পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল তৈরি ঘিরে রণক্ষেত্র বিশ্বভারতী, রাজ্য সরকারকে নিশানা রাজ্যপালের

নির্মীয়মাণ পাঁচিল, ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। এমনকি গেটও ভেঙে ফেলা হয় বুলডোজার দিয়ে।

Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Aug 17, 2020, 02:23 PM IST
পৌষ মেলার মাঠে পাঁচিল তৈরি ঘিরে রণক্ষেত্র বিশ্বভারতী, রাজ্য সরকারকে নিশানা রাজ্যপালের
ফাইল ফোটো

নিজস্ব প্রতিবেদন : "বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।" টুইট করে জানালেন রাজ্যপাল। পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল তোলাকে কেন্দ্র করে গত ২ দিন ধরে উত্তপ্ত বিশ্বভারতী। চলে ভাঙচুরও। বিশ্বভারতীতে অশান্তি, উত্তেজনার জন্য এদিন সকালে প্রথমে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ধনখড়। বিশ্বভারতী নিয়ে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে টুইটারে সরব হন রাজ্যপাল। এরপরই বেলায় তিনি জানান যে, "বিশ্বভারতীর আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে সবরকম পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।"

প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত হয় গত পরশুদিন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পৌষ মেলার মাঠ ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেইমত পরশুদিন মাঠে পাঁচিল তোলার কাজ শুরু হয়। অভিযোগ, বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সদস্যরা তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঠিকাদার কর্মীদের মারধর করেন। পাঁচিল তোলার কাজ বন্ধ করে দেন। এরপরই সোশ্যাল মাধ্যম থেকে শুরু করে বোলপুর শহরবাসীর মধ্যে পাঁচিল তোলার বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। 'মেলার মাঠ বাঁচাও' বলে একটি কমিটিও তৈরি করা হয়। 

গতকাল আবার 'মেলার মাঠ বাঁচাও' কমিটির কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তিকে পাঁচিল তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেতে দেখা যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে আবার গতকাল উপাচার্যকে নিজে উপস্থিত থেকে হাজার জন বিশ্বভারতীর কর্মীকে নিয়ে ফের পাঁচিল তৈরির কাজ শুরু করতে দেখা যায়। এরপর আজও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে একটি জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রায় ১০ হাজারের বেশি লোক আজ ঘটনাস্থলে জমায়েত করে। অভিযোগ, জমায়েত চলাকালীন নির্মীয়মাণ পাঁচিল এবং বিশ্বভারতীর তরফে তৈরি অস্থায়ী ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়। লুঠপাটও চালানো হয়। এমনকি মেলার মাঠে প্রবেশের যে গেটগুলি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল, সেগুলিও ভেঙে ফেলা হয়। বিক্ষোভকারীরা নিজেরাই বুলডোজার নিয়ে এসে সবকিছু উপড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ। 

এখন এই বিক্ষোভের মধ্যে রাজনৈতিক যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ বিভিন্ন মহলের। কারণ বিক্ষোভে সামিল হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউরি সহ একাধিক শাসকদলের কর্মীকে। যদিও বিধায়কের দাবি, তিনি বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ছাত্র ও বোলপুরবাসী হিসেবে এর বিরোধিতা করতে উপস্থিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে। কারণ ঘটনাস্থলের পাশেই শান্তিনিকেশন থানা। এদিকে এত মানুষের জমায়েত হলেও পুলিসের কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি। বিশ্বভারতীর এগজিকিউটিভ কমিটির সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিস সুপারকে ফোন করা হয়েছিল। পুলিস সুপার বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ঘটনাস্থলে একটিও পুলিসকর্মীকে দেখা যায়নি। তবে সূত্রে খবর, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বৈঠকে বসেছেন বিশ্বভারতীর আধিকারিকরা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন, আদিবাসী অনুষ্ঠানে যোগ দেন ৭ দিন আগেই! করোনায় আক্রান্ত কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী

.