রাত বাড়লেও জারি উদ্ধারকাজ, ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুর নীচে চলছে প্রাণের খোঁজ
ভেঙে পড়ল মাঝেরহাট ব্রিজ। এই মুহূর্তে খবর পাওয়া গেল, মাঝেরহাট ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়েছে। একাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাত বাড়লেও বিরাম নেই ভেঙে পড়া মাঝেরহাট সেতুতে উদ্ধারকাজে। কলকাতা পুলিস, বিপর্যয় মোকাবিলা দল ও সেনাবাহিনী একযোগে চালাচ্ছে উদ্ধারকাজ। ভেঙে পড়া সেতু থেকে হতাহতদের উদ্ধারের পর রাত বাড়তে সরানো হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িগুলি। ক্রেন এনে একে একে সেতুর ভাঙা অংশ থেকে তুলে ফেলা হয় গাড়িগুলিকে।
ওদিকে সেতুর ভাঙা অংশের নীচে কেউ আটকে থাকতে পারেন এই আশঙ্কায় চলছে তল্লাশি। ব্রিজের ডেকে যন্ত্র দিয়ে ফুটো করে তৈরি করা হয়েছে ম্যান হোল। তা দিয়ে নীচে নেমে তল্লাশি চালান বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে সেখানে এখনো পর্যন্ত কারও খোঁজ মেলেনি। রাতে সেতুর নীচে কেউ চাপা পড়ে আছে কি না জানতে আনা হয় পুলিস কুকুর।
মঙ্গলবার বিকেল ৪.৪৫ মিনিটে ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট ব্রিজ। একাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আরও ৪ জনের মৃত্যুর আশঙ্কা। ঘটনাস্থলে পুলিস, রয়েছেন সেনাবাহিনীর কর্মী। বহু বাইক আরোহীর ব্রিজের নীচে চাপা পড়ে থাকার খবর পাওয়া গিয়েছে। ব্রিজের বিভিন্ন বিন ও পিলারের সাহায্যে ভেঙে পড়া অংশে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যাতে ব্রিজের বাকি অংশটাও ভেঙে না পড়ে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কলকাতা পুরসভার আধিকারিকরা। ভাঙা ব্রিজে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি। মনে করা হচ্ছে, মুখ থুবড়ে পড়ে থাকা গাড়ি ও আটকে পড়া বাসের মধ্যে আর কেউ আটকে নেই। সকলকেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে ভাঙা অংশের নীচে কেউ চাপা পড়ে রয়েছেন কিনা, তা স্পষ্ট নয়।
দিনের আলো পড়ে আসায়, কিছুটা হলেও বাধা পাচ্ছে উদ্ধারকাজ। গাড়ির আলো চালিয়ে আপাতত চলছে উদ্ধারকাজ। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনকে উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসে। কয়েকজন আহতকে সিএমআরআই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হঠাত্ প্রবল আওয়াজে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে পড়ে। সেতুর উপরে যানবাহনগুলি ছিটকে পড়ে। বাস এবং বিভিন্ন গাড়ি-বাইকের আরোহীরা গুরুতর আহত হন।
ফিরে এল পোস্তা উড়ালপুল আতঙ্ক। মঙ্গলবার বিকাল পৌনে পাঁচটা নাগাদ বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। রেললাইনের ওপর মাঝেরহাট ব্রিজের ১০০ মিটারের বেশি জায়গা ভেঙে পড়ে। ব্রিজের তলা ও উপর দিয়ে গাড়ি যাচ্ছিল, ঘটনার মুহূর্তে দুটি বাসও যাচ্ছিল ব্রিজের ওপর দিয়ে। বহু মানুষ আটকে পড়েছেন, তুবড়ে গিয়েছে বহু গাড়ি। একাধিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা। স্থানীয়রাই প্রাথমিকভাবে উদ্ধারকাজ শুরু করেছেন। দেহ টেনে বার করে আনার চেষ্টা চলছে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। ক্রেন দিয়ে ব্রিজের ভাঙা অংশ টেনে বার করা হচ্ছে। ভাঙা অংশের চারদিক লোহার গার্ডওয়াল দেওয়া হয়েছে। গাড়িগুলিকে ক্রেন দিয়ে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া বাসটির চাকা ফুটো করে হাওয়া বার করে দেওয়া হয়েছে, যাতে বাসটি গড়িয়ে না যায়। হাওড়া-বেহালা রুটের একটি বাস আটকে রয়েছে।
আপাতত ডায়মন্ডহারবার রোড থেকে মাঝেরহাট ব্রিজে ওঠার রাস্তাটিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ভেঙে পড়ে পোস্তা উড়াল। ২ বছর পর আবারও কলকাতায় ফিরে এল সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতি।
ব্রিজের যে অংশ ভেঙে গিয়েছে, তার নীচে জলাশয় রয়েছে, সেক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা হলেও কম হতে পারে বলে মনে করছে পুলিস। কিন্তু এতে আরও একটি অসুবিধা রয়েছে। যেহেতু খালের ওপরের অংশের ব্রিজ ভেঙে পড়েছে, সেখানে যন্ত্র নিয়ে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে উদ্ধারকারী দলের। ভয়াবহ অবস্থা এলাকায়...