Baruipur Ex-Navy Officer Murder: শ্বাসরোধ করেই খুন, প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহ করাত দিয়ে কেটে ৬ টুকরো করে স্ত্রী-ছেলে
১৪ নভেম্বর কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর বেড়িয়ে আর ফেরেননি। তাঁর নেশা করার অভ্যাস ছিল। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় তিনি বেরতেন। কিন্তু ১৪ তারিখ বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। এরপরই পরিবারের সদস্যরা বারুইপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন
তথাগত চক্রবর্তী ও বিক্রম দাস: বারুইপুরে প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর খুনের পেছনে তার ছেলে ও স্ত্রী? এমনটাই মনে করছিলেন তদন্তকারীরা। শেষপর্যন্ত সেটাই সত্যি হল। নিহত উজ্জ্বল চক্রর্তীর স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিস। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছিল শ্বাসরোধ করেই খুন করা হয় উজ্জ্বলকে। পরে করাত দিয়ে দেহ ৬ টুকরো করা হয় এবং তা বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দেওয়া হয় সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে গিয়ে। তদন্তে নেমে পুলিস উজ্জ্বলের বাড়ির সামনের পুকুর থেকে তার দেহের একটি অংশ উদ্ধার করে। বাকী দেহাংশ কোথাও তা এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিস। সবেমিলিয়ে একেবারে দিল্লি শ্রদ্ধা ওয়াকারকাণ্ডের ছায়া।
আরও পড়ুন-নবনিযুক্ত রাজ্যপালকে শুভেচ্ছা মমতার, কথা শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে!
কীভাবে খুন? পুলিস সূত্রে খবর, উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলেকে জেরা করে জানা গিয়েছে, মদ খেয়ে স্ত্রী ও ছেলের উপরে অত্যাচার করতেন উজ্জ্বল। তাতে পুরনো ক্ষোভ ছিল উজ্জ্বলের উপরে। গত সোমবার পরীক্ষার ফি দেওয়াকে কেন্দ্র করে বচসা বাধে বাবা-ছেলের মধ্যে। পরীক্ষার ফি বাবাদ ৩ হাজার চাকা চায় ছেলে রাজু চক্রবর্তী। সেইসময় ছেলেকে চড় মারেন মত্ত উজ্জ্বল। পাল্টা বাবাকে ধাক্কা দেন রাজু। এতেই মাটিতে পড়ে যান উজ্জ্বল। এরপরই তাকে গলা টিপে হত্যা করা হয়। উজ্জ্বলের মৃত্যুর পর হতভম্ব হয়ে পড়ে রাজু ও তার মা। এরপরই উজ্জ্বলের দেহ কেটে টুকরো করে ফেলার পরিকল্পনা করে তারা। বাড়িতেই ছিল করাত। তা দিয়েই উজ্জ্বলের দেহ ৬ টুকরো করে ফেলা হয়। পর তা সাইকেলে চাপিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ফেলে দিয়ে আসা হয়। পরদিন ১৫ নভেম্বর উজ্জ্বলের নামে মিসিং ডাইরি করেন তাঁর স্ত্রী। পুলিস তদন্তে নেমে ওই দুজনকে জেরা করলেও কিছু কবুল করতে চায়নি তারা। পরে জেরায় ভেঙে পড়ে উজ্জ্বলের স্ত্রী ও ছেলে।
এনিয়ে শনিবার বারুইপুরের পুলিস সুপার মিস পুস্পা বলেন, প্লাস্টিকে ভরা বডির অংশ পুকুর থেকে তোলা হয়। তা মর্গেও পাঠানো হয়। পর ওই দেহাংশ চিহ্নিত হয়। জানা গেলে এনিয়ে একটি মিসিং ডাইরি হয়েছিল। জানা গেল উনি মদ্যপ ছিলেন। পরিবারের উপরে অত্যাচার করতেন। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে পুরো ঘটনা জানা যায়। ছেলে বাবাকে মারধরে করে। রাগে বাবাকে শ্বাসরোধও করে। শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য দেহাংশ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে বারুইপুর-মল্লিকপুর রোডের ডিহি এলাকার একটি পুকুর থেকে উদ্ধার হয় উজ্জ্বল চক্রবর্তীর অর্ধেক দেহ। ঘটনার খবর পেয়ে বারুইপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দেহাবশেষ উদ্ধার করে। কিন্তু ৫৪ বছর বয়সী ওই প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দুটি হাত ও কোমরের নীচ থেকে শরীরের বাকি অংশের কোনও খোঁজ মেলেনি তখন। মৃতদেহের মুখও প্লাস্টিক দিয়ে আটকানো ছিল।
গত ১৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন উজ্জ্বল চক্রবর্তী। আগে নৌসেনা বাহিনীতে কর্মরত থাকলেও বর্তমানে তিনি একটি সংস্থায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। ১৪ নভেম্বর কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পর বেড়িয়ে আর ফেরেননি। তাঁর নেশা করার অভ্যাস ছিল। প্রতিদিনই সন্ধ্যায় তিনি বেরতেন। কিন্তু ১৪ তারিখ বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। এরপরই পরিবারের সদস্যরা বারুইপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হয় দেহাবশেষ।