় দিনে জর্জরিত করা হয় জুকারবার্গকে।

আরও পড়ুন- বদ্ধ ঘরে স্ক্রিপালের পোষ্যর মৃত্যু, বিপাকে ব্রিটেন

পিছিয়ে ছিলেন না রিপাবলিকানরাও। ফেসবুকে খবর, মতামত, ছবি-র মতো বিভিন্ন বিষয়ে কতটা হস্তক্ষেপ করতে পেরেছে এ নিয়ে জুকারবার্গকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান টেক্সাসের রিপাবলিকান প্রতিনিধি জো বার্টন। জুকারবার্গের স্বভাবসিদ্ধ নরম উত্তর ছিল, এখনও কনটেন্ট পলিসির উপর আরও ভাল কাজ করতে হবে ফেসবুককে। শুধুই তথ্য চুরি নয়, আরও অভিযোগ নির্বাচন, বিদ্বেষমূলক প্রচারে ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’ নিয়েছে ফেসবুক। আগামী দিনে ভারত, পাকিস্তান, মেক্সিকো, হাঙ্গেরিতে সাধারণ নির্বাচন রয়েছে। অতীত শিক্ষা নিয়ে ফেসবুক কর্তার মন্তব্য, এবার নির্বাচনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা বজায় রাখবে ফেসবুক।

আরও পড়ুন- দুবাইয়ে বসে পনজি  স্কিম খুলে জালিয়াতি, গোয়ার তরুণকে ৫০০ বছরের কারাদণ্ড

তবে, মার্কিন জনপ্রতিনিধিদের জুকারবার্গ এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নতিতে কাজ করছে ফেসবুক। এতে তিনি গর্ব বোধ করেন। জুকারবার্গের এই মন্তব্যে  কেউ কেউ সায় না দিয়ে থাকতে পারেননি এদিন। তার প্রভাব ফেসবুক শেয়ারও লক্ষ করা গিয়েছে। দু’দিনের শুনানি শেষে ক্যাপিটাল হিল থেকে কার্যত ‘মাথা উঁচু’ করে বেরোলেন জুকারবার্গ। তাঁর সংস্থার শেয়ারের দরে দেখা গেল সেই সবুজ সংকেত।  

.