Moni: ক্লাসরুম নেই তবু মাঠে-খামারেই নৃত্যের মাধ্যমে স্বপ্ন দেখতে শেখাচ্ছেন হুগলী চণ্ডীতলার মণি

Moni: স্বপ্ন দেখা যেমন সহজ তেমনই কঠিন তাকে বাস্তবায়িত করা। তাই স্বপ্ন দেখতেও ভয় পায় বহু মানুষ। মণিকা সাঁতরা ওরফে মণি হুগলী জেলার চণ্ডীতলা ব্লকের গঙ্গাধরপুর গ্রামের এক লড়াকু মেয়ে। অত্যন্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘর থেকে উঠে আসা মণিকা পড়াশোনার পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই ক্লাসিক্যাল নাচ শিখতেন মমতা শংকরের ছাত্র শুভঙ্কর ঘোষের কাছে।   

Oct 16, 2023, 18:00 PM IST
1/5

জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: প্রায় আট বছর নাচ শেখার পর গ্রামের মেয়ে হিসাবে নাচ শেখার জন্য তীব্র কটূক্তি ও তীর্যক ব্যাঙ্গের সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিছু সহপাঠীদের হাসাহাসিও সহ্য করতে হয়েছে নাচ শেখার জন্য। একসময় নাচটাই বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পড়াশোনা চলতে থাকে। ডি.এল.এড ও গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করার পর পুনরায় নাচের প্রতি ভালবাসা থেকে গঙ্গাধরপুর গ্রামের কয়েকটা বাচ্চাকে নিয়ে অত্যন্ত স্বল্প পারিশ্রমিকে নাচ শেখাতে শুরু করেন। স্কুলের নাম দেন “সহচরী ডান্স একাডেমি”। একদম শুরুর দিকে উত্তর গঙ্গাধরপুরের এক ছোট্ট সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে ডাক আসে সহচরীর নৃত্য পরিবেশনের। সেই থেকেই যাত্রা শুরু। নানান অপারগতা, ভুল ত্রুটির পরে আজ তিনটে বছর বাদে প্রায় পঁচিশটা স্টেজ প্রোগ্রামের পরে “সহচরী” গঙ্গাধরপুরের সংস্কৃতির জগতে এক অনন্য নাম। 

2/5

কলকাতার অন্যান্য হলে অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সম্প্রতি উত্তরপাড়া গণভবনে “সহচরী ডান্স একাডেমী”-এর দেবীবন্দনা বহুল প্রশংসিত। সেখানে তারা স্মারক ও শংসাপত্রও পেয়েছে। ভবিষ্যতে সহচরীকে নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার স্বপ্ন দেখেন মণি।

3/5

বর্তমানে মণির কাছে তিন থেকে তেইশ বছরের প্রায় ২০ -২৫ জন ছাত্রী শেখে। কিন্তু তার লড়াইটা অন্য জায়গায়। একটা ঘরে জীবন কাটানো মণির নাচ শেখানোর মত ন্যূনতম জায়গাও প্রায় নেই। কখনও ছাদে, কখনও মাঠে বা কখনও খামারে তার বাচ্চাদের নিয়ে চলে নাচের অনুশীলন।

4/5

নাচের ক্ষেত্রে মণির অনবদ্য সৃজনশীলতা হল তার গান পছন্দ, পোশাক পরিকল্পনা ও নতুন ধারার নৃত্যশৈলী। তার প্রথম ছকভাঙা নৃত্যাভিনয় ছিল প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের “আমি বাংলায় গান গাই” গানে। তথাকথিত নাচের ক্ষেত্রে যে বিট ও মিউজিক দরকার পড়ে মণি সেই ধারণা ভেঙে এইরকম একটা গানে নৃত্য পরিবেশন করেন। পোশাক পরিকল্পনা থেকে, প্রপস সব ক্ষেত্রেই তার অভিনবত্বের ছোঁয়া থেকে যায়। সহচরীতে কিছু পিছিয়ে পড়া মেয়েও বিনা পয়সায় নাচ শিখতে আসে। মণিকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলে জানান “নাচটা ভালোবেসে করুক এখানকার মেয়েরা এটাই চাই। সবার ইচ্ছে থাকলেও সামর্থ্য যে থাকেনা সেটা আমার থেকে ভালো কে-ই বা বোঝে?” 

5/5

শুধু নাচ নয় অসুস্থ বাবা মায়ের দায়িত্ব থেকে পাড়ার সরস্বতী পুজোতেও এখন তার এলাকার মানুষ জানে মণি থাকলে চিন্তা নেই। মানসিক ও আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষদের মণি যেভাবে বাঁচতে শেখাচ্ছেন সেভাবে আরও এরকম মণি ঘরে ঘরে তৈরি হলে বাংলার রূপ নতুন ভাবে দেখবে মানুষ, হাতে হাত রেখে বেড়ে উঠবে সহচরী।