Suryakumar Yadav: বিশ্বযুদ্ধের জন্য নিয়েছেন মুম্বইতে বিশেষ প্রস্তুতি, সূর্যর সাফল্যের নেপথ্যে এই প্রাক্তন ক্রিকেটার
বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে সূর্যকুমার মুম্বইতেই সেরেছেন ড্রেস রিহার্সল। পার্সি জিমখানায় সবুজ ঘাসে ভরা বাউন্সি পিচে করেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন। সূর্যর সাফল্যের রহস্যভেদ করলেন মুম্বইয়ের বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক মকরন্দ ওয়েঙ্গাংকার।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এককথায় অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলছেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। অবলীলায় নিচ্ছেন বিচিত্র সব শট। যা দেখে থ হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব। ৩২ বছরের ক্রিকেট প্রতিভাবে কুর্নিশ জানাচ্ছেন কিংবদন্তিরাও। অথচ সূর্যর অনায়স খেলা দেখে মনে হচ্ছে, ব্যাটিং কতই না সহজ! এবি ডিভিলিয়ার্স পরবর্তী ক্রিকেটে তিনিই এখন নতুন 'মিস্টার ৩৬০' ডিগ্রি। এই মুহূর্তে চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে আগুনে ফর্মে আছেন সূর্য। লাইমলাইট শুধু তাঁর দিকেই। কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকরও (Sunil Gavaskar) মোহিত সূর্য রোশনাইয়ে। সূর্যর একের পর এক মারকাটারি ইনিংস দেখে ব্যাটিং মায়েস্ত্রো থ! তিনি বলছেন, 'বোলাররা যে অ্যাঙ্গেলে ওকে লক্ষ্য করে বল করছে, ও সেই অ্যাঙ্গেলেরই অ্যাডভান্টেজ নেয় সূর্য। ওর ক্রিকেট বইতে সব শট আছে'। এহেন সূর্য রোষে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছেন বোলাররা।
চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে সূর্য রয়েছেন আগুনে ফর্মে। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান শিকারিদের তালিকায় তিনে সূর্য। সেমিতে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে এমন বিধ্বংসী ফর্ম বজায় রাখতে পারলে, বিরাট কোহলির ঠিক পিছনেই দ্বিতীয় স্থানে থাকবেন সূর্য। কারণ ডাচ ব্যাটার ম্যাক্সওয়েল প্যাটট্রিক ৮ ম্যাচে ২৪২ রান করলেও, তাঁর দল ইতিমধ্যেই ছিটকে গিয়েছে। তিনে থাকা সূর্যের রান ৫ ম্যাচে ২২৫। সর্বোচ্চ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৪০ বলে ৬৮। গড় ৭৫.০০। স্ট্রাইক রেট ১৯৩.৯৬। তবে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে সূর্য মুম্বইতে নিয়েছেন বিশেষ প্রস্তুতি। মুম্বইয়ের বিশিষ্ট ক্রীড়া সাংবাদিক জানিয়েছেন মকরন্দ ওয়েঙ্গাংকার জানিয়েছে যে, সূর্য নিজেকে তৈরি করার জন্য ঠিক কীরকম পিচে খেলেছেন, বিশ্বযুদ্ধের মহড়ার জন্য সেরেছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনুশীলন।
ট্যুইটারে মকরন্দ লিখেছেন, 'মুম্বইয়ের ক্রীড়া সাংবাদিকরা দেখেছেন যে, সূর্য কীভাবে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে। ও পার্সি জিমখানার সচিব খোদাদদকে অনুরোধ করেছিলেন সবুজ ঘাসে ভরা বাউন্সি পিচের জন্য। সাইড আর্ম স্পেশ্যালিস্ট ও জিমখানার কোচ হিসাবে ওর সঙ্গে কাজ করেছে মুম্বইয়ের প্রাক্তন ওপেনার বিনায়ক মানে। সূর্যর প্রস্তুতির জন্য বিনায়ক চার রকমের বোলারকে ব্যবহার করতেন। চার ঘণ্টার প্র্যাকটিসে ম্যাচ সিচুয়েশন তৈরি করে স্ট্রোক পারফেক্ট করার দিকেই জোর দিয়েছেন ওঁরা। আমি প্যাভিলিয়নের চার তলায় দাঁড়িয়ে দেখতাম। এই মেথডই ওরা নিয়েছিল। নিখুঁতভাবে পরিকল্পনা অসাধারণ ভাবে কার্যকর করা হয়েছে। এটাই সূর্যকুমারের সাফল্যের রহস্য। ও অ্যাক্সেলটর থেকে পা সরায় না। এটাই সূর্য। বিনু মানেকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই।'
এহেন সূর্যর কেরিয়ার যদি ফিরে দেখা যায়, তাহলে বোঝা যাবে, এই মুম্বইকরের কাছে ঘরোয়া ক্রিকেটই ছিল ধ্যানজ্ঞান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেক প্রস্তুত করার জন্য, প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট এ ক্রিকেটেই সেরেছেন ড্রেস রিহার্সল। ৭৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সূর্যর ব্যাট থেকে এসেছে ৫৫০ রান। লিস্ট এ-তে তিনি করেছেন ১১৫ ম্যাচে ৪৩০ রান। মকরন্দ ওয়েঙ্গাংকার শুধুই বিশিষ্ট সাংবাদিক নন, জগমোহন ডালমিয়া ভারতীয় ক্রিকেটের মসনদে থাকাকালীন, ছোট ছোট শহর থেকে ক্রিকেট প্রতিভা খুঁজে আনার জন্য চালু করেছিলেন ট্যালেন্ট রিসার্চ ডেভলপমেন্ট উইং। যেখান থেকে উঠে আসেন এমএস ধোনি ও সুরেশ রায়নার মতো ক্রিকেটররা। এই উইংয়ের দায়িত্বে ছিলেন মকরন্দ। প্রাক্তন ক্রিকেটার ও কোচদের সঙ্গে কথা বলেই প্রতিভা তুলে আনতেন তিনি।