পুলিসের চোখে ধুলো দিয়ে মমতার মঞ্চে দুই মহিলা, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন
বৃহস্পতিবার হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় তখন থিকথিকে ভিড়। সকলেরই নজর স্টেজের দিকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিটা কথা যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে ব্যস্ত জনতা। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। হঠাত্ দেড়টা নাগাদ গোটা বিষয়টির ছন্দপতন।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সভা চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চলে গেলেন অপরিচিত দুই মহিলা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফিলতি নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। এক জনকে আটক করেছে পুলিস।
কী হয়েছিল এ দিন?
বৃহস্পতিবার হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় তখন থিকথিকে ভিড়। সকলেরই নজর স্টেজের দিকে। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিটা কথা যেন মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে ব্যস্ত জনতা। মুখ্যমন্ত্রীও তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে কথা বলছেন। হঠাত্ দেড়টা নাগাদ গোটা বিষয়টির ছন্দপতন। রে রে করে অনেকেই তেড়ে গেলেন স্টেজের দিকে। নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটে গেলেন সে দিকে। তত ক্ষণে স্টেজে উঠে পড়েছেন এক মহিলা। অন্য মহিলাকে স্টেজে ওঠার ঠিক মুখে ধরে ফেলেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সুযোগ বুঝে মমতার পা জড়িয়ে ধরতে যান অপর জন। মুখ্যমন্ত্রী তখন তাঁকে বলার সুযোগ দেন। মনে করা হচ্ছে দাবিদাওয়া জানাতে গিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: দোলের স্টক এসে গেছে, মেসেজ পেয়েই হোটেলের গোপন কুঠুরিতে হানা, উদ্ধার কয়েক লক্ষ টাকার মদ
যদিও, এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ফাঁক। দেশের প্রথম সারির রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও। সে ক্ষেত্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় থাকে তাঁর।
একেবারে বাইরের দিকে থাকে জেলা পুলিস। সাধারণ ও ভিআইপিদের ঢোকার জন্য আলাদা গেট থাকে। গেট দিয়ে ঢোকার পর থাকে মেটাল ডিটেক্টর। ডি জোনে জেলা পুলিস থাকে না, সেখানে থাকে সিএম সিকিউরিটি।
এই সব পেরিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর স্টেজে ওঠে পড়ে দুই মহিলা। প্রশ্ন হচ্ছে কীভাবে সম্ভব?
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, এক নিরাপত্তারক্ষী মোবাইলে কথা বলছিলেন। তার চোখে ধুলো দিয়েই ডি জোনে ঢুকে পড়েন ওই দুই মহিলা। একজন স্টেজের বাঁদিক থেকে ওঠার চেষ্টা করেন, অপর জন ডাক দিক থেকে ওঠেন। পুরোটাই পরিকল্পনা করে করেন তাঁরা। এক জনকে ধরে ফেলার পর যখন সকলে তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন, তখন অপর জন বিপরীত দিক থেকে উঠবেন। সেই পরিকল্পনা মতোই এদিন কাজ করেছিলেন তাঁরা।
এই দুই মহিলার পরিচয় কী? কেন তারা মঞ্চে ওঠে?
জানা গিয়েছে, এই দুই মহিলা আদতে দুই বোন। একজনের নাম রাবেয়া খাতুন, অপরজনের নাম আমেরা খাতুন। ২০১৫ সালে তাঁদের বাবা মারা যান। তাঁদের এই ভাইকে স্কুলে ভর্তি করে দেয় সরকার। রাবেয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চাকরিও করেন। কিন্তু বাবার খুনের বিচার এখন পাননি তাঁরা। সেই দাবি জানাতেই সম্ভবত স্টেজে ওঠে পড়েন তারা।
কিন্তু যে কারণেই হোক না কেন, এই ঘটনা প্রশ্নের মুখে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা। কীভাবে তারা ঢুকল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।