বিদায় পন্টার, ভাল থেকো...

আন্তজার্তিক ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট শুরু করেছিলেন নিজের দেশে পারথতে। কাল শেষ করলেন একই মাঠে। কিন্তু পটভূমি এক হয়েও দুই দৃশ্যপটের মধ্যে ফারাক রয়ে গেল যেন কয়েকশো যোজন। আজ থেকে প্রায় ১৭ বছর আগে সেই ছটফটে, দুরন্ত রিকি পারথের পিচে দীর্ঘ একটা ইনিংস খেলেছিলেন। মাত্র ৪ রানের জন্য জীবনের প্রথম টেস্ট শতরানটি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল তাঁর।

Updated By: Dec 4, 2012, 04:09 PM IST

আন্তজার্তিক ক্রিকেটের প্রথম টেস্ট শুরু করেছিলেন নিজের দেশে পারথতে। কাল শেষ করলেন একই মাঠে। কিন্তু পটভূমি এক হয়েও দুই দৃশ্যপটের মধ্যে ফারাক রয়ে গেল যেন কয়েকশো যোজন। আজ থেকে প্রায় ১৭ বছর আগে সেই ছটফটে, দুরন্ত রিকি পারথের পিচে দীর্ঘ একটা ইনিংস খেলেছিলেন। মাত্র ৪ রানের জন্য জীবনের প্রথম টেস্ট শতরানটি হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু একই মাঠে অভি়জ্ঞ, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭১টি শতরানের মালিক রিকি পন্টিং আশানুরুপ ব্যাটিং ঝলক দেখাতে পারলেন না। অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিন আফ্রিকার তৃতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে তাঁর সংগ্রহিত রান ৪ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ৮, এমনই বর্থ্যতার মধ্যে দিয়ে ক্রিকেটের আকাশে এক উজ্জ্বল তারার কেরিয়ারে দাঁড়ি পড়ল। পরিসম্পাতি ঘটল এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ের।
দু হাজার দুই সাল থেকে একদিনের ক্রিকেটে ব্যাগি গ্রীণ টুপির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন পন্টার। ২০০২-০৩ অ্যাসেজে টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে তাঁর। তাঁর দীর্ঘ ক্রিকেটীয় জীবনে চলার পথ কখনই সমান্তরাল ছিল না। দু হাজার চার সালে স্টিভ ওয় পাকাপাকি ভাবে অসি অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর টানা ৪ বছর সবরকমের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়াকে নেতৃত্ব দেন পন্টিং। স্টিভ ওয় অসি ক্রিকেটের যে অপ্রতিরোধ্য জয়যাত্রার সূচনা করেছিলেন পন্টারের সময় তা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। তর্কাতীত ভাবে অস্ট্রেলিয় ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা দলের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সাক্ষী থেকেছেন পরপর তিনটে বিশ্বকাপ জয়ের। তার মধ্যে ২০০৩ আর ২০০৭ সালে তাঁর হাতেই উঠেছিল বিশ্বসেরার কাপ। বস্তুত ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ সাল, যে সময় পন্টিং ভীষণ ভাবে অসি ক্রিকেটের অংশ সে সময় ক্রিকেট আকাশে অসি সূর্য অস্ত যেত না।

কিন্তু উত্থানের সময় প্রচারের চকমকি যেমন প্রাক্তন অসি ক্যাপ্টেনকে ঘিরে রেখেছিল, পতনের সময়ও মিডিয়ার বাণ তাঁকে বড় বেশি বিদ্ধ করে গেছে। একটা টাইমলাইন করলে দেখা যাবে তিনি লড়াই করত করতে কখনও হিমালয় জয় করেছেন আবার নিজের সব রাজত্ব খুইয়ে ব্যর্থতার পথে একলাই হেঁটেছেন।
তবে সাফল্য আর ব্যর্থতার নিরিখে রিকি পন্টিংয়ের মত ক্রিকেটারকে বোধহয় মাপা যায়না। তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের প্রতি পরীক্ষার ফাইনাল মার্কশিটের দিকে চোখ পড়লে মাথায় শুধু একটা শব্দই আসে, `আউটস্ট্যান্ডিং`। যতদিন ক্রিকেট নামের খেলাটা এ ধরাধামে টিকে থাকবে রিকি পন্টিং নামটা এ খেলার সর্বকালের সেরার তালিকায় রয়ে যাবে।

.