বছর শেষে হারের দেশেই থাকল ভারত

বছরের শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে শেষটাও হল হার দিয়ে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজটা ভারত করল হার দিয়ে। চেন্নাইতে ভারত হারল ৬ উইকেটে। ম্যাচের শুরুতে মাত্র ২৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভারতের যে পতন শুরু হয়েছিল, ধোনির অবিশ্বাস্য শতরানও সেই পতনরক্ষা করতে পারল না।

Updated By: Dec 30, 2012, 06:56 PM IST

ভারত-- ২২৭/৬, পাকিস্তান: ২২৮/৪ (৪৮.১ ওভার)
বছরের শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে। শেষটাও হল তাই। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজটা হার দিয়েই শুরু করল ভারত। চেন্নাইতে পাকিস্তানের কাছে টিম ইন্ডিয়া হারল ৬ উইকেটে। ম্যাচের শুরুতেই হারের অশনি সংকেত দেখে ফেলেছিল ভারত। মাত্র ২৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দল যখন কার্যত ধুঁকছে, তখন বহুদিন পর হাল ধরেন ধোনি। কিন্তু ক্যাপ্টেন কুলের অবিশ্বাস্য শতরানও শেষরক্ষা করতে পারল না। ট্র্যাজিক হিরো হয়েই মাঠ ছাড়তে হল মাহিকে। সচিন তেন্ডুলকরের ওয়ানডে অবসরের পর আজকেই ভারতের প্রথম ম্যাচ ছিল।
 
ম্যাচ জিততে পাকিস্তানকে করতে হত ২২৮ রান। আজকালকার এই ধুন্ধুমার ক্রিকেটের যুগে যে স্কোরটা নেহাতই তুচ্ছ। তাই পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা সহজেই এই স্কোরটা টপকে গেলেন। আজকে পাকিস্তানের জয়ের কারিগর হয়ে উঠলেন ২৩ বছরের নাসির জামসেদ। চাপের মুখে দুরন্ত শতরান করে দলকে জিতিয়ে আনলেন তিনি। সঙ্গে পেলেন পোড়খাওয়া যোদ্ধা ইউনিস খানকে। ভুবনেশ্বর কুমার, অশোক দিন্দারা প্রাণপণ চেষ্টা করেও জয়ের সীমান্ত ছুঁতে পারলেন না। হাফিজকে শূন্য রানে আউট করে ভুবনেশ্বর কুমার ম্যাচ জয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু নাসির জামসেদ বুঝিয়ে দিলেন স্বপ্ন দেখতে হলে আগে শান্তির ঘুম দরকার। কিন্তু সাম্প্রতিক হারের সিলসিলার মাঝে ভারতীয় বোলারদের অভিধান থেকে সুখনিদ্রা শব্দটা এখন উধাও। বোলিংয়ের অভিভাবকহীনতা বড় বেশি করে চোখে পড়ল।            
 
পাকিস্তানের জয়ের প্রথম সিড়িটা অবশ্য গেঁথেছিলেন ওয়াসিম আক্রম, মহম্মদ ইউনিস, শোয়েব আখতারদের উত্তরসূরি জুনিইদ খান। মহম্মদ ইউসুফ, মহম্মদ আমিররা গড়াপেটা করে জেল না খাটলে যে জুনেইদের এখন করাচির ক্লাব ক্রিকেট খেলার কথা, ২৩ বছরের সেই নবাগতই ভারতের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। চেন্নাইয়ের সকালের পিচের সুবিধা নিয়ে জুনেইদরা দেখিয়ে দিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নিয়ে যে প্রবাদটা অনেকদিন ধরে চালু আছে সেটা কোহলি, রোহিতরাও বয়ে নিয়ে চলেছেন। সহবাগ (৪) দিয়ে শুরু এরপর একে একে গম্ভীর (৮), কোহলি  (০), যুবরাজ (২)। সবাই ক্লিনবোল্ড...। এরপর রোহিত শর্মাও আউট। খেলা ভাল করে শুরু হওয়ার আগেই খেলা শেষ। ধোনি যখন নামলেন তখন দলের স্কোর ২৯ রানে ৫ উইকেট। পাহাড়প্রমাণ চাপ নিয়ে ধোনির লড়াই সেই শুরু। রায়না (৪৩) আস্থা দেখিয়েও ফিরে গেলেন। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানরা সবাই দলের ১০০ রানের মধ্যে ফিরে গেলেন। এলেন অশ্বিন। ধোনি শুধু অশ্বিনকে গিয়ে কিছু একটা বললেন। ঠিক কী বললেন বোঝা গেল না। কিন্তু ব্যাটের স্ট্রোকগুলোকে ভাষায় লিখলে দাঁড়ায় তুমি পাশে থাকো আমি লড়ে দেখাচ্ছি। তাই হলো। লড়াই আর ফিরে আসার ওয়ানডে ইনিংসের তালিকায় জায়গা করে নিল ধোনির ইনিংসটা। মারলেন ৭টা বাউন্ডারি, ৬টা ওভার বাউন্ডারি। তার চেয়েও বড় কথা চাপের মুখে কতটা ঠান্ডা হওয়া যায় সেটাও দেখালেন। কিন্তু মহাভারতের কর্ণের মতই রথের চাকা বসে গেল ধোনির। ট্র্যাজিক হিরো ধোনির এই ম্যাচটা দেখিয়ে দিল, বছরের সব খারাপ যার, শেষ খারাপ তার।
সিরিজের দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ ইডেন গার্ডেন্সে। কলকাতায় আসার আগে নিউইয়ারটা হ্যাপিই হচ্ছে হাফিজদের। ধোনিদের কাছে চ্যালেঞ্জ নতুন বছরে জয়ের রসায়নটা খুঁজে পাওয়া।

.