দেশ তোলপাড় করা নাগরিকপঞ্জী আসলে কী, ‌যাদের নাম নেই কী হবে তাঁদের?

এই সেদিনও ‌যারা ভোট দিয়েছেন তারাই এখন এ দেশে থাকতে পারা নিয়ে সংশয়ে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার শেষ নেই

Updated By: Aug 1, 2018, 04:32 PM IST
দেশ তোলপাড় করা নাগরিকপঞ্জী আসলে কী, ‌যাদের নাম নেই কী হবে তাঁদের?

নিজস্ব প্রতিবেদন: অসমে নাগরিকপঞ্জী নিয়ে তোলপাড় দেশ। এনআরসি-র খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন সে রাজ্যের ৪০ লাখ মানুষ। এই সেদিনও ‌যারা ভোট দিয়েছেন তারাই এখন এ দেশে থাকতে পারা নিয়ে সংশয়ে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজার শেষ নেই। তৃণমূল নেত্রী এ নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। অবার অন্যদিকে, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করার অভি‌যোগ তুলে বিরোধীদের বিঁধেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। কিন্তু, এসবের মধ্যে অনেকাংশেই হারিয়ে যাচ্ছে মূল বিষয়টি। এই প্রতিবেদনটি সেই বিষয় ও তার প্রেক্ষপটকে তুলে ধরার উদ্দেশে লেখা হল।

নাগরিকপঞ্জী আসলে কী

১৯৫১ সালে জনগণনার সময়ে অসমের নাগরিকদের একটি বিশেষ তালিকা তৈরি করা হয়। অনেকের মতে সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়াতেই এমন উদ্যোগ। সেখানে গ্রামওয়াড়ি নাগরিকদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির নামধাম, অভিভাবকদের নাম, ঠিকানা, পেশা, সম্পত্তি ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করা হয় ওই নথিতে। সেই তথ্য রাখা হয়েছিল জেলাশাসকের অফিসে। ১৯৬০ সালের পর তা তুলে দেওয়া হয় পুলিসের হাতে।

অারও পড়ুন-দিঘার সমুদ্রে ভূতুড়ে জিনিস! আতঙ্কিত মত্স্যজীবী, পর্যটক, প্রশাসন 

কেন নাগরিকপঞ্জী নবিকরণের দাবি

স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্মকাল প‌র্যন্ত দলে দলে মানুষ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে অসমে এসেছেন। ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি বন্ধুত্ব ও সহ‌যোগিতা চুক্তি সাক্ষরিত হয়। এদিকে বাংলাদেশ সৃষ্টির পরও বাংলাদেশিদের অসমে ঢোকার বিষয়টি কেন্দ্রের নজরে প্রথম আনে অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। এনিয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে একটি স্মারকলিপিও জমা দেয় ইউনিয়ন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্র একটি আইন তৈরি করে। ওই আইনে বিদেশিদের চিহ্নিত করা ও তাদের ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু দেখা গেল তাতে কোনও কাজ হচ্ছে না।

আরও পড়ুন-মধ্যবিত্তের হেঁশেলে আগুনের আঁচ, ফের বাড়ল রান্নার গ্যাসের দাম

অসমে মানুষের ক্ষোভের কারণ কী

অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে কেন্দ্রের ব্যবস্থায় খুশি হতে পারেনি অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। আন্দোলনে নামে অল অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। বাধ্য হয়েই স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। চুক্তি হয় ১৯৮৫ সালের ১৫ অগাস্ট।

কারা থাকলেন জাতীয় নাগরিকপঞ্জীতে

১৯৫১ সালের নাগরিকপঞ্জীতে বা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ প‌র্যন্ত ‌যাদের নাম ভোটার তালিকায় ছিল, তাঁদেরই নাগরিকপঞ্জীতে রাখা হয়। পাশাপাশি, ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ প‌র্যন্ত ‌যারা অসমে এসেছেন তাঁরাও থাকলেন ওই পঞ্জীতে।

২০১৮ সালের নাগরিকপঞ্জীতে ‌যাদের নাম নেই তাদের কী হবে

৩০ জুলাই (সোমবার) ‌নাগরিকপঞ্জীর যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে, তা চূড়ান্ত তালিকা নয়। ‌যাদের নাম নেই তাঁরা ফের আবেদন করতে পারবেন। আবেদন করতে হবে চলতি বছরের ৩০ অগাস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।

Tags:
.