Bardhaman: লখিন্দরকে দংশন করে পালানোর সময়ে কালনাগিনীর দিকে কাজললতা ছুঁড়ে মারলেন বেহুলা...

Bardhaman Snake Worship: একুশ শতকেও কিছু প্রশ্নের উত্তর অজানা। এগুলিই হয়তো সভ্যতা-সংস্কৃতির 'মিসিং লিংক'! এই গ্রামে গ্রামবাসীদের রান্নাঘরে শোবারঘরে অবাধে বিচরণ করে কেউটে প্রজাতির সাপ। রহস্য কী?

Updated By: Jul 24, 2024, 01:44 PM IST
Bardhaman: লখিন্দরকে দংশন করে পালানোর সময়ে কালনাগিনীর দিকে কাজললতা ছুঁড়ে মারলেন বেহুলা...

পার্থ চৌধুরী: সেই সাপ জ্যান্ত! হ্যাঁ, সুকুমার রায়ের বাবুরাম সাপুড়ের সেই সাপেরা এখানে জীবন্ত। তারা নাকি কাউকে কামড়ায় না। জনশ্রুতি এরকমই। তবে কেউ তাদের ডান্ডা মেরে ঠান্ডাও করে না। বরং পরম যত্নে আগলে রাখে। পূর্ব বর্ধমানের ভাতার মঙ্গলকোটের সেই সাতগ্রামে সোমবার ঝাঁংলাই বা ঝাঁকলাই বা ঝংকেশ্বরী পুজো হয়ে গেল।

আরও পড়ুন: Nepal Plane Crash: জ্বলে উঠল বিমান, গলগল করে বেরোচ্ছে ধোঁয়া! ভেঙে পড়ল প্লেন, মৃত ১৯

চিরচরিত প্রথা মেনে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট ও ভাতারের একাধিক গ্রামে পুজিত হলেন দেবী ঝাঁংলাই বা ঝঙ্কেশ্বরী। পুজোয় মাতোয়ারা মঙ্গলকোট ও ভাতারের সাতটি গ্রামের মানুষজন। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে পুজো হয় এই ঝংকেশ্বরী দেবীর। ছোট পোশলা, পলসোনা, মশারু, নিগন, বড় পোশলা, শিখরতোড়, মুকুন্দপুর-- এই সাত গ্রামে ঝংকেশ্বরী দেবীর দেখা মিলত। বর্তমানে ছোট পোশলা, বড় পোশলা, মশারু, পলসোনা-- এই চার গ্রামে দেখা মেলে সাপেদের। আগের চেয়ে কম হলেও একেবারে অদেখা নয়। রান্নাঘর, পথে-ঘটে, এমনকি শোবার ঘরেও অবাধ বিচরণ কেউটে প্রজাতির এইসব সাপের। শিশুরাও ভয় পায় না।

গ্রামবাসীদের কথায়, এই সাপ কাউকে কামড়ায় না । কামড়ালেও বিষ হয় না।  দেবীকে নিয়ে রয়েছে নানা কাহিনি। গ্রামবাসীরা বলেন, স্বপ্নাদেশ পেয়ে  দেবীর পুজো অনুষ্ঠিত হয়। গ্রামবাসীরা আরও জানান, মা  আসলে কালনাগিনী। লখিন্দরকে বাসরঘরে দংশন করার পর পালানোর সময় বেহুলা কাজললতা ছুড়ে মেরেছিলেন । যার ফলে কালনাগিনীর লেজ কেটে যায়। বর্তমানে বড়পোশলা, ছোট পোশলা, মশারু, পলসোনা গ্রামে যে দেবীর দেখা মেলে। আজও প্রথা মেনে দেবীর পুজোর আয়োজন করা হয়। পুজো উপলক্ষে গ্রামে বসে মেলা। গ্রামবাসীদের আত্মীয়দের সমাগম হয় গ্রামে।

আর এক লোককথায় একটু অন্যরকম আছে। আগে ছিল সাত গ্রাম। এখন চার। মুসুরি, পলসোনা, বড় পোশলা ও ছোট পোশলার সঙ্গে এখানেও জুড়ে গিয়েছে মনসামঙ্গলের বেহুলা-লখিন্দরের উপাখ্যান। গ্রামবাসীরা বলেন, ঝঙ্কার শব্দটা এসেছে বেহুলার বাংলার আওয়াজ থেকে। গ্রামের লোকের বিশ্বাস, লোহার বাসরে লখিন্দরকে ছোবল মারার পরে কালনাগিনীর বিষ-প্রয়োগের ক্ষমতা চলে যায়। বেহুলা শর্ত দেন, নির্বিষ হয়ে তাকে সাত গ্রামে লুকিয়ে থাকতে হবে। পূর্ব বর্ধমানের এই সাত গ্রামেই নাকি এখন কালনাগিগীর বাস। তারই নাম 'ঝাঁকলাই', তাঁকেই ঝঙ্কেশ্বরী দেবীরূপে পুজো করা হয় গ্রামে।

শোনা যায়, ৯০০ বঙ্গাব্দ থেকে এই পুজো চলে আসছে। দীর্ঘদিনের সাপের সঙ্গে সহাবস্থান এই গ্রামের মানুষের। কেউ কাউকে শত্রু মনে করে না। এর কারণ নিয়ে নানা ধোঁয়াশা রয়েছে। এই সাপ কোনো বিশেষ প্রজাতির কি না, এদের কোনো মিউটেশন ঘটেছে কি না, কিংবা কোনো প্রাকৃতিক বা ভূ-চৌম্বকীয় কারণে সাপেরা স্বভাব পালটে ফেলেছে কি না, তা নিয়ে পাকাপাকি কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি। 

আরও পড়ুন: Budget 2024: বাজেটে এবার ঘোর আধ্যাত্মিকতা! বিষ্ণুচরণচিহ্ন এবং বৌদ্ধগয়াকে কেন্দ্র করে যুগান্তর ভ্রমণশিল্পে...

আসলে, এই একুশ শতকেও কিছু প্রশ্নের উত্তর অজানা। এগুলিই হয়তো 'মিসিং লিংক'!

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.