সারা দেশে উত্পাদিত শাক-সবজি বিষে ভরা! FSSAI প্রকাশ করল ভয় ধরানো রিপোর্ট

আমরা যে সমস্ত শাকসবজি খেয়ে শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখব বলে ভাবছি, সেগুলি আসলে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং সেইসব শাক-সবজি খেয়ে মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। 

Edited By: সুমন মজুমদার | Updated By: Oct 10, 2020, 01:02 PM IST
সারা দেশে উত্পাদিত শাক-সবজি বিষে ভরা! FSSAI প্রকাশ করল ভয় ধরানো রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদন- কৃষি প্রধান দেশ ভারতবর্ষ। এমন দেশেই কিনা কৃষিজাত দ্রব্যে মিশছে বিষ! Food Safety and Standards Authority of India (FSSAI) এক রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে উৎপাদিত এবং বিক্রিত শাক-সবজিতে ক্ষতিকর পদার্থ ভরপুর। কৃষিপ্রধান দেশে কেন এমনটা হচ্ছে! উত্তর খুব সহজেই পাওয়া যাবে। ফসল ফলানোর জন্য যেসব কৃত্রিম সার ও কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে, তা থেকেই শাক-সবজিতে মিশছে বিষ। লেদ, কেডিয়াম, আর্সেনিকের মতো বিষাক্ত পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উৎপাদিত ও বিক্রিত শাক-সবজির মধ্যে।  কিডনি থেকে শুরু করে লিভার ও মানুষের হৃদপিণ্ডে পর্যন্ত এইসব ক্ষতিকর পদার্থ ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে চিকিৎসক মহল। কোনও কোনো শাক-সবজিতে রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ দুই থেকে ছাড়িয়ে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত চলে যাচ্ছে। যার ফলে ওইসব শাক-সবজি খেয়ে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষ কয়েক বছরের মধ্যেই প্রবল শারীরিক অসুস্থতায় ভুগতে পারেন বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।

Food Safety and Standards Authority of India (FSSAI) জানিয়েছে, সারা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে উৎপাদিত এবং বিক্রিত ফসলের মধ্যে অন্তত ৯ শতাংশই খাওয়ার যোগ্য নয়।  কম করে ২৫ শতাংশ বিক্রিত শাক-সবজি নির্ধারিত মানের থেকে অনেকটাই খারাপ। অর্থাৎ আমরা যে সমস্ত শাকসবজি খেয়ে শরীরকে সুস্থ ও ফিট রাখব বলে ভাবছি, সেগুলি আসলে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং সেইসব শাক-সবজি খেয়ে মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।  মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগঢ়, বিহার, মহারাষ্ট্র, পাঞ্জাব, রাজস্থান, ঝাড়খন্ড, হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলিতে উৎপাদিত ফসলের বেশিরভাগেই একাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। এসব রাজ্য থেকে উৎপাদিত ফসল অন্য জায়গায় যায় বিক্রির জন্য। ফলে এই বিষ ছড়িয়ে পড়ছে গোটা দেশে।

গোটা দেশে যেসব রাজ্যে বেশি পরিমাণ শাক-সবজি উৎপাদিত হয়, সেগুলিকে মোট চারটি ভাগে ভাগ করেছে Food Safety and Standards Authority of India (FSSA)। চারটি অঞ্চল থেকে মোট ৩৩০০ স্যাম্পেল সংগ্রহ করেছে এফএসএসআই।  তার মধ্যে ৩০৬টি স্যাম্পেল-এ ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের মাত্রা অত্যধিক মাত্রায় পাওয়া গিয়েছে। ২৬০ টি স্যাম্পেল-এ রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে অনেকটাই বেশি ছিল বলে জানিয়েছে এফএসসআই।  শাকপাতা থেকে শুরু করে মাটির নিচে ফলানো সবজিতেও ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। আর্সেনিক, লেদ, রেডিয়াম, মার্কারির মতো রাসায়নিক পদার্থ মিশছে শাক-সবজিতে।  বিশেষজ্ঞ মহল জানাচ্ছে, শিশুদের শরীরে এইসব রাসায়নিক পদার্থ ভয়ঙ্কর ক্ষতিসাধন করতে পারে। ২০১৬ সালে প্রথমবার জি নিউজ শাক-সবজিতে ক্ষতিকর পদার্থ মেশার তথ্য প্রকাশ্যে এনেছিল। তারপর ২০১৮ ও ২০১৯ সালেও এই ক্যাম্পেইন জি নিউজের তরফের চলতে থাকে। জি নিউজের খবরে জেরে দিল্লিসহ দেশের একাধিক রাজ্যের প্রশাসন উৎপাদিত ফসলের উপর নজরদারি শুরু করেছিল। কিন্তু পরিস্থিতি আবার আগের মতোই হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন-  ফুঁ দিলেই করোনা রিপোর্ট হাতে, তাও এক মিনিটে! ভারতে আসছে এমনই কিট

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এইসব রাসায়নিক পদার্থের থেকে কীভাবে বাঁচা যায়! শাক-সবজি না খেয়ে তো আর থাকা যাবে না! তাই বিকল্প রাস্তা খুঁজতে হবে। বাজার থেকে শাক-সবজি এনে গরম জলে ধুয়ে নিতে পারেন। অথবা বেশ কিছুক্ষণ নুন মেশানো জলে চুবিয়ে রাখতে পারেন। তাতেও যে এইসব ক্ষতিকর রাসায়নিক পুরোপুরি ধুয়ে যাবে তা নয়। তবে আগের থেকে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কম হতে পারে। তবে বাজার থেকে আনা শাক-সবজি পুকুর বা নদীর জলে ধুয়ে আখেরে কোনও লাভ হবে না। কারণ নদীর জলে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ নেহাত কম নয়।

.