টানা বৃষ্টিতে বানভাসী কোচবিহার-জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির বহু এলাকা, নামলো NDRF টিম

পশ্চিম সিকিমের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ  সম্পূর্ণভাবে বন্ধ 

Edited By: সিকান্দর আবু জ়াফর | Updated By: Jul 12, 2020, 09:52 PM IST
টানা বৃষ্টিতে বানভাসী কোচবিহার-জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ির বহু এলাকা, নামলো NDRF টিম
ছবি-নিজস্ব

নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রবল বৃষ্টিতে প্রায় বানভাসী উত্তরবঙ্গের বহু এলাকা। জলমগ্ন রাজার শহর কোচবিহার |  বিশেষ করে কোচবিহার পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে তল্লিতলা, পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়া,মিনিবাস স্ট্যান্ড এলাকা ও রাজবাড়ী প্যালেস সংলগ্ন এলাকা  জলমগ্ন।

কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে বন্যার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে কোচবিহারে |  জেলার প্রায় সমস্ত নদীতে জল বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে । তোর্সা, কালজানী, রায়ডাক, মানসাই-সহ জেলার প্রায় সব  নদীগুলির জল বাড়ায় নদী তীরবর্তী বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে | পাশাপাশি নদীগুলিতে যেভাবে জল বাড়ছে ,তাতে আতঙ্কিত মানুষজন।

আরও পড়ুন-ঘরে উইপোকার উপদ্রব? জেনে নিন ‘পেস্ট কন্ট্রোল’-এর অব্যর্থ ঘরোয়া উপায়!

সিকিম

পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে সিকিমের মঙ্গনের একাধিক এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে । তার জেরেই একটি বহু তলের একাংশ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে । তবে কোন হতাহতের খবর নেই । স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । এছাড়া বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে সিকিমের বহু এলাকা । বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে সিকিমের বিভিন্ন প্রান্তে । প্রবল বৃষ্টির জেরে পশ্চিম সিকিমের যকসম রোডের বেশ কিছু অংশ ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। এর ফলে পশ্চিম সিকিমের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ  সম্পূর্ণভাবে বন্ধ ।

শিলিগুড়ি

শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসিদেওয়া ব্লকের হেডমুড়ি সিঙ্গিঝড়া অঞ্চলের তারাবান্ধা এলাকার একমাত্র যাতায়াতকারী বুড়িবালাসন নদীর উপর ব্রিজটি প্রবল বৃষ্টির ফলে ভেঙে গিয়েছে। যার ফলে অসুবিধায় পড়েছেন ভেঙে যাওয়া ব্রিজের ওপারে থাকা তুরিভিটা মৌজার বহুখালি, বৈরাগিণী কামরাঙ্গাগুড়ি গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ।

একমাত্র যাতায়াতকারী রাস্তা হিসাবে এটি ব্যবহার করতেন তাঁরা। বহু বছর আগে এই ব্রিজ তৈরি করা হয়েছিল। গতবছর বর্ষার সময় ব্রিজে ফাটল দেখা দেয়। গ্রামবাসীরা জানান, ব্রিজ ভেঙে যাওয়ার ফলে গ্রামের অন্তঃসত্ত্বাদের কীভাবে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে সেই চিন্তায় রয়েছেন তাঁরা।  এলাকায় বহু চা বাগান থাকায় কাঁচা চা পাতা বোঝাই গাড়ি যাতায়াত করে ব্রিজ ওপর দিয়ে। ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে বন্ধ হয়ে গেল যাতায়াত । গ্রামের মানুষেরা জানান অতি শীঘ্রই এই ব্রিজ যদি মেরামত না করা হয় তাহলে এই বর্ষার সময় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়বেন গ্রামবাসীরা।

আরও পড়ুন-সপ্তাহে দু’দিন সম্পূর্ণ লকডাউন! দিনে ৫০ হাজার করোনা পরীক্ষার নির্দেশ এই রাজ্যের

জলপাইগুড়ি

টানা বৃষ্টিতে জলপাইগুড়ি জেলায় সব নদীতেই জল বেড়েছে। তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় ( দোমহনী থেকে বাংলাদেশ) লাল এবং সংরক্ষিত এলাকায় হলুদ সঙ্কেত জারি রয়েছে। 

রবিবার জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বোয়ালমারী নন্দনপুর, পাহাড়পুর, পাতকাটা সহ অন্যান্য এলাকাতেও তিস্তার  জল ঢুকেছে। পাশাপাশি করলা নদীর জল ফুলে ফেঁপে জলপাইগুড়ি পৌর এলাকার পরেশ মিত্র কলোনী, নিচ মাঠ প্রভৃতি এলাকার বানভাসি হয়েছে অন্তত দুশোর বেশি পরিবার। এদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে সিভিল ডিফেন্স টিমকে। 

তিস্তা পাড়ে খড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েত এর অন্তর্গত বোয়ালমারী নন্দনপুর, বাহির চড় প্রভৃতি এলাকার জল বন্দি মানুষদের উদ্ধার করতে রবিবার বিকেলে এন ডি আর এফ কর্মীদের নামানো হয়েছে।

বিকেলে তিস্তার জল বেশি থাকায় করলা নদীর জল তিস্তায় পড়ছে না। ফলে করলা নদীর জল উপচে দিনবাজার, বয়েলখানা বাজার প্রভৃতি এলাকার রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। 

জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বিডিও তাপসী সাহা জানান, শহরের পরেশ মিত্র কলোনিতে সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা জলবন্দি মানুষদের উদ্ধার করতে নেমেছে। বানভাসিদের বোটে করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে। ত্রাণের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। 

জলপাইগুড়ি জেলাশাসক অভিষেক কুমার তেওয়ারি জানান, জলপাইগুড়ি জেলার ১৩ টি গ্রামপঞ্চায়েত এবং জলপাইগুড়ি পৌরসভার ৩ টি ওয়ার্ড বন্যা কবলিত হয়েছে। তিস্তা নদীপারের কিছু মানুষকে উদ্ধার করতে NDRF নামানো হয়েছে। পাশাপাশি সিভিল ডিফেন্স টিম নেমেছে। বেশ কিছু পরিবারকে উদ্ধার করে নিয়েএসে তাদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হয়েছে। জলপাইগুড়িতে নিকাশী নালার সমস্যার কারনে কিছু এলাকায় জল জমে রয়েছে। করলা নদীর জল কিছুটা কমলে আমরা পাম্পের সাহায্যে জল বের করার চেষ্টা চালাবো।

.