EXCLUSIVE, Sushant Singh Rajput: সুশান্তের মধ্যে লুকিয়ে থাকা ধোনিকে চিনেছিলেন কিরণ মোরে, কিন্তু কীভাবে?
শুধু তো কিরণ মোরে নন। এই সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে খড়গপুরের বর্তমান বিধায়ক প্রদীপ সরকারের সঙ্গেও সদ্য প্রয়াত সুশান্তের দারুণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেটা অবশ্য মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্যই। কারণ, ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে ধোনি যে এই খড়গপুর রেল স্টেশনে টিকিট পরীক্ষকের চাকরি করতেন।
সব্যসাচী বাগচী
বিহারের (Bihar) পটনা শহরে জন্ম হওয়ার সুবাদে ছোটবেলা থেকেই 'দেহাতি হিন্দি' একেবারে রপ্ত ছিল। ছোট বোন মিঠু সিং একটা সময় রাজ্য দলের হয়ে নিয়মিত ক্রিকেট খেলেছেন। বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্র সুশান্ত সিং রাজপুতও (Sushant Singh Rajput) ক্রিকেট খেলতেন। বাড়িতেও ছিল ক্রিকেটের পরিবেশ। যদিও সেটা পাড়ার মাঠে টেনিস বলে খেলা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। তবে অদৃষ্টের ইচ্ছায় সেই ছেলেটাই হয়ে একদিন গেলেন রুপোলি পর্দার মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। সুশান্ত 'এম এস ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি' (MS Dhoni The Untold Story) সিনেমায় তো শুধু অভিনয় করেননি, একইসঙ্গে সবার মন জয় করে নিয়েছেন। তাই তিনিই যে 'ক্যাপ্টেন কুল'-এর (Captain Cool) অগুনিত ভক্তদের কাছে ‘মাহি 2’। ভারতের প্রাক্তন উইকেট কিপার কিরণ (Kiran More) মোরে যে প্রিয় সুশান্ত-কে 'মাহি 2' নামেই মনে রাখতে চান।
মাত্র ৩৪ বছরে থেমে গিয়েছিলেন সুশান্ত। তিন বছর আগে তার রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু ঘটে। ২০২০ সালের ১৪ জুন সকালে মুম্বইয়ের বান্দ্রার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় তাঁর দেহ। পুলিসের দাবি, গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় তাঁকে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিক ভাবে অনুমান ছিল পুলিসের। তবে ঠিক কী কারণে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা উঠে এসেছে। শোনা যায় বেশ কিছু ছবি মুখ থুবড়ে পড়ায় অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। আবার অনেকে বলিউডের নেপোটিজমকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন।
২০১৬ সালে রিলিজ করেছিল ‘এম ধোনি দ্য আনটোল্ড স্টোরি’। সেই সিনেমায় ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ব্যাটিং স্টাইল নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য সুশান্তকে সাহায্য করেছিলেন কিরণ মোরে। এমন তরতাজা একটা প্রাণ চলে যাওয়ায় এখনও টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তন উইকেটকিপার হতাশ। ফোনের অন্যপ্রান্ত থেকে জি ২৪ ঘণ্টা কে বললেন, "ওর সঙ্গে প্রায় নয় মাস কাজ করেছিলাম। অনুশীলনের সময় আমাদের মধ্যে দারুণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ধোনির ব্যাটিং স্টাইল এবং ওর ম্যানারিজম নকল করার জন্য ওর দিন-রাত পরিশ্রম করত। এবং সেটা সিনেমার প্রতি ফ্রেমে প্রতিফলিত হয়েছিল। এমনটা মনে হত সুশান্ত নয়। যেন মহেন্দ্র সিং ধোনি নিজেই অভিনয় করছে। আসলে মানসিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি সুশান্ত একজন শিক্ষিত ছেলে। এবং নিজের চরিত্রগুলো নিয়ে ভাবনাচিন্তা করত। তাই এত সুন্দরভাবে ধোনির চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছিল। যা সবার আজীবন মনে থাকবে। তবে ওর মত একটা ছেলে আত্মহত্যার পথ বেছে নিল! এটা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছি।"
আরও পড়ুন: EXCLUSIVE, Sushant Singh Rajput And MS Dhoni: সুশান্তের মৃত্যুতে খুব ভেঙে পড়েছিলেন মাহি, জানালেন ধোনির বায়োপিকের পরিচালক নীরজ পান্ডে
আরও পড়ুন: Virat Kohli: আইসিসি চ্যাম্পিয়নশিপে অচল বিরাট আপনি কি শুধু আইপিএল-এর 'কিং'?
