উত্তরপ্রদেশে প্রথম দফার শেষ প্রচারে আক্রমণাত্মক রাহুল
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সাত দফার নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট-প্রচার শেষ হচ্ছে আজ। বুধবার তরাই ও অওধ এলাকার ১০টি জেলায় ছড়িয়ে থাকা এই ৫৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার সাত দফার নির্বাচনের প্রথম পর্বের ভোট-প্রচার শেষ হল আজ। বুধবার তরাই ও অওধ এলাকার ১০টি জেলায় ছড়িয়ে থাকা এই ৫৫টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। যুযুধান প্রধান ৪ রাজনৈতিক দল- সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, কংগ্রেস ও বিজেপি'র পাশাপাশি ভোটের আসরে নজর কেড়েছে 'পিস পার্টি'। জনপ্রিয় সংখ্যালঘু নেতা ড. আয়ুবের নবগঠিত দল সাম্প্রতিক কয়েকটি উপনির্বাচন ও স্থানীয় ভোটে চমকপ্রদ ফল করেছে এই এলাকায়। বেশ কয়েকটি আসনে পিস পার্টির প্রার্থীরা ভোট কেটে অনেক অঙ্কই পালটে দিতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এক দশক আগে কার্যত বিজেপি এবং সমাজবাদী শিবিরের দ্বিমেরু রাজনীতিতে বিভক্ত ছিল প্রথম দফায় ভোট হতে যাওয়া অঞ্চলগুলি। কিন্তু ২০০৭ সালের বিধানসভা ভোটে মায়াবতীর দল সেই সমীকরণ বদলে দেয়। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে ফৈজাবাদ (রামমন্দির আন্দোলনের 'এপিসেন্টার' অযোধ্যা এই কেন্দ্রেরই অন্তর্গত) বরাবাঁকি, ডুমরিয়াগঞ্জ, বাহারআইচ, গোন্ডার মতো কংগ্রেসের আসনে জয়পতাকা ওড়ে। বদলে যাওয়া এই রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাহুল ম্যাজিকে ভর করে এবার বাজিমাত করতে চাইছে বিগত ২২ বছর হিন্দি বলয়ের প্রধান রাজ্যে ক্ষমতার বাইরে থাকা কংগ্রেস।
অন্য দিকে দিল্লিতে কংগ্রেস এবং লখনউতে মায়াবতীর সরকারের নানা দুর্নীতি ইস্যুতে 'অ্যান্টি ইনকামবেন্সি ফ্যাক্টর'কে কাজে লাগিয়ে এবং যাদব-মুসলিম ভোটব্যাংক সংহত করে ক্ষমতায় ফিরতে মরিয়া সমাজবাদী সুপ্রিমো মুলায়ম সিং যাদব। ভোট পণ্ডিতদের পূর্বাভাস, শেষ পর্যন্ত প্রথম দফার বহুমুখী লড়াইয়ে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা যাবে মুলায়ম ও সোনিয়া গান্ধীর দলকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শেষ বেলার প্রচারপর্বে ঝড় তোলার চেষ্টা করলেও স্তিমিত হয়ে পড়া রামমন্দির-আবেগ আর ক্ষয়িষ্ণু উচ্চবর্ণের ভোটব্যাংক 'কমল কা নিশান'-এর নির্বাচনী সাফল্যের পথে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রত্যাশিত ভাবেই শুক্রবার প্রথম দফার ভোটের শেষ বেলার প্রচারে তুমুল ব্যস্ত ছিলেন প্রত্যেকটি দলের নেতারা। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাহুল গান্ধী এদিন বারানসী এবং গাজিপুরে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। সকালে বারানসীতে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেসের 'যুবরাজ' জোর গলায় দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশের এবারের বিধানসভা ভোটে পরিবর্তনের স্রোত বইছে। যার পরিণতিতে দীর্ঘ দু'দশক পর ফের রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরতে চলেছে কংগ্রেস। সরকার গঠন করতে পারলে কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশের হৃতগৌরব ফেরাবে বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি। অন্যদিকে লখনউয়ে এদিনই প্রচারে যান বিজেপি নেতা লালাকৃষ্ণ আডবাণী। বালিয়া এবং গাজিপুরে প্রচার করেন নিতীন গডকড়ি। বিজেপি প্রচারে নিয়ে এসেছে উমা ভারতীকেও। সোমবার গোন্ডা, সিদ্ধার্থ নগর এবং ফৈজাবাদের বিভিন্ন বিধানসভা আসনে বিজেপি প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করেন তিনি।