নীল জার্সিতে প্রথম নেতা হয়ে কেদারকে নিয়ে হার্দিক শুভকামনায় বিরাট জয় কোহলির
স্বরূপ দত্ত
নীল জার্সিতে প্রথম নেতা হয়ে কেদারকে নিয়ে হার্দিক শুভকামনায় বিরাট জয় কোহলির। হ্যাঁ, আজ সবই জিতলেন বিরাট। টস জিতলেন। সেঞ্চুরি করলেন। ম্যাচ জিতলেন। প্রথম একদিনের ম্যাচে বিরাটের ভারত জিতল তিন উইকেটে। প্রথমে ব্যাট করে ইংল্যান্ড করেছিল ৭ উইকেটে ৩৫০ রান। পরে ব্যাট করে প্রায় ২ ওভার বাকি থাকতেই তিন উইকেটে ম্যাচ জিতে গেল ভারত।
ঠিক কী কী হল আজকের ম্যাচে? দেখে নিন ১০ পয়েন্টে --
১) সীমিত ওভারের ম্যাচে আজই অভিষেক হল 'ক্যাপ্টেন' বিরাট কোহলির। আর নীল জার্সিতে ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি করে গেলেন বিরাট কোহলি। খেললেন ১২২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। রান তাড়া করতে নেমে ইতিমধ্যে ১৭টা সেঞ্চুরি হয়ে গেল বিরাটের। না, সচিন তেন্ডুলকর ছাড়া এই গ্রহে রান তাড়া করতে নেমে ১০টা সেঞ্চুরিও করতে পারেননি কেউ কোনওদিন। বিরাটের সবাইকে ছাপিয়ে যেতে লাগবে আর একটা সেঞ্চুরি।
২) কেদার যাদব আজ যে ব্যাটিংটা করলেন, বোঝা যাচ্ছিল না, কে বিরাট কোহলি? তিনি নাকি বিরাট? উল্টোদিকে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান সেরা ফর্মে ব্যাট করছেন। সেঞ্চুরি করছেন। কিন্তু ক্রিজে একই সময়ে আরও বেশি দাপুটে ইনিংস খেলছেন অন্য কেউ! ভাবনাটাও কষ্টকর। কেদার যাদব সেটাই করে গেলেন অবলীলায়। খেললেন মাত্র ৭৬ বলে ১২০ রানের ইনিংস। বিরাট ১০৫ বলে ১২২ রান করেছেন। কেদারের চোট না লাগলে, তাঁর রানটা নিশ্চয়ই বাড়তো আরও।
৩) ধোনি দীর্ঘদিন ধরে দলের নেতা ছিলেন। আজ তাঁর মাথার থেকেও চাপ বেশি বিরাটের মাথাতে। ক্যাপ্টেন বিরাট চেয়েছিলেন, এমন কঠিন দিনে যেখানে ৩৫০ রান তাড়া করতে হচ্ছে, সেখানে নিশ্চয়ই বড় রান আসবে তাঁর ক্যাপ্টেনের ব্যাট থেকে। কিন্তু ধোনি মাত্র ৬ রান করেই আউট হয়ে গেলেন।
৪) মাঝে ৬০টি একদিনের ম্যাচ খেলে ফেলেছে ভারত। বাড়িতে বসেছিলেন যুবরাজ সিং। আজ এতদিন পর একদিনের ম্যাচে খেলতে নেমে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারলেন না। ১২ বলে ১৫ রান করেই আউট হয়ে গেলেন।
৫) একদিনের ম্যাচের কেরিয়ারে সবথেকে জঘন্য বোলিংটা করলেন অশ্বিন। ৮ ওভার বল করে ৬৩ রান দিলেন। পেলেন না কোনও উইকেট। না, একদিনের ম্যাচে অশ্বিনের এর থেকে কোনও খারাপ পারফরম্যান্স নেই। যেখানে তিনি অন্তত পাঁচ ওভার বল করেছেন।
৬) যশপ্রীত বুমরাহ দুটো উইকেট পেয়েছেন। কিন্তু ১০ ওভারে দিয়েছেন ৭৯ রান। না, বুমরাহকে এত মার খেতে আগে কখনও দেখা যায়নি। আজ তাঁকেই ইংরেজ বোলাররা মারলেন চার-চারটে ছক্কা!
৭) হার্দিক পাণ্ডিয়া অবশ্য ব্যাটে বলে ভালই পারফর্ম করলেন। বল হাতে নিলেন দুই উইকেট। ব্যাটেও করলেন দলের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান। দিন দিন ভালো অলরাউন্ডার হয়ে উঠছেন হার্দিক। আজও করে গেলেন অপরাজিত ৪০ রান।
৮) ভারতের বিরুদ্ধে আজই সবথেকে বেশি রান তুলল ইংল্যান্ড। না, একদিনের ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে কখনও ৩৫০ রান করতে পারেনি ইংরেজরা। বিরাটের প্রথম ক্যাপ্টেন্সির দিনে সেই কাজটাই করে ফেললেন ইংরেজরা।
৯) শেষ ৮ ওভারে ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা এদিন তুললেন ১০৫ রান! ভাবতে পারেন? তাহলেই বুঝুন, স্লগ ওভারে উমেশ যাদব, বুমরাহদের ঠিক কতটা উন্নতি করতে হবে এখনও।
১০) সব শেষে বলার অনেকরকম জায়গা রয়েছে, যাতে ভারতকে অনেকটাই উন্নতি করতে হবে। কিন্তু বিরাটের দল প্রমাণ করল, সাড়ে তিনশো রানেও মোটেই ঘাবড়ে দেওয়া যাবে না এই ভারতীয় দলকে। পুনের মাঠে সেই শুভ শুরুর ঈঙ্গিতটাই রেখে গেলেন বিরাট, কেদার, হার্দিকরা।