'৩ দিন ঘুমাইনি, হয় কাজ করতে দিন, নয় আমাকে গুলি করুন, মাথা কেটে নিন'

"লকডাউনের জন্য লোকবল কম। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব হচ্ছে। তারমধ্যে করোনার জন্য সব সানিটাইজ করে করতে হচ্ছে।"

Updated By: May 23, 2020, 08:33 PM IST
'৩ দিন ঘুমাইনি, হয় কাজ করতে দিন, নয় আমাকে গুলি করুন, মাথা কেটে নিন'

নিজস্ব প্রতিবেদন : একদিকে করোনা, অন্যদিকে আমফান। একসঙ্গে দুটোরই মোকাবিলা করতে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গকে। দিন-রাত এক করে কাজ করছে প্রশাসন। মানুষকেও ধৈর্য্য ধরতে হবে। কাকদ্বীপ পরিদর্শনের পর নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে রাজ্যবাসীকে এই বার্তা-ই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সুন্দরবনে মানুষ না খেয়ে দিন-রাত কাটাচ্ছেন, দেখে এলাম। তাঁরা তো অধৈর্য হচ্ছেন না! তাহলে আপনারা কেন ধৈর্য ধরছেন না? আমরা সাধ্যমতো কাজ করছি। আমি ও আমার টিম কেউ ৩ দিন ঘুমাইনি। দিন-রাত এক করে কাজ করছি। সব দলকে বলব, কিছুদিনের জন্য ক্ষান্ত হন। কাজ করতে দিন। পছন্দ না হলে আমাকে গুলি করুন। নইলে আমার মাথা কেটে নিন।"   

আমফানে ক্ষতি

১৯৩৭-এর পর আমফান-ই বাংলায় সবচেয়ে বড় দুর্যোগ বলে এদিন কাকদ্বীপ যাওয়ার সময় উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এটা একটা বড় দুর্যোগ। সময় লাগবেই। করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর এটা। জাতীয় বিপর্যয়ের থেকেও বড়। প্রচুর গাছ পড়েছে। তাও যে সে গাছ নয়। মোটা মোটা গাছ পড়েছে। যা এর আগে হয়নি। শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই ১০ লাখ বাড়ি ভেঙেছে। ৪৫ হাজার বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙেছে। এগুলো সব রাতারাতি হয় না।" 

পুনর্গঠন প্রক্রিয়া

মুখ্যমন্ত্রী জানান, "CESC আমাদের হাতে নেই। আমার হাতে যা আছে করছি সব। বিদ্যুতের তার জুড়তে দক্ষ লোক চাই। আমরা ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা সরকারের সঙ্গেও কথা বলেছি। সাহায্য চেয়েছি। কলকাতায় মোট ১২৫টি টিম কাজ করছে। সারা বাংলায় ১০০০টি টিম কাজ করছে। সেনাকেও চেয়েছি। কিছু জেনারেটরও চেয়েছি। সেটা দিয়ে আপৎকালীনভাবে চালানো হবে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা, সল্টলেক স্টেডিয়াম, নেতাজি ইন্ডোরকেও বলেছি। ৮০ থেকে ৯০টা জেনারেটার জোগাড় করেছি।"

পুনর্গঠনে বাধা

তবে দিন-রাত এক করে কাজ করলেও করোনার কারণে প্রশাসনকে পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, নানা অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। এমনটাই বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "লকডাউনের জন্য লোকবল কম। দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত লোকবলের অভাব হচ্ছে। তারমধ্যে করোনার জন্য সব সানিটাইজ করে করতে হচ্ছে। ৭৫ শতাংশ দোকান বন্ধ। ট্রেন বন্ধ। কর্মীরা আসতে পারছেন না। তাও সরকারি সব বাস চালাতে বলেছি। বেসরকারি বাস চালাতেও অনুরোধ করেছি।" ছুটির মধ্যেও কাজ চলবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আমফান রিলিফ ফান্ড

এদিন মুখ্যমন্ত্রী আমফান মোকাবিলায় একটি ফান্ড তৈরির কথা জানান। ইচ্ছুক সহৃদয় ব্যক্তিদের সেই ফান্ডে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "ডিজাস্টার রিলিফ ফান্ড তৈরি করেছি। যদি কেউ মনে করেন, সাহায্য করুন। আইসিআই ব্যাঙ্কের 62800104066 এই অ্যাকাউন্টে সাহায্য করতে পারেন।" আরও জানান ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি গঠন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন, 

জরুরি ভিত্তিতে জেনারেটর চালাবে CESC, পরিস্থিতি 'কিছুটা স্বাভাবিক' হতেও মঙ্গলবার গড়াবে

'কেউ কেউ উসকাচ্ছে, প্ররোচিত হবেন না, আমাদের শান্তিতে কাজটা করতে দিন'

 

.