স্কুলের পোশাক বিলি করে লাখ টাকা আত্মসাৎ! কাঠগড়ায় তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লেবেল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই এই দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ। প্রতি পোশাকের ৬০০ টাকা দাম হিসেবে ২০০০ পোশাকের মোট দাম হয় ১২ লাখ টাকা। ওদিকে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর আয় পোশাক প্রতি মাত্র ৩০ টাকা করে মোট ১৮,০০০ টাকা।
সন্দীপ ঘোষ চৌধুরী: স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক বিলি। আর তা নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ। এই অভিযোগে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে শুরু তরজা। অভিযোগ, তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন নিজেরা পোশাক কিনে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর লেবেল লাগিয়ে ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে স্কুলে স্কুলে পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করছে। স্বাভাবিকভাবেই পোশাক বিলিতে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্কুলে পোশাক বিলিকে কেন্দ্র করে জেলা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠন লক্ষ লক্ষ টাকার দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের। যথারীতি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। ওদিকে, কাটোয়া-২ নম্বর ব্লকের বিডিও পোশাক বিলি বিষয়ে কিছু বলতে চায়নি।
সরকারি নির্দেশ অনুসারে ২০২১ সাল থেকে প্রাথমিক স্কুলে পোশাক বিলি করবে কোনও স্বেচ্ছসেবী সংস্থা বা স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা। রাজ্যের অনেক স্কুলে এই নিয়ম চালু থাকলেও, পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া-২ নম্বর ব্লকের জগদানন্দপুর পঞ্চায়েত এলাকায় স্কুলের পোশাক বিলিতে সরকারি নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। ২০২১ সালের নথি অনুযায়ী জগদানন্দপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় ১৭টি স্কুলের ২০০০ পড়ুয়াকে পোশাক বিলি করা হয়েছে। সেখানে প্রতি পোশাকের ৬০০ টাকা করে দাম নির্ধারণ করা আছে। এই হিসেবে ২০০০ পোশাকের মোট দাম হয় ১২ লাখ টাকা। ওদিকে স্ব-নির্ভর গোষ্ঠীর আয় পোশাক প্রতি মাত্র ৩০ টাকা করে মোট ১৮,০০০ টাকা।
অভিযোগ, বাকি লাভের টাকা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বরা আত্মসাৎ করেছে। আর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর লেবেল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেই এই দুর্নীতি হয়েছে। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি মহম্মদ আবু বক্কর দাবি করেন, 'পোশাক বিলি নিয়ে অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সিপিএমের কাজ অভিযোগ করা তাই করেছে। যদি আমাদের সংগঠনের কোনও সদস্য এই কাজে জড়িয়ে থাকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' অন্যদিকে, কাটোয়া পূর্ব চক্রের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি শ্রীধর ভট্টাচার্যও বলেন, 'যদি আমাদের সংগঠনের কোনও নেতা এই জঘন্য কাজে জড়িয়ে থাকে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দলকে বলব।'