ISL 2021-22: ক্রোয়েশিয়ার দুঃস্বপ্ন পর্ব নিয়ে আক্ষেপ করতে রাজি নন Sandesh Jhingan
ফের মাঠে ফেরার অপেক্ষায় সন্দেশ জিঙ্ঘান।
নিজস্ব প্রতিবেদন: ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব প্রথম ডিভিশনের ক্লাব এইচএনকে সিবেনিকে খেলতে গিয়েছিলেন অনেক আশা নিয়ে। কিন্তু সন্দেশ জিঙ্ঘানের কেরিয়ারে চোট বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে মাঠেই নামতে পারেননি তিনি। হঠাৎ চোট পেয়ে যাওয়ায় তাঁর খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়। শুধু চোটই নয়, যে কোচের পছন্দে তিনি ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব সিবেনিকে গিয়েছিলেন, সেই কোচও হঠাৎ দায়িত্ব ছেড়ে চলে যান। ফলে ইউরোপিয়ান ফুটবলে অভিজ্ঞতা অর্জনের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে যায় ভারতীয় তারকা ডিফেন্ডারের। এ দিকে চলতি আইএসএল-এ এটিকে মোহনবাগানে যোগ দিলেও, করোনায় আক্রান্ত হন। ফলে এখনও পর্যন্ত মাঠে নামার সুযোগ পাননি সন্দেশ।
ফুটবল জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে অবশ্য বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই এই পঞ্জাব তনয়ের। ভারতীয় ফুটবল মহলে অনেকে তাঁর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করলেও সন্দেশ বলেন, "ওখানে যা যা হয়েছে, সে জন্য আমার কোনও আক্ষেপ নেই। কারণ, আমি সবকিছুই দিয়েছিলাম। কিন্তু যেটা হওয়ার নয়, সেটা হয় না। সে যতই পরিশ্রম করো বা যত ভাল ভাবেই পরিকল্পনা করো।"
গত অগাস্ট মাসে মলদ্বীপে এএফসি কাপে খেলতে যাওয়ার আগেই সন্দেশ ক্লাবকে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব ফুটবলে খেলতে যাচ্ছেন, তাই এই মরশুমে এটিকে মোহনবাগানের হয়ে খেলতে পারবেন না। তাতে ক্লাব আপত্তি করেনি। তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: Surajit Sengupta: সঙ্কটজনক শারীরিক অবস্থা, এখনও ভেন্টিলেশনে প্রাক্তন ফুটবলার
কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার ক্লাব এইচএনকে সিবেনিকে তাঁর সময় খুব একটা ভাল কাটেনি। অনুশীলনে দ্বিতীয় দিনই চোট পান তিনি। গত তিন মাসে আরও তিনবার তাঁর পায়ের পেশীতে চোট লাগে। তাই ওই ক্লাবের হয়ে মাঠে নামা হয়নি তাঁর। এর মধ্যেই কলকাতার ক্লাব তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাই দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন সন্দেশ।
ক্রোয়েশিয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে সন্দেশ ফের যোগ করেন, "জীবনে সব কিছুই এক একটা অভিজ্ঞতা। ওখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই নিজের কমফর্ট জোন থেকে বেরোবার জন্য। তাই কোন দিকে যাচ্ছি, তা জেনেশুনেই ওখানে গিয়েছিলাম। ক্রোয়েশিয়ান খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কী কী শেখা যেতে পারে এবং দলকে কী ভাবে সাহায্য করতে পারি, সেই নিয়ে কোচের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনই অপ্রত্যাশিত ভাবে চোট পেয়ে যাই।"
১৩ মাস মাঠের বাইরে থাকার পরে গত মরশুমের আগে এটিকে মোহনবাগানের সঙ্গে পাঁচ বছরের চুক্তিতে সই করেন সন্দেশ। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ২২টি ম্যাচ খেলেন। সারা মরশুমে ৫২টি ট্যাকল, ২৬টি ইন্টারসেপশন, ১১৯টি ক্লিয়ারেন্স ও ৪০টি ব্লকের হিসেব জমা হয় তাঁর পারফরম্যান্সের খতিয়ানে। গত মরশুমে মাত্র দু’বার হলুদ কার্ড দেখেন। কোনও লাল কার্ড ছিল না। এতটাই পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলেন তিনি। দলের নেতৃত্বের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
ভারতে ফেরা নিয়ে সন্দেশ ফের বলেন, "এখানে ফিরে আসতে পেরে আমি খুশি। সিবেনিকে যখন ম্যানেজমেন্ট বদলে গেল এবং কোচও দায়িত্ব ছেড়ে চলে গেল, তখন পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিই, এ বার চোটটা সারানোর জন্য আমার ফিরে যাওয়া উচিত। তাড়াতাড়ি মাঠে নামতে চাইছিলাম, কারণ সামনেই ভারতীয় দলের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। চোটের পরে এটিকে মোহনবাগান আমাকে খুবই সাহায্য করেছে।"
আপাতত সবুজ-মেরুন সমর্থকেরা তাঁদের প্রিয় ডিফেন্ডারকে মাঠে দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন। বিশেষত যেখানে দলের রক্ষণের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। গত দশটি ম্যাচে ১৮টি গোল খেয়েছে জুয়ান ফেরান্দোর দল। ভারতীয় দলের নিয়মিত ডিফেন্ডারকে কবে আবার সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে চাপিয়ে মাঠে নামেন সেটাই দেখার।