পূর্ত দফতরের জমিতে আবাস যোজনার বাড়ি! ঘর ভাঙতেই ছাদ হারালেন পরিবার, বাড়ছে বিতর্ক
মাটির বাড়ি সরিয়ে পাকা দেওয়ালের উপর ছাদ হয়েছিল। বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় গৃহহীন হতে হল কল্পনা হেমব্রমকে।এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে সরকারি প্রকল্প রূপায়নের পদ্ধতি নিয়ে।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পূর্ত দফতরের জমিতে তৈরি আবাস যোজনার বাড়ি জেসিবি দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল। মাটির বাড়ি সরিয়ে পাকা দেওয়ালের উপর ছাদ হয়েছিল। বাড়ি ভেঙে দেওয়ায় গৃহহীন হতে হল কল্পনা হেমব্রমকে।এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে সরকারি প্রকল্প রূপায়নের পদ্ধতি নিয়ে।
পোলবার আমনান গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশ্বাড়া জোড়া অশ্বত্থ তলার কল্পনা হেমব্রম দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে চুঁচুড়া তারকেশ্বর ১৭ নম্বর রোডের পাশে পূর্ত দফতরের( PWD) জায়গায় বসবাস করছিলেন। আমনান গ্রাম পঞ্চায়েত উনিশ-কুড়ি অর্থ বর্ষে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকায় বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি তৈরী করে দেয় কল্পনা সহ আরও কিছু গৃহহীন পরিবারকে। কাঁচা বাড়িটা পাকা হয়েছিল। জল ঝড়ে আর সমস্যা ছিল না। হাই কোর্টের নির্দেশে সেই ঘর বুধবার ভেঙে দিল প্রশাসন।
আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন কল্পনা হেমব্রম ও তার পরিবার। কল্পনা ছাড়াও পূ্র্ত দফতরের রাস্তার জায়গায় বাংলা আবাস যোজনার ঘর হয়েছে আরও বেশ কয়েকটি। তাতেই প্রশ্ন উঠেছে রাস্তার জায়গায় কিভাবে পঞ্চায়েত এই সরকারি ঘর দিতে পারে। সরকারি টাকার অপচয় করার প্রশ্ন তুলেছে পোলবার বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির অর্পন চট্টোপাধ্যায় বলেন, সরকারি বাড়ি সরকারই ভাঙল। তার মানে নিয়ম মানা হয়নি। আবাস যোজনার বাড়ি পেতে গেলে একজন উপভোক্তার নিজের জমি থাকতে হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে তা দেখা হয়নি। অনেক মানুষ আছে দরিদ্র সরকার যখন তাদের ঘর দেয় তখন তার জমির কাগজ পত্র দেখে নেয়। কারা উপভোক্তা হবেন তার একটা নিয়ম আছে। একজন আদিবাসী মহিলার মাথা গোঁজার ঠাঁই চলে গেলো। এখানে নিরক্ষর ওই মহিলার কোনো ভুল নেই যারা তাকে ঘর দিয়েছিল তারা ভুল করেছেন। তাই অবিলম্বে কল্পনা হেমব্রমের পরিবারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
পঞ্চায়েতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, হাইকোর্টের নির্দেশে আবাস যোজনার ঘর ভাঙা হয়েছে। আমনান গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান নির্মল ঘড়া বলেন, এটা ঠিক যে নিজের জায়গা ছাড়া আবাস যোজনার ঘর দেওয়া হয়না।কিন্তু অনেক সময় গরীব মানুষের থাকার জায়গা নেই দেখে আবাস যোজনার বাড়ি করে দেওয়া হয়েছিল। যেখানে কল্পনাকে ঘর করে দেওয়া হয়েছিল তার পিছনে একজনের জমি রয়েছে। তার জমিতে যাতায়াতের অসুবিধা হওয়ায় হাইকোর্টে মামলা করেন। হাইকোর্ট নির্দেশ দেয় বাড়ি ভেঙে সরিয়ে দিতে। কল্পনা তার পরিবার নিয়ে অন্য জায়গায় থাকবেন। আমরা জেলা পরিষদে কথা বলছি কল্পনাকে ঘরের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহেবুব রহমান বলেন, বাংলা আবাস যোজনার বাড়ির জন্য নিজের নামে পরচা বা দলিল থাকতে হবে। পাট্টা পাওয়া জমিতেও হতে পারে। পোলবার কাশ্বারার ক্ষেত্রে পূর্ত দফতরের জায়গায় কেন হয়েছিল তা দেখতে হবে। তবে অনেক সময় দেখা যায় বহু গরীব মানুষ আছেন যাদের সত্যি ঘরের প্রয়োজন অথচ জায়গা নেই। তখন স্থানীয় অভিভাবক হিসাবে পঞ্চায়েত তাদের আবাস যোজনার ঘরের ব্যবস্থা করে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এগুলো করা হয়। তবে নিয়ম মেনে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন, Sodepur: চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে সোদপুরে অশান্তি
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)