Two Geniuses of Physics: মহাবিশ্বের অনন্ত রহস্যসন্ধানী এই দুই মুখ কেন স্মরণীয় ১৪ মার্চেই?

১৪ মার্চ দিনটি যেন বিশ্বের অলিখিত পদার্থবিদ্যা দিবস। আসলে দিনটির সঙ্গে দুই মহাপ্রতিভাধর পদার্থবিজ্ঞানীর নাম গাঁথা।

| Mar 14, 2022, 15:54 PM IST

১৪ মার্চ দিনটি যেন বিশ্বের অলিখিত পদার্থবিদ্যা দিবস। আসলে দিনটির সঙ্গে দুই মহাপ্রতিভাধর বিজ্ঞানীর নাম গাঁথা। এক জনের জন্মদিন, অন্য জনের মৃত্যুদিন। ১৮৭৯ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আর ২০১৮ সালের এই দিনে মৃত্যু হয় তাঁর মানসপুত্র স্টিফেন হকিংয়ের!  

1/7

জন্মদিন, মৃত্যুদিন

১৪ মার্চ দিনটি যেন বিশ্বের অলিখিত পদার্থবিদ্যা দিবস। আসলে দিনটির সঙ্গে দুই মহাপ্রতিভাধর বিজ্ঞানীর নাম গাঁথা। এক জনের জন্মদিন, অন্য জনের মৃত্যুদিন। ১৮৭৯ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আর ২০১৮ সালের এই দিনে মৃত্যু হয় তাঁর মানসপুত্র স্টিফেন হকিংয়ের! 

2/7

বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ

আইনস্টাইন মূলত 'আপেক্ষিকতার তত্ত্ব' এবং ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র, E=mc2 (যা "বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ" হিসেবে স্বীকৃত) আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তাঁর বিশেষ অবদান এবং আলোক-তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত গবেষণার জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।

3/7

সেরা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী

স্টিফেন হকিং-ও একজন পদার্থবিজ্ঞানী; তবে তিনি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী। পাশাপাশি তিনি গণিতবিদ, বিশ্বতাত্ত্বিক ও বিজ্ঞান-বিষয়ক লেখক। তাঁকে বিশ শতকের অন্যতম সেরা তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে গণ্য করা হয়। হকিং ব্রিটেনের ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক মহাবিশ্বতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল কসমোলজি) প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-২০০৯ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাস অধ্যাপক ছিলেন।

4/7

বিশ্বতত্ত্ব, বিশ্বরহস্য

আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সারা জীবন ধরে প্রচুর গবেষণা করেছেন। নতুন উদ্ভাবনে ও আবিষ্কারে তাঁর বিপুল অবদান। তবে সবচেয়ে বিখ্যাত অবদান আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব। এ ছাড়া রয়েছে আপেক্ষিকতাভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যা তাঁকে অণুর ব্রাউনীয় গতি ব্যাখ্যা করার দিকে পরিচালিত করেছিল, গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকিরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ।

5/7

লড়াকু

হকিংও এক বিস্ময়। তিনি শুধু প্রতিভাধর বিজ্ঞানীই নন, একই সঙ্গে শারীরিক বাধা জয় করে এগিয়ে যাওয়া ও চূড়ান্তে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে তিনি সারা বিশ্বের একাডেমিকসে এক স্মরণীয় চরিত্র। ১৯৬৩ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে হকিংয়ের দেহে বাসা বাধে স্নায়ুরোগ। রোগের নাম-- এমায়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস। রোগটির কারণে হকিং পরবর্তী দশকগুলিতে ধীরে ধীরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তবুও বহু বছর যাবৎ তিনি তাঁর গবেষণা সাফল্যের সঙ্গে চালিয়ে যান। একটা পর্যায়ে এসে বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার পরেও ভেঙে পড়েননি। ভাষা-উৎপাদনকারী এক ধরনের যন্ত্রের সাহায্যে অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন।

6/7

'রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার'

শুধু বিজ্ঞানে নয়, সমাজেও ছিলেন আইনস্টাইন।  দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জার্মান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি সম্পর্কে তাদের সতর্ক করেন এবং আমেরিকাকেও একই ধরনের গবেষণা শুরু করার কথা বলেন। তাঁর এই চিঠির প্রেক্ষিতেই ম্যানহাটন প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদের কথা তুলে ধরে একটি ইশতেহার রচনা করেছিলেন তিনি। যা ইতিহাসে 'রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার' নামে বিখ্যাত। ১৯৯৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন আইনস্টাইনকে "শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি" ঘোষণা করে। পদার্থবিজ্ঞানীদের ভোটের মাধ্যমে জানা গেছে, তাঁকে প্রায় সকলেই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।

7/7

ভস্ম-স্মৃতি

তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষণ হকিংয়ের প্রধান গবেষণাক্ষেত্র। ১৯৬০-এর দশকে কেমব্রিজের বন্ধু ও সহকর্মী রজার পেনরোজের সঙ্গে হকিং আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব থেকে একটি নতুন মডেল তৈরি করেন। সেই মডেলের উপর ভিত্তি করে ১৯৭০-এর দশকে হকিং প্রথম তাঁদের তত্ত্ব প্রমাণ করেন। এই তত্ত্ব 'পেনরোজ-হকিং তত্ত্ব' নামে পরিচিত। হকিংয়ের শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ। মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার পর ২০১৮ সালের ১৫ জুন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবিতে আইজাক নিউটনের সমাধির পাশে এবং চার্লস ডারউইনের সমাধিসংলগ্ন অংশে তাঁর ভস্ম পুঁতে ফেলা হয়।