Anustup Majumdar, BEN vs HAR: লাহলির বাউন্সি পিচে ফের বাংলার ত্রাতা অনুষ্টুপ, শতরানের পরেও নির্লিপ্ত 'ক্রাইসিস ম্যান'
২০১১-১২ মরসুমে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ১৭৮ বলে ১৩৫ রান করেছিলেন মহারাজ। এরপর ২০১৪-১৫ মরসুমে শতরান করেছিলেন মনোজ। যদিও সেটা রঞ্জি ম্যাচ ছিল না। দলীপ ট্রফিতে পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে ১৪০ বলে ১০০ রান করেছিলেন পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক। এবার ১৯৩ বলে ১৩৭ রানে অপরাজিত রইলেন রুকু। মারলেন ১৪টি চার।
সব্যসাচী বাগচী
দল সমস্যায় পড়লেই তিনি রুখে দাঁড়ান। কারণ তিনি যে দলের 'ক্রাইসিস ম্যান'। মরসুমের পর মরসুম ধরে এটাই যেন বঙ্গ ব্যাটিংয়ের অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে! যে হারে তিনি প্রায় প্রতি ম্যাচে রান করে চলেছেন, তাতে ড্রেসিংরুমের বাইরে লিখে দেওয়া উচিত 'শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা। অনুষ্টুপ মজুমদারই ভরসা।' এবার লাহলির বাউন্সি পিচে শতরান করলেন অনুষ্টুপ মজুমদার (Anustup Majumdar)। এই শতরান করে অভিজ্ঞ ব্যাটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly) ও মনোজ তিওয়ারির (Manoj Tiwary) তালিকায় নাম লিখিয়ে নিলেন। অনুষ্টুপ ও বাকি ব্যাটারদের লড়াকু মানসিকতার জন্য হরিয়ানার (Haryana) বিরুদ্ধে প্রথম দিন ৬ উইকেটে ৩৩৫ রান তুলে নিল বঙ্গব্রিগেড (Team Bengal)।
লাহলির চৌধুরী বংশী লাল স্টেডিয়াম (Chaudhry Bansi Lal Cricket Stadium)। নামটা শুনলেই ব্যাটারদের বুক কেঁপে যায়। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মাত্র কয়েকটি ভেন্যুর মধ্যে লাহলির বাইশ গজে জোরে বোলারদের দাপট দেখা যায়। এখনও পর্যন্ত এই মাঠে ৬৩টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে মোট শতরানের সংখ্যা মাত্র ৪৯! আরও অবাক করা তথ্য হল এই মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের প্রথম ইনিংসে মাত্র ন'বার ৩০০ রান তোলা সম্ভব হয়েছে। যেখানে বাংলার মাত্র তিনজন ব্যাটার শতরানের মুখ দেখেছেন। সৌরভ, মনোজের পর অনুষ্টুপ হলেন তৃতীয় বঙ্গ ব্যাটার যিনি এই কীর্তি গড়লেন।
২০১১-১২ মরসুমে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ১৭৮ বলে ১৩৫ রান করেছিলেন মহারাজ। এরপর ২০১৪-১৫ মরসুমে শতরান করেছিলেন মনোজ। যদিও সেটা রঞ্জি ম্যাচ ছিল না। দলীপ ট্রফিতে পশ্চিমাঞ্চলের বিরুদ্ধে ১৪০ বলে ১০০ রান করেছিলেন পূর্বাঞ্চলের অধিনায়ক। এবার ১৯৩ বলে ১৩৭ রানে অপরাজিত রইলেন রুকু। মারলেন ১৪টি চার।
দেখতে দেখতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৪,৫০৪ রান সেরে ফেললেন অনুষ্টুপ। সঙ্গে রয়েছে ১২টি শতরান। এরমধ্যে চলতি মরসুমে ৬ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ৫৫৭ রানে করে ফেলেছেন। সর্বোচ্চ হিমাচল প্রদেশের বিরুদ্ধে ইডেনে গার্ডেন্সে ১৫৯ রান। গড় ৬৯.৬২। স্ট্রাইক রেট ৫৮.৫০। সঙ্গে রয়েছে ২টি শতরান ও ২টি অর্ধ শতরান। যদিও এমন দাপুটে পারফরম্যান্সের পরেও নির্লিপ্ত অনুষ্টুপ।
জি ২৪ ঘণ্টাকে টেলিফোনে রুকু বলেন, "আর কয়েক সপ্তাহ পরে ৩৯ বছরে পা দেব। কেরিয়ার তো প্রায় শেষের দিকে। কত রান করলাম, কটা সেঞ্চুরি হল, সেগুলো নিয়ে ভেবে আর কি লাভ! মনের আনন্দে বাকিদিনগুলো খেলতে পারলেই আমি খুশি।" আর কঠিন পিচে এই শতরান? অনুষ্টুপের প্রতিক্রিয়া, "লাহলির এই পিচের সঙ্গে অতীতের কোনও মিল নেই। এবারের পিচ অনেক বেশি স্পোর্টিং। হর্ষল প্যাটেল ও হরিয়ানার বাকি জোরে বোলারদের সঙ্গে আমাদের ব্যাটাররাও কিন্তু পারফর্ম করেছে। দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারালেও কিন্তু আমরা ম্যাচে ফিরে এসেছি।"
অনুষ্টুপ খুব ভুল বলেননি। গত ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া ওপেনার অভিষেক দাসকে বসিয়ে এই ম্যাচে করণ লালকে নামিয়েছিল বাংলা। তিনি ৩০ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে যান। তিন নম্বরে নেমে সুদীপ ঘরামি মাত্র ১০ রান করেন। অভিমন্যু ইশ্বরণ করেন ৫৭ রান। তিনি শুরুটা ভাল করেছিলেন, কিন্ত বড় ইনিংস খেলতে পারলেন না। মনোজ মাত্র ১ রানে আউট হন। ফলে ১০৯ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলা।
আরও পড়ুন: Ishan Kishan, IND vs AUS: প্রথমবার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়ার অনুভূতি জানালেন 'ডিনামাইট' ঈশান কিশান
সেখান থেকে নবাগত শুভঙ্কর বলকে নিয়ে পালটা লড়াই শুরু করেন অনুষ্টুপ। অভিষেক ঘটানো শুভঙ্কর বল ৯৭ বলে ৩০ রান করেন। তিনি অনুষ্টুপকে সুযোগ করে দেন ইনিংস গড়ার। দু'জন পঞ্চম উইকেটে ৯২ রান করেন। এরপর তরুণ উইকেটকিপারকে অভিষেক পোড়েলকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ৯৫ রান যোগ করেন বাংলার 'ক্রাইসিস ম্যান'। অভিষেক ৮৩ বলে ৪৯ রান করে আউট হন।
এই ম্যাচে নেই অলরাউন্ডার শাহবাজ় আহমেদ। তিনি ভারতের এক দিনের দলে ডাক পেয়েছেন। তাঁর জায়গায় খেলানো হচ্ছে প্রদীপ্ত প্রামাণিককে। তিনি দিনের শেষে অপরাজিত ২৩ রানে। অনুষ্টুপও অপরাজিত ১৩৭ রানে। বাংলার হাতে রয়েছে ৪ উইকেট। তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে খেলতে নামা বাংলা চাইবে দ্বিতীয় দিনে নিজেদের রান আরও বাড়িয়ে নিতে। অনুষ্টুপও সেই ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন।
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)