মিথকে মিথে রেখে মিসবাদের মাত মাহিদের। বিশ্বকাপে আধ ডজনবার পাক বধ করে অভিযান শুরু ভারতের

মিথ বজায় থাকল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে পারে না পাকিস্তান।

Updated By: Feb 15, 2015, 07:37 PM IST

পার্থ প্রতিম চন্দ্র

ভারত- ৩০০/৭। পাকিস্তান-২২৪ (৪৭ ওভার)
ভারত ৭৬ রানে জয়ী

মিথ বজায় থাকল। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে পারে না পাকিস্তান। এই মিথ বজায় রেখে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করলেন ধোনিরা। ১৯৯২ সিডনিতে বিশ্বকাপে পাকিস্তানে হারিয়ে যে জয়ের বৃত্ত আঁকা শুরু হয়েছিল, ২০১৫তে এসে সেই অস্ট্রেলিয়াতেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানে হারানোর বৃত্ত সম্পূর্ণ হল। বিশ্বকাপে পরপর ৬ বার ওয়াঘার প্রতিবেশীকে হারাল ভারত। দলের সবচেয়ে বড় তারকার শতরান, বোলারদের দারুণ ছন্দ, ধাওয়ান-রায়নার রানে ফিরে আসা। সব কিছু একেবারে হিসাব মিলিয়ে অ্যাডিলেডে জিতল ভারত। সবচেয়ে বড় কথা আগের পাঁচটা জয়ের থেকেও রানের বিচারে বড় ব্যবধানে জয় এল অ্যাডিলেডে। (সিডনিতে ভারত জিতেছিল ৪৩ রানে, ব্যাঙ্গালোরে ৩৯ রান, ম্যানচেস্টারে ৪৭ রানে, মোহালিতে ২৯ রানে, ২০০৩ জয় এসেছিল ৬ উইকেটে)

ওপেনারদের রানের মধ্যে না থাকা, কোহলির খারাপ ফর্ম, মিডল অর্ডারে রানের খরা, বোলারদের অনভিজ্ঞতা। বিশ্বকাপের আগে কত সমস্যার কথা শোনা যাচ্ছিল। আজ অ্যাডিলেডে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সব সমস্যা উধাও। টসে জেতা থেকে শুরু করে মিডল ওভারে দুর্দান্ত ব্যাটিং, বোলারদের সঠিক জায়গায় বল ফেলা। সব কিছু ঠিকঠাক করে পিকচার পারফেক্ট জয় ছিনিয়ে আনলেন ধোনিরা। দলের ৩৪ রানের মধ্যে রোহিত শর্মা আউট হওয়ার পর পাকিস্তানের মুখে হাসি ফুটেছিল। কিন্তু সেই শেষবার। এরপর সারা ম্যাচে বিভিন্নভাবে ভারতের দাপট। আফ্রিদির বলে কোহলির পুল শটে ইয়াসির শাহের কঠিন ক্যাচ মিস পুরো ম্যাচের মানচিত্র বদলে দিল। কোহলি-ধাওয়ান জুটি ধীরে ধীরে ম্যাচের রাশ নিজেদের দিকে নিয়ে আসে। দ্বিতীয় উইকেটে কোহলি-ধাওয়ান জুটি ১২৯ রান যোগ করে যখন ম্যাচের সম্পূর্ণ দখল নেবেন তখনই দুর্ভাগ্যজনকভাবে রান আউট হয়ে যান ধাওয়ান (৭৩)। এরপর নামেন রায়না। রায়না নামার পর ভারতের রানের গতি বেশ খানিকটা বেড়ে যায়। মিসবারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই বড় রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলেন কোহলি-রায়না। এর মাঝেই বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম ভারতীয় হিসাবে শতরান পূর্ণ করেন কোহলি। কোহলি যখন মাইলস্টোন গড়ছেন, তখন রায়না বলকে মাঠের বাইরে পাঠাচ্ছেন। তবে কী রায়না- কোহলির আউটের পর ফের ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। একটা সময় মনে হচ্ছিল ভারত ৩২০ রানের গণ্ডি ছাড়িয়ে যাবে, কিন্তু সোহেল খান (৫/৫৫)-এর শেষের দুরন্ত স্পেলটা ভারতকে ৩০০ রানের মধ্যেই আটকে রাখে।

এত বড় একটা ম্যাচে বিশ্বকাপের মত মঞ্চে ৩০০ রান তাড়া করে  জেতা খুব কঠিন। সেখানে যদি ইতিহাসে ০-৫,০-৫ করে সবসময় ফিসফিস করে মিসবাদের কানে। রান তাড়া করার কোনও সময়ই ভাল জায়গায় ছিলেন না মিসবারা। কখনই মনে হয়নি ইতিহাসের চাকাটা এবার ঘুরিয়ে দেবেন মিসবারা। তবু যা লড়ার লড়লেন অধিনায়ক মিসবা (৭৬)। আর কিছুটা লড়লেন ওপেনার আহমেদ শেহজাদ (৪৭)। বাকিরা সবাই ব্যর্থ। বাংলার মহম্মদ সামি ৩৫ হরান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট। দিনের শেষে কোহলি, রায়না, ধাওয়ানদের পাশে সামির অবদান উজ্জ্বল হয়ে থাকল।

এই জয় ভারতকে কার্যত কোয়ার্টার ফাইনালে উঠিয়ে দিল। কারণ এরপর শুধু ছোট দেশ (জিম্বাবোয়ে, সংযুক্ত আরবআমিরশাহি, আয়ারল্যান্ড)-কে হারালেই নক আউটে ওঠার ছাড়পত্র মিলে যাবে। তবে এত বড় একটা জয়ের পর ধোনিদের নিয়ে প্রত্যাশার পারদটা অনেক বেশি চড়ে গেল। ভারতীয় সমর্থকরা বলছেন, পাকিস্তানকে একটা বিশ্বকাপ জেতা হয়ে গেল এবার চাই আরেকটা।  

ভারতের পরের ম্যাচ ২২ ফেব্রুয়ারি, রবিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে মেলবোর্নে। অনেকেই বলছেন, এই ম্যাচটায় গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন কারা হবে সেটা ঠিক করে দেবে।

.