Bhutan: থিম্পু থেকে রাগ করে পালিয়ে এসেছিলেন ভারতে, ১৩ বছর পরে ফিরলেন ঘরে...
Bhutan: বাবা নামগে ওয়াংদি, চামুর্চি চেকপোস্টে অবস্থিত সামচি ভুটান গেটে ছেলেকে নিতে এসেছিলেন। ভুটানের সমস্ত প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে তিনি তাঁর ছেলে ফোনসে ওয়াংদিকে বাড়িতে নিয়ে যেতে সক্ষম হন।
অরূপ বসাক: গল্প হলেও সত্যি! যেন সিনেমা! প্রায় ১৩ বছর ভারতে নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে বাবার দেখা পেলেন যুবক! সাক্ষাৎকালে পিতাপুত্র একে অপরকে জড়িয়ে ধরে প্রায় কেঁদে ফেলেন আর কী! ঘটনাটা কোনও ছবির স্ক্রিপ্টের চেয়ে কম নয়! বাবা নামগে ওয়াংদি, চামুর্চি চেকপোস্টে অবস্থিত সামচি ভুটান গেটে তাঁর বছরছত্রিশের ছেলেকে নিতে এসেছিলেন। ভুটানের সমস্ত প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পরে তিনি তাঁর ছেলে ফোনসে ওয়াংদিকে নিয়ে বাড়িতে ফিরতে পারেন।
আরও পড়ুন: Bangladesh Weather: আবার ফিরে এসেছে অসহ্য তীব্র সেই তাপপ্রবাহ! আর কত এই দীর্ঘ দগ্ধ দিন...
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে ভুটান থেকে ভারতীয় সীমান্তে প্রবেশের পর ফোনসে ওয়াংদি নিখোঁজ হয়ে যান। বাবা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ছেলের কোনো খোঁজ তখন পাননি। তাঁদের তখন মনে হয়, তাঁদের ছেলে বুঝি আর এ পৃথিবীতে নেই! মনের দুঃখ মনেই চেপে কোনও ক্রমে দিন গুজরান করছিলেন এতদিন। কিন্তু ১৩ বছর পর যখন হঠাৎ তার নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজে পেলেন, তখন তিনি যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে, ছেলেকে সত্যিই আবার ফিরে পেলেন! বাবা-ছেলের এই পুনর্মিলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে মুম্বইয়ের 'শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশন'।
মুম্বইয়ের শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের সমাজকর্মী সমর বসাক এবং নিখিলেশ সাংরা ভুটানি যুবক ফোনসে ওয়াংডিকে মুম্বইয়ের শ্রদ্ধা পুনর্বাসন কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসেন। তাঁরা এদিন এই ভুটানি যুবককে নিরাপদে তাঁর বাবার হাতে সঁপে দেন। সমর জানান, ভুটানের এই নাগরিক তাঁর বাবার সঙ্গে ভুটানের রাজধানী থিম্পুর এক বেকারিতে কাজ করতেন। বাবার সঙ্গে হঠাৎ বিবাদের জেরে ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে পালিয়ে যান।
ফেনসে বহু বছর ধরে দক্ষিণ ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হোটেলে কাজ করছিলেন। কোভিড মহামারিতে এই যুবক যখন বেকার হয়ে পড়েন, তখন তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কেউ একজন ছেলেটিকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর তাঁকে আনা হয় চেন্নাইয়ের এক মানসিক হাসপাতালে। সেখানে তাঁর চিকিৎসা করা হয়। সেখানে ৬ মাস থাকার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য মুম্বইয়ের শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনে নিয়ে আসা হয়। তিনি জানান, সেখানে ডাঃ ভারত ভাতওয়ানির তত্ত্বাবধানে এই যুবকের মানসিক অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হয়। কাউন্সেলিং চলাকালীন যুবক জানান, তাঁর বাড়ি ভুটানের থিম্পু শহরে। আগে এই যুবক নিজের নামও ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারতেন না। কিন্তু নাম ও ঠিকানা না থাকায় এই যুবকের বাড়ি খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: Artificial Intelligence: আসছে বেকারত্বের সুনামি! কোটি কোটি লোকের চাকরি 'খাবে' এআই...
এবার চামুর্চি চেকপোস্টের সশস্ত্র সীমাবল অফিসার, চামুর্চি ফাঁড়ির পুলিস অফিসার, স্থানীয় সমাজকর্মী রেজা করিম-সহ অন্যান্যদের সহায়তায় ১৩ বছর ধরে নিখোঁজ ভুটানি যুবককে তাঁর পরিবারের সঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার ব্যতিক্রমী কাজটি করা গেল।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)