দুর্গাপুরে জলের সংকট, বন্ধ তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের কিছু ইউনিট, বৈঠকে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ
ডিভিসি কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে জলাধারে জলের পরিমান পর্যালোচনা করবেন। তারপর বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: দুর্গাপুর ব্যারেজে লক গেট ভাঙার জেরে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। দু্র্গাপুরের ৪৩টি ওয়ার্ড সহ পাশ্বর্বতী জেলা বাঁকুড়া এবং পূর্ব বর্ধমানে দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সঙ্কট। সেইসঙ্গে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একের পর এক তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের একাধিক ইউনিট। জল সংকটের কারণেই মঙ্গলবার দুর্গাপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সাত নম্বর ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তিনশো মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা ছিল এই ইউনিটের।
জলসঙ্কটে ভুগছে বাঁকুড়ার মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। জলাভাবে সোমবারই উৎপাদন বন্ধ করা হয়েছে একটি ইউনিটে। জল সরবরাহ কমানো হয়েছে অন্যান্য খাতেও। নির্জলা দিন কাটানোর আশঙ্কার প্রহর গুনছেন মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত প্রায় দু হাজার কর্মী ও আধিকারিকদের পরিবার। মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতিদিন বিপুল পরিমান জল প্রয়োজন হয়। বিপুল জল লাগে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রায় দু হাজার কর্মী ও আধিকারিকদের পরিবারেও। এছাড়াও বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাগান ও স্টেডিয়াম সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো রক্ষনাবেক্ষনেও প্রতিদিন বিপুল পরিমান জল খরচ হয়। সবমিলিয়ে প্রতিদিন মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দৈনিক জলের চাহিদা দেড় লক্ষ কিউবিক মিটার।
জলের বিকল্প কোনো উৎস না থাকায় এই জলের জন্য মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় দুর্গাপুর ব্যারেজের উপর। গত শনিবার দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেট ভেঙে যাওয়ায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় মেজিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। কেন্দ্রের নিজস্ব রিজার্ভারে যে জল ছিল তা দিয়ে শনি, রবিবার বিদ্যুৎ উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়। কিন্তু সোমবার দুপুরের পর জলাভাবের কারনে বাধ্য হয়ে ৮ নম্বর ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়। নিজস্ব রিজার্ভারে জলের পরিমান মাত্রাতিরিক্ত ভাবে কমে আসায় নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে অন্যান্য জল খরচও। বাগান পরিচর্যা, স্টেডিয়াম রক্ষনাবেক্ষন, রাস্তা সাফাই সহ অন্যান্য খাতে জল খরচ পুরোপুরি বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কর্মী আবাসনে জল ব্যাবহার কমানোর আবেদন জানিয়ে মাইক প্রচার চালানো হয়েছে।
কর্মী আবাসনে দৈনিক যেখানে তিনবার জল দেওয়া হত আজ থেকে সেখানে দুবার জল দেওয়া হবে জানানো হয়েছে। কমানো হয়েছে জল সরবরাহের সময় সীমাও। আর এতেই নির্জলা দিন কাটানোর আশঙ্কা তাড়া করতে শুরু করেছে কর্মী আবাসনের বাসিন্দাদের। তবে তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষ জানিয়ে বিদ্যুত উতপাদনের থেকেও তাঁরা জল সরবরাহকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ইতিমধ্যেই একটি ইউনিটের বিদ্যুত উতপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । প্রয়োজন হলে আরও একটি ইউনিটের উতপাদন বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে কলোনিতে জল সরবরাহ করার ক্ষেত্রে প্রয়োজনকে বেশি অগ্রাধিকার দেবে। ডিভিসি কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে জলাধারে জলের পরিমান পর্যালোচনা করবেন। তারপর বিদ্যুৎ উৎপাদন সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করা হবে বলে জানানো হয়েছে।