Purulia: বন্ধ নিয়োগ, তালা বন্ধ স্কুলে চুরি সব আসবাবপত্র
১৯৮৪ সালে পুরুলিয়ার মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রামে গড়ে উঠেছিল গোবিন্দপুর পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবার, এলাকার মানুষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া সকলের দাবি বিদ্যালয়ে পূনরায় পঠনপাঠন চালু করা হোক। এই বিদ্যালয় বন্ধের জন্য বর্তমান সরকার দায়ী বলে অভিযোগ পুরুলিয়া জেলা সিপিআইএম নেতৃত্বের।
মনোরঞ্জন মিশ্র: আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে বাম আমলে শুরু হয়েছিল গোবিন্দপুর পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। তারপরে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে পড়ায় শিক্ষক শুন্য অবস্থায় বিগত দুই বছর ধরে তালা ঝুলছে আদিবাসী এলাকার সেই বিদ্যালয়ে। খোদ মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর বিধানসভা এলাকায় গড়ে ওঠা সেই বিদ্যালয় আজ আগাছায় পরিণত হয়েছে। বিদ্যালয়কে বাঁচাতে এলাকার মানুষ মন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ। নীরব মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুও। বর্তমান সরকার শিক্ষা চায় না, তাই একের পর এক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে পড়ছে, এই অভিযোগ জানিয়েছে জেলা সিপিআইএম নেতৃত্ব।
১৯৮৪ সালে পুরুলিয়ার মানবাজার ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত গোবিন্দপুর গ্রামে এলাকার মানুষদের দান করা প্রায় ৩ একর জমির উপর গড়ে উঠেছিল গোবিন্দপুর পন্ডিত রঘুনাথ মুর্মু জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়। ৬ জন শিক্ষক, ২ জন শিক্ষাকর্মী এবং ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে চালু হয় এই বিদ্যালয়। ধীরে ধীরে তৈরি হয় বিদ্যালয় ভবন, রান্নাঘর থেকে শৌচালয়। কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় ২০১১ সাল থেকে ।
২০১১ সালে একজন এবং ২০১২ সালে প্রধান শিক্ষক সহ চারজন শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। বাকি একজন শিক্ষক এবং দুই জন শিক্ষাকর্মী নিয়ে বিদ্যালয় চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও বিদ্যালয়কে সচল রাখার জন্য ২০১৪ সালে ২ জন অতিথি শিক্ষক দেওয়া হলেও ২০১৬ সালে তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: Khardaha: কাজে যাচ্ছেন তবু বেতন বন্ধ নবান্নের অর্থ দফতরের কর্মীর...
বিদ্যালয়ে যে একজন স্থায়ী শিক্ষক ছিলেন তিনিও ২০১৭ সালে অবসর গ্রহণ করেন। শিক্ষক না থাকায় পঠনপাঠন প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কমে ৪০ জনে এসে দাঁড়ায়। শিক্ষক নিয়োগ না হওয়ায় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে এই ৪০ জন ছাত্রছাত্রীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (TC) দিয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি করা হয়।
বিদ্যালয়ে যে দুজন স্থায়ী শিক্ষাকর্মী ছিলেন তারাও ২০১৯ এবং ২০২১ সালের অবসর গ্রহণ করেন। সেই থেকে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে এই বিদ্যালয়টি। আগাছায় পরিণত হয়ে বিদ্যালয়। চুরি হয়ে গিয়েছে বিদ্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, বেঞ্চ, দরজা, সৌর লাইট, এমনকি জলের ট্যাঙ্কও।
আরও পড়ুন: Dakshin Dinajpur: মাতৃভাষায় শিক্ষাদান, বদলে দিয়েছে আদিবাসী প্রধান গ্রামগুলির ছবি
বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবার, এলাকার মানুষ থেকে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন পড়ুয়া সকলের দাবি বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করে পূনরায় পঠনপাঠন চালু করা হোক। এই বিষয়ে মানবাজার বিধানসভার বিধায়িকা তথা পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী সন্ধ্যারানী টুডুর কাছে বার বার আবেদন জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলেই অভিযোগ।
এই বিদ্যালয় বন্ধের জন্য বর্তমান সরকার দায়ী বলে অভিযোগ পুরুলিয়া জেলা সিপিআইএম নেতৃত্বের।
তাহলে প্রশ্ন উঠছে, আদিবাসী এলাকায় একসময় স্বপ্নের বিদ্যালয়ে এভাবেই তালা ঝুলবে? কবে নিয়োগ হবে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী ?