Jalpaiguri: কারও পায়ে পেইন কিলার স্প্রে; কাউকে জলের বোতল, মইনুল ও তার পরিবারের পরিষেবায় আপ্লুত জল্পেশযাত্রীরা
Jalpaiguri: মহম্মদ মইনুল জানায় ছোট বেলা থেকে তিনি জলপাইগুড়ি শহরে বড় হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই শহরের একটা অন্যতম দৃষ্টান্ত। তাই হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ তিনি না দেখে সম্প্রতির নজির বজায় রাখতে তিনি সচেষ্ট
প্রদ্যুত্ দাস: জাতি দাঙ্গায় যখন জ্বলছে মণিপুর। ঠিক তখনই উল্টো ছবি দেখা গেলো জলপাইগুড়িতে। হিন্দু তীর্থযাত্রীদের সহায়তা প্রদান করে নজর কাড়ল এক মুসলিম পরিবার। জল্পেশের তীর্থযাত্রীদের কারও পায়ে পেইন কিলার স্প্রে করে দিলেন, কারও দিকে এগিয়ে দিলেন জলের বোতল।
আরও পড়ুন- চার বছর ধরে পাশবিক অত্যাচার চালিয়েছে শ্বশুর, মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে থানায় গৃহবধূ
কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হেঁটে শিবের মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছেন হিন্দু ভক্তরা। দীর্ঘ পথ হেঁটে মন্দিরে পৌঁছাবার আগেই কারোও পায়ে ফোস্কা পড়ছে। অনভ্যাসের ফলে পা ব্যাথা হয়ে যাচ্ছে। আর সেইসব তীর্থ যাত্রীদের হাতে জলের বোতল দিয়ে কিংবা তাদের পায়ে পেইন কিলার স্প্রে করে দিচ্ছেন এক মুসলিম পরিবার। সম্প্রীতির এক বিরল নজির দেখা গেল জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর এলাকায়।
উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ শৈব তীর্থক্ষেত্র জল্পেশ। শ্রাবণ মাসের সবকয়টি সোমবারে এই মন্দিরের অনাদি শিবলিঙ্গে জল ঢালতে আসেন ভক্তরা। এবারেও সেই নিয়মের ব্যাতিক্রম হয়নি। রবিবার রাত থেকেই জাতীয় সড়ক ধরে ভোলে বোম ধ্বনি দিয়ে ভক্তদের ঢল জল্পেশ মন্দিরমুখি।
ওইসব ভক্তদের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে তাদের পায়ে পেইন কিলার স্প্রে করে দিচ্ছেন মইনুল। আর এই কাজে তাকে সহায়তা করেছে তার স্ত্রী এবং তার বছর আটেকের মেয়ে। শুধু পেইন কিলার নয়। তারা স্ব পরিবারে তীর্থ যাত্রীদের বিনামূল্যে জলের বোতল। ঠান্ডা পানীয় দিচ্ছেন। ভিন্ন ধর্মের মানুষের কাছ থেকে এরকম পরিষেবা পেয়ে হতবাক ভক্তরা। তারাও দু হাতে আশীর্বাদ করে গেলেন এই সংখ্যালঘু পরিবারকে।
মহম্মদ মইনুল জানায় ছোট বেলা থেকে তিনি জলপাইগুড়ি শহরে বড় হয়েছেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এই শহরের একটা অন্যতম দৃষ্টান্ত। তাই হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ তিনি না দেখে সম্প্রতির নজির বজায় রাখতে তিনি সচেষ্ট। তাই হিন্দু তীর্থযাত্রীদের পায়ে পেইন কিলার স্প্রে করে দিচ্ছেন তিনি।
মইনুলের স্ত্রী রঞ্জিতা ও তার মেয়ে মুসকান জানালেন মানুষের সেবা করা পরম ধর্ম। তাই আজ তারা প্রায় এক হাজার তীর্থ যাত্রীদের হাতে জলের বোতল তুলে দিয়েছেন। দিয়েছেন সফট ড্রিংক। এছাড়া আরও কয়েক হাজার মানুষের পায়ে পেইন কিলার স্প্রে করে দিয়েছেন।
হিন্দু তীর্থযাত্রীদের যাতে মন্দিরে পৌঁছাতে কষ্ট না হয় তারজন্য তাদের পায়ে এইভাবে পেইন কিলার স্প্রে করে দিচ্ছেন এক মুসলিম পরিবার। দেখে কার্যত অবাক শুভঙ্কর রায়, সুরজিত দেবনাথ। তারাও এই পরিবারের সমৃদ্ধি কামনা করলেন।