রিল লাইফের ধোনি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একটা সময় সুশান্তের গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছিলেন। সেই ঘটনা মনে করে কিরণ ফের যোগ করেন, "আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না ট্রেনিংয়ের সময় সুশান্তের গায়ে হাত পর্যন্ত তুলেছি। কারণ, ধোনির ব্যাকরণ বহির্ভূত শটগুলো রপ্ত করা মোটেও সোজা ছিল না। পাড়ায় বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা ও সিনেমায় একজন জীবিত লেজেন্ডের চরিত্র ফুটিয়ে তোলার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক আছে। তবুও সুশান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছে। এত পরিশ্রম তো অনেক ক্রিকেটারকেও করতে দেখিনি। একটা কথা মনে রাখবেন। ধোনিকে নকল করা সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার। সুশান্ত সেটা অনায়াসে করেছে। ও চিরনিদ্রায় চলে গেলেও, আমাদের কাছে অমর থাকবে।”
শুধু তো কিরণ মোরে নন। এই সিনেমায় অভিনয় করতে গিয়ে খড়গপুরের বর্তমান বিধায়ক প্রদীপ সরকারের সঙ্গেও সদ্য প্রয়াত সুশান্তের দারুণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেটা অবশ্য মহেন্দ্র সিং ধোনির জন্যই। কারণ, ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার আগে ধোনি যে এই খড়গপুর রেল স্টেশনে টিকিট পরীক্ষকের চাকরি করতেন। এমনকি স্থানীয় দুর্গা স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে টেনিস বলে খেপের একাধিক প্রতিযোগিতাও খেলতেন বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক। সিনেমায় ধোনির সেই 'সোনার সময়' দেখান হয়েছিল। শুটিং স্পটের সেই দিনগুলোর কথা জিজ্ঞেস করতেই বিধায়কের মন খারাপ হয়ে গেল। বলছিলেন, "এত বড় সেলিব্রেটি হলেও ওর মধ্যে একফোঁটাও গরিমা ছিল না। বেশ কয়েক সপ্তাহ খড়গপুরে ছিল। শুটিং শেষ হলেই আমরা একসঙ্গে চা-সিঙ্গারা খেতাম। আড্ডা মারতাম। ইয়ার্কি-ঠাট্টা লেগেই থাকত। আজ সবকিছু অতীত। সুশান্ত যে কেন এমন করল, এখনও বুঝতে পারছি না!"
তাঁর শেষ অভিনীত সিনেমা ‘ছিছোড়ে’। গল্পের মূল বিষয় হল, "আত্মহত্যা নয়। কঠিন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে থাকাই হল আসল যোদ্ধার পরিচয়।" কিন্তু সুশান্ত সেটা পারলেন কোথায়!রুপোলি পর্দায় ধোনির স্টোরি ‘আনটোল্ড’ থাকেনি। তবে আপনার গল্পটা কিন্তু অজানা রয়েই গেল। অনেকটা সেই কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্পের মত।
'শেষ হয়েও হইল না শেষ…..'
আর তাই আপনার স্কোরবোর্ডে লেখা থাকবে…..
রিল লাইফের এমএস ধোনি…
কট : ডিপ্রেশন……বোল্ড : সুইসাইড নাকি পরিকল্পিত খুন!