স্বামীকে খুন করে মৃত্যুর মিথ্যে নাটক, সৎকার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টায় গ্রেফতার স্ত্রী
ঘটনার চারঘন্টার মধ্যেই স্ত্রী ও তার সহযোগী অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই ফাঁড়ির পুলিস।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কেবল স্বামীকে খুনই নয়, মৃত্যু নিয়ে নাটক করে সৎকার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করল স্ত্রী এবং তার প্রেমিক। কিন্তু তিরে পৌঁছনোর আগেই ডুবল তরী। পুলিসের জালে ধরা পড়লেন স্ত্রী রূপালী ঘোষ। স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করে মিথ্যে নাটকও করেন তিনি। জানা গিয়েছে চন্দ্রকোনায় বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে স্বামীকে খুনের অভিযোগ ওঠে স্ত্রী'র বিরুদ্ধে। প্রমাণ লোপাটের জন্য মৃতদেহ সৎকারের চেষ্টাও করে স্ত্রী। এই ঘটনার চারঘন্টার মধ্যেই স্ত্রী ও তার সহযোগী অভিযুক্তকে গ্রেফতার করছে চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই ফাঁড়ির পুলিস।
এ বিষয়ে ঘাটাল মহকুমা পুলিস আধিকারিক অগ্নীশ্বর চৌধুরী বলেন,"ঘটনা পরকীয়া থেকেই হয়েছে। স্ত্রী রূপালী ও খুনে সহযোগী সুশান্ত পাল নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয়েছে মৃত তপন ঘোষকে। আরও কেউ জড়িত কিনা তা তদন্ত চলছে।"
পুলিস সূত্রে জানা যায়,স্বামী খুনে অভিযুক্ত মহিলা রূপালী ঘোষ পরকীয়া সম্পর্কে জড়ায় চন্দ্রকোনা থানারই আগর গ্রামের গ্রেফতার হওয়া সুশান্ত পাল নামের যুবকের সঙ্গে। সুশান্তের এক পরিচিতর আনাগোনা ছিল মৃত তপন ঘোষের বাড়িতে। সেই সূত্রে সুশান্তের সঙ্গে আলাপ হয় রূপালীর। তারপরই শুরু বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক। যদিল সুশান্ত নিজেকে অবিবাহিত বলে জানিয়েছিল, এমনটাই জেরায় জানা যায়।
খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে পুলিস সূত্রে জানা যায়, রবিবার স্বামী তপন ঘোষ অসুস্থ হয়ে পড়ে,সেই সুযোগ নিয়েই স্ত্রী রূপালী রাতে প্রেমিক সুশান্ত পালকে স্বামীর অসুস্থতার খবর দিয়ে বাড়িতে ডাকে। স্বামীর অসুস্থতার সুযোগে তাঁকে খুন করলে কারও সন্দেহ হবে না, এমন পরিকল্পনা করেই মৃত তপনের স্ত্রী প্রেমিক সুশান্ত পালকে রাতে বাড়িতে ডেকে নেয় এবং দু'জনে গভীর রাতে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করে তপন ঘোষকে।
আরও পড়ুন, Rail: ছুটে আসছে সোনারপুর লোকাল, এদিকে লাইনে বড় ফাটল! তারপর?
এরপর খুনের ঘটনা চাপা দিতে স্বামীর অসুস্থতার নাটক ফাঁদে রূপালী। সকলকে তিনি জানান, বাথরুমে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় তপন ঘোষের। এমনকি এদিন সকালে মৃতদেহ সৎকারের জন্য প্রস্তুতিও হয়ে যায়। কিন্তু বাধসাধে মৃত তপন ঘোষের এক ভাই। তিনি মৃতদেহের শরীর দেখতে গিয়ে নজরে আসে গলায় ক্ষত ও শরীরে একাধিক আঘাত। আর এতে সমস্ত রহস্য ফাঁস হয়ে যায়।পরিবারের তরফে খবর দেওয়া হয় চন্দ্রকোনা থানার ক্ষীরপাই ফাঁড়িতে।
খবর পেয়ে পুলিস পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে মৃতের স্ত্রী রূপালীকে আটক করে। এরপর জেরা করলে ঘটনা স্বীকার করে নেন রূপালী। পুলিসের জেরাতেই উঠে আসে প্রেমিক সুশান্ত পালের নাম। এরপর পুলিস গ্রেফতার করে তাকেও। খুনের কথা স্বীকার করেছে বলে পুলিস সূত্রে খবর। পুলিসের তরফে এও জানানো হয় আর কেউ এই ঘটনায় জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মৃতের পরিবার অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি তুলেছে।