Baichung Bhutia vs Kalyan Chaubey : 'পাহাড়ি বিছে'-র বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ আনলেন এআইএফএফ-এর নতুন সভাপতি কল্যাণ চৌবে
Baichung Bhutia vs Kalyan Chaubey : কল্যাণের জয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু নির্বাচনে বাইচুং ৩৩-১ ব্যবধানে উড়ে যাবেন এটা ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত কেউ ভাবতে পারেননি। এমন হার মেনে নিতে পারেননি ভারতীয় ফুটবলের আইকন।
জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্যুরো: মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার সময় থেকে ফলাফল ঘোষণা। বাইচুং ভুটিয়া (Baichung Bhutia) এআইএফএফ-এর (AIFF) বিরুদ্ধে তোপ দেগেই চলেছেন। 'পাহাড়ি বিছে'-এর দাবি সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনকে (AIFF Election) বিজেপি (BJP) নিয়ন্ত্রণ করেছে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের দাবি, কৌশল অবলম্বন করে তাঁকে হারানো হয়েছে। ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচনে কল্যাণ চৌবের (Kalyan Chaubey) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামার শুরু থেকেই বাইচুং জানতেন অসম যুদ্ধে তিনি লড়তে নেমেছেন। কিন্তু যে কৌশলে তাঁকে হারানো হল, সেই পদ্ধতি নিয়ে প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের আপত্তি আছে। যদিও বাইচুং-এর এই অভিযোগকে একেবারে উড়িয়ে দিলেন ফুটবল হাউসের নতুন সভাপতি।
জি ২৪ ঘণ্টার 'লাইমলাইট' অনুষ্ঠানে চ্যানেল এডিটর গৌতম ভট্টাচার্য সরাসরি এই প্রশ্ন কল্যাণের দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন। এআইএফএফ-এর নতুন সভাপতির জবাব ছিল, '৩৪টি ভোট কিন্তু ব্যালটে ছিল। পুরো নির্বাচন ভিডিয়ো রেকর্ডিং করা হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার মুখ্য নির্বাচন অফিস থেকে এসেছিলেন। তাঁর লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন পরিচালনা করার অভিযোগ রয়েছে। ফলে এই জায়গায় রিগিং করার বিন্দুমাত্র উপায়। বহিরাগতদের ঢোকার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ইভিএম মেশিন চুরি করার উপায় নেই। কেউ এসে নিজের ইচ্ছামতো ছাপ্পা দিতে পারছে না। তাছাড়া মাত্র এক-দেড় ঘন্টার মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে যায়। ফলে এখানে রিগিং-এর কোনও জায়গা নেই।'
কল্যাণের জয় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু নির্বাচনে বাইচুং ৩৩-১ ব্যবধানে উড়ে যাবেন এটা ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত কেউ ভাবতে পারেননি। এমন হার মেনে নিতে পারেননি ভারতীয় ফুটবলের আইকন। তাঁর আরও মারাত্মক অভিযোগ ছিল, নির্বাচনের আগের রাতে একজন প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বেশি রাতে হোটেলে এসেছিলেন। শুধু তাই নয়, রাত আড়াইটে, নির্বাচনের আগে ভোররাত পর্যন্ত তিনি ভোটারদের সঙ্গে ছিলেন। ভোটারদের (গোপালকৃষ্ণ কোসারাজু বাদে) রাখা হয়েছিল হোটেলের একটি নির্দিষ্ট ফ্লোরে। সেই ফ্লোরের সঙ্গে বাইরের সমস্ত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। তাঁর আরও দাবি ছিল,অনেক চেষ্টা করেও রাজস্থান স্টেট অ্যাসোসিয়েশনের সচিব, যিনি নিজেও ভোটার ছিলেন, তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি বাইচুং।
যদিও বাইচুং-এর সব অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন কল্যাণ। তিনি ফের বলেন, 'এটা সম্পূর্ণ রূপে অসত্য। উনি প্রমাণ দিয়ে দেখান। তাহলেই তো সব মিটে যাবে। আমাদের দেশে কিছু নিয়ম আছে। আইন আছে। যে অভিযোগ করে সেই অভিযোগ করার খন্ডন করার দায়ও তাঁর। তবে তাঁর অভিযোগ মিথ্যা। সেটা ক্যামেরার সামনে বলে যাচ্ছি।' কল্যাণ আরও যোগ করেছেন, 'রাত তিনটের সময় কোথাও যাওয়া, আর সাড়ে ন'টার সময় যাওয়ার মধ্যে আকাশ-পাতাল ফারাক আছে। এত বড় স্তরে থেকে এমন মন্তব্য করা উচিত নয়। মনে রাখতে হবে আমাদের প্যানেলে কিন্তু বিজেপি ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের লোকও আছে। আর যার অভিযোগ নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে তিনি কিন্তু প্রফুল প্যাটেল সভাপতি থাকার সময় অ্যাডভাইসার হয়ে মাসে লক্ষাধিক টাকা বেতন নিতেন। আমরা আমাদের সঞ্চিত টাকা দিয়ে ভারতীয় ফুটবলের জন্য সুপ্রিম কোর্টে কেস লড়েছি। অন্যদিকে তিনি ফেডারেশন থেকে মাইনে নিয়ে গিয়েছেন!'
কল্যাণ থামতেই চাইছিলেন না। তিনি বাইচুং-এর নাম মুখে না এনে ফের যোগ করলেন, 'কিছু মানুষ ক্ষমতা কুক্ষিগত করেছে। এই তো সিএজি এখন অডিট করছে। সেই অডিটে ধরা পড়েছে যে টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। বিশাল অঙ্কের টাকা ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি বেসরকারি ভাবে কয়েকজনের নাম শুনেছি। রিপোর্ট সামনে এলে সেটা দেখা যাবে। গত ১৯ মাস ধরে সুপ্রিম কোর্টে বাঘা বাঘা উকিলদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের বিপক্ষে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি, মুকুল রোহাতগির মতো উকিল ছিলেন। এআইএফএফ-এর আগের কমিটি এই উকিলদের পিছনে তিন কোটি টাকা খরচ করেছে। এবং সেই সময় কর্তারা বেতন পেয়েছেন।'
কল্যাণের এমন বিস্ফোরণের পর অবশ্য বাইচুং এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। তবে তাঁর জবাবের অপেক্ষায় রয়েছে ভারতের ফুটবল মহল।