মায়েরা এমনই হয়! আটকে পড়া ছেলেকে আনতে স্কুটিতে ১৪০০ কিমি পাড়ি দিলেন এক মহিলা

তিন দিন ধরে স্কুটি চালিয়ে এই যুদ্ধ জয় করেন মা রাজিয়া বেগম। 

Updated By: Apr 10, 2020, 03:36 PM IST
মায়েরা এমনই হয়! আটকে পড়া ছেলেকে আনতে স্কুটিতে ১৪০০ কিমি পাড়ি দিলেন এক মহিলা

নিজস্ব প্রতিবেদন- করোনার প্রকোপের কারণে সারাদেশ জুড়ে চলছে লকডাউন। বন্ধ সমস্ত পরিবহন ব্যবস্থা। প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোতে পারবে না কেউই। আর এই লকডাউনের কারণে নিজের রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে আটকে পড়েছেন বহু মানুষ। ঠিক সেরকমই তেলেঙ্গানা থেকে অন্দ্রপ্রদেশে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে আটকে পড়েছিল এক কিশোর।  কিন্তু মায়ের অদম্য ইচ্ছার কাছে হার মানল লকডাউন। স্কুটি চালিয়ে ১৪০০ কিমি পার করে গেলেন ছেলেকে আনতে। ঘরে ফিরিয়ে আনলেন তাকে। মায়ের তো এমনই হয়!

তিন দিন ধরে স্কুটি চালিয়ে এই যুদ্ধ জয় করেন মা রাজিয়া বেগম। স্থানীয় পুলিশের অনুমতি নিয়ে চলতি সপ্তাহের সোমবার সকালে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। এর পর অন্দ্রপ্রদেশের নেল্লোর থেকে ফিরিয়ে আনেন তাঁর ছেলেকে। গত ১২ মার্চ নেল্লোরের রহমতবাদে বন্ধুর বাড়ি গিয়েছিলেন রাজিয়া বেগমের ছোট ছেলে নিজামউদ্দিন। আচমকা লকডাউনের কারণে বন্ধুর বাড়ি আটকে পড়ে সে। বাড়ি ফেরার ইচ্ছে থাকলেও পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকার কারণে ফিরতে পারে না। মায়ের মন ছটফট করতে থাকে। ৬ এপ্রিল সকালে বেরিয়ে পড়লেন ছেলেকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য। পরের দিন অর্থাৎ ৭ এপ্রিল দুপুরে গিয়ে পৌঁছলেন ছেলের কাছে। এর পর আবার সেখান থেকে রওনা দিয়ে বুধবার অর্থাৎ ৮ এপ্রিল বিকেলে নিজের বাড়ি পৌঁছলেন রাজিয়া বেগম। 

আরে পড়ুন— রাস্তায় জীবানুনাশক টানেল! মানুষ, বাইক ভিতরে ঢুকলেই ছড়াচ্ছে স্যানিটাইজার

৪৮ বছর বয়োসী রাজিয়া বেগম জানিয়েছেন, একা মহিলার পক্ষে দু চাকার গাড়ি নিয়ে এত দূরে সফর করা সত্যি কঠিন ছিল। কিন্তু মনের ইচ্ছা ও সাহস তাঁকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। রাস্তায় যানজট কম ছিল ঠিকই। নিজের সঙ্গে তিনি কিছু রুটি নিয়ে ছিলেন যাতে রাস্তায় কোনও সমস্যা না হয়! বাড়ি থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে নিজামাবাদের বোধান শহরের একটি সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাজিয়া। ১৫ বছর আগেই তাঁর স্বামী মারা গিয়েছেন। দুই ছেলেকে নিয়েই তাঁর সংসার। বড় ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে। আর ছোট ছেলে ডাক্তারি পড়তে চায়। দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় পাশ করে এমবিবিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। বাড়ি ফিরে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে রাজিয়ার খবর। সবার মুখে একই কথা, মায়েরা এমনই হয়!

.