দুর্গাপুজোর ওপর জিজিয়া কর বসানোর চেষ্টা হচ্ছে, ফেসবুকে বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার
দুর্গাপুজোর ওপর কর বসিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি ও উৎসবের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, 'উৎসবের আমেজ অটুট রাখতে অবিলম্বে কর প্রত্যাহার করা উচিত সরকারের। আমার অনুরোধ, পুজো বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে এরকম কোনও জিজিয়া কর নেবেন না।'
নিজস্ব প্রতিবেদন: দুর্গাপুজোর ওপর 'জিজিয়া কর' বসাতে চাইছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার কার্যত এই ভাষাতেই ফেসবুকে বোমা ফাটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিডিটি-র এক প্রেস বিবৃতির জবাবে লেখা সেই ফেসবুক পোস্টে মমতা লেখেন, প্রেস বিবৃতিতে তথ্য বিকৃত করেছে সিবিডিটি। বলে রাখি, মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রেস বিবৃতিতে সিবিডিটি জানিয়েছে, চলতি বছরে কোনও পুজো কমিটিকে কোনও নোটিস পাঠায়নি আয়কর বিভাগ।
মমতা লিখেছেন, 'এইমাত্র খবর পেলাম দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে নোটিস পাঠানো নিয়ে প্রেস বিবৃতি জারি করেছে সিবিডিটি। যাকে সবাই পুজো জিজিয়া কর বলছে। সেই তথাকথিত সেই প্রেস বিবৃতিতে বেশ কিছু দাবি তথ্যগতভাবে ভুল।'
মুক্তি পেল ইস্ট বেঙ্গলের শতবার্ষিকী থিম সং, শুনে ফেলুন এক ক্লিকে
মমতার দাবি, 'গত বছর পুজো কমিটিগুলিকে আয়কর নোটিস পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঢাকি, পুরোহিত এমনকী গ্রামীণ শিল্পীদেরও নোটিস পাঠিয়েছে আয়কর বিভাগ। টিডিএস-এর মাধ্যমে তাদের কর চোকাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যা নিঃসন্দেহে তাদের ওপর একটা বড় ভার।'
চলতি বছর কোনও নোটিস জারি হয়নি বলে সিবিডিটি যে দাবি করেছে তাকেও কটাক্ষ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখেছেন, এবছর তো এখনো পুজোই হয়নি। ফলে নোটিস পাঠানোর প্রশ্নই ওঠে না। সিবিডিটির বিবৃতিই বলছে গত বছর নোটিস পাঠিয়েছিল তারা। তাহলে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে কেন?
দুর্গাপুজোর ওপর কর বসিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি ও উৎসবের ওপর আঘাত হানার চেষ্টা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, 'উৎসবের আমেজ অটুট রাখতে অবিলম্বে কর প্রত্যাহার করা উচিত সরকারের। আমার অনুরোধ, পুজো বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে এরকম কোনও জিজিয়া কর নেবেন না।'
মমতার এই পোস্টে হিন্দুত্বের প্রতিযোগিতা দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির উত্থানের পর কংগ্রেসের পথে হালকা হিন্দুত্বের পথে হাঁটতে চাইছে তৃণমূল। তাই পুজো কমিটিগুলিকে আয়কর নোটিসের মতো ইস্যুকে হাতিয়ার করেছে তারা। এই নিয়ে মঙ্গলবার ধরনায় বসে তৃণমূলের বঙ্গ জননী বাহিনী। এর পরই বিকেলে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে সিবিডিটি।
বিজেপির পালটা অভিযোগ, 'সমস্ত রকম আর্থিক বেনিয়মকে সমর্থন করেন মমতা। এই ঘটনাও তার ব্যতিক্রম নয়। গত কয়েক বছরে চিটফান্ডের থেকে মোটা টাকা পেয়েছে পুজো কমিটিগুলি। সেই টাকার হদিস পেতে শুধুমাত্র যে পুজো কমিটিগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাদেরই নোটিস পাঠিয়েছে আয়কর বিভাগ। এসেই গোঁসা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।'