খড়্গপুরে সাইকেল নিয়ে সংগঠন করা পুরনো নেতাকে ব্রাত্য করার খেসারত দিল বিজেপি!

বিজেপির জন্মলগ্ন থেকে খড়্গপুরে মুখ প্রদীপ পট্টনায়েক। সেই সময়ে বিজেপির ঝান্ডা ধরার লোকও মিলত না। 

Updated By: Nov 28, 2019, 09:00 PM IST
খড়্গপুরে সাইকেল নিয়ে সংগঠন করা পুরনো নেতাকে ব্রাত্য করার খেসারত দিল বিজেপি!

মৌমিতা চক্রবর্তী: খড়গপুর সদরের মর্যাদার লড়াইয়ে ডাহা ফেল করল বিজেপি। রাজ্য বিজেপি সভাপতির গড়েই তাঁকে মাত দিয়ে তৃণমূল নেতারা বলছেন, দর্পচূর্ণ হল দিলীপ ঘোষের। তবে জয়ের নেপথ্যে যতটা না তৃণমূলের সাংগঠনিক দক্ষতা, তার চেয়ে বেশি করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছেন, প্রদীপ পট্টনায়েক। খড়্গপুরে সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিজেপির সংগঠন করতেন। সেই দলই ফুলেফেঁপে ওঠার পর ব্রাত্য হলেন প্রদীপ। আড়াআড়ি ভাগ হল বিজেপি- নব্য বনাম পুরনো। উপনির্বাচনে তার ফসল ঘরে তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। 

বিজেপির জন্মলগ্ন থেকে খড়্গপুরে তিনিই মুখ। সেই সময়ে বিজেপির ঝান্ডা ধরার লোকও মিলত না। তখন সাইকেল নিয়ে ঘুরে ঘুরে সংগঠন করতেন প্রদীপ পট্টনায়েক। সেই বীজ থেকে আজ পশ্চিমবঙ্গে রীতিমতো মহীরূহ বিজেপি। কিন্তু সেই দলে ঠাঁই হল না প্রদীপ পট্টনায়েকের।

কে টিকিট পেলেন? বিজেপির অন্দরে কান পাতলেই শোনা যায়, দিলীপ ঘোষের নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন প্রেমচন্দ্র ঝা। যিনি কয়েকদিন আগেই ছিলেন তৃণমূলে। রয়েছে দুর্নীতি-তোলাবাজির মতো অভিযোগও। প্রেমচন্দ্রকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি বিজেপির একাংশ। সেই দলে ছিলেন প্রদীপ পট্টনায়েকও। দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তিনি হলেন নির্দল প্রার্থী। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করে সাত কলা পূর্ণ করল বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, অর্বাচিনের মতো এই সিদ্ধান্ত বিজেপিকে ঠেলে দিয়েছে খাদের কিনারায়।    

তিলে তিলে যে দলটাকে তৈরি করলেন সেই দলেই তিনি আজ ব্রাত্য। খড়্গপুরে বিজেপি  ও প্রদীপ পট্টনায়েক ছিলেন সমার্থক। স্বভাবতই তাঁর অপমান মেনে নিতে পারেননি আদি বিজেপি নেতারা। লোকসভা ভোটে দিলীপ ঘোষের প্রার্থী হওয়া নিয়েও সোচ্চার হয়েছিলেন পট্টনায়েক। বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই কাল হয়ে দাঁড়াল। লোকসভা ভোটে বিজেপির ৪৫ হাজার ভোটের লিড ছিল। ৬ মাসের মধ্যে সেই পাহাড় লঙ্ঘন করে ২০৮৫৩ ভোটে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থী প্রদীপ সরকার। খড়্গপুরে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, নির্দল হয়ে পট্টনায়েক ভোট বেশি পাননি। কিন্তু তলে তলে তৃণমূলের সুবিধা করে দিয়েছেন। যদিও এব্যাপারে পট্টনায়েক বা তৃণমূল কেউই মুখ খুলতে নারাজ। দুপক্ষেরই দাবি, এসব গুজবে কান দেবেন না। 

অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ বিজেপি যখন দিশেহারা তখন শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে গোষ্ঠী কোন্দল মিটিয়ে তৃণমূল অপ্রতিরোধ্য শক্তি হয়ে ওঠে।  প্রদীপ সরকারের স্লোগান 'আপকা বেটা'। ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার সেরেছেন তৃণমূল প্রার্থী। বৃহস্পতিবার গণনার চতুর্থ রাউন্ডের পর পিছনে ফিরে তাকাননি তৃণমূলের প্রদীপ সরকার। বিজেপির পকেট হিসেবে পরিচিত এলাকাতেও তৃণমূলের জয় জয়কার। 

আরও পড়ুন- 'আমি দারুণ খুশি', উপনির্বাচনে ৩-০ হাঁকিয়ে বললেন তৃণমূলের রণনীতি গুরু প্রশান্ত কিশোর

.