সুষমার দর্শনে মোদীই প্রধানমন্ত্রী
গুজরাত। একসময়ের দাঙ্গার স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে রেখে উন্নয়নকে সঙ্গী করেছে। ২০০২ আর ২০১২, এই ১০ বছরে সবরমতীর জল যেমন ঘোলাটে হয়েছে, গুজরাত রূপকার নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে খানিকটা বিবর্তিতও হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। সাধারণ নির্বাচন আবার দরজায় কড়া নাড়ছে। চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনের যখন আর ১৮ মাসও বাকি নেই, তখন খোদ সুষমা স্বরাজের মতো বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের চোখে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখা নি:সন্দেহে অনেকগুলো রাজনৈতিক সমীকরণকে মিলিয়ে দেয়।
গুজরাট। একসময়ের দাঙ্গার স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে রেখে উন্নয়নকে সঙ্গী করেছে। ২০০২ আর ২০১২, এই ১০ বছরে সবরমতীর জল যেমন ঘোলাটে হয়েছে, গুজরাত রূপকার নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে খানিকটা বিবর্তিতও হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। সাধারণ নির্বাচন আবার দরজায় কড়া নাড়ছে। চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনের যখন আর ১৮ মাসও বাকি নেই, তখন খোদ সুষমা স্বরাজের মতো বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের চোখে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখা নিঃসন্দেহে অনেকগুলো রাজনৈতিক সমীকরণকে মিলিয়ে দেয়।
ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বর তরফে এটাই সম্ভবত প্রথম ও ইঙ্গিতবাহি পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীই যে বিজেপির তুরুপের তাস তা স্পষ্ট সুষমা স্বরাজের কথাতেই। গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বদোদরায় এসে সুষমা স্বরাজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "দ্বিতীয় কেউ নন, মোদীই যোগ্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।" তবে কি দেশের শীর্ষ ক্ষমতায় বসার দৌড়ে গুজরাত মুখ্যমন্ত্রীকেই এগিয়ে রাখছে তাঁর দল? সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সুষমা বলেন, "সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।" মোদীর তারিফ করতে গুজরাটের উন্নয়নের খতিয়ানকেই তুলে ধরেছেন লোকসাভার বিরোধী দলনেত্রী। গুজরাতের উন্নয়নকে বরাবর প্রাধান্য দিয়ে আসা মোদী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে এনেছেন থ্রি-ডি চমক। একটি স্টুডিও থেকে ক্যামেরাবন্দি হচ্ছে মোদীর ভাষণ। একই সময়ে সেই প্রচার দেখানো হচ্ছে একাধিক জনসভায়। এক ব্রিটিশ সংস্থার সঙ্গে এই থ্রিডি প্রচারের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৪ অবধি ওই সংস্থাটি আর কোনও সর্বভারতীয় নেতার প্রচার করতে পারবে না। থ্রিডি অবয়বে মোদী হাততালিও কুড়োচ্ছেন ভালই। এমনই একটি জনসভার হোর্ডিংয়ে রাজ্যবাসীর কাছে আরও ৫ বছর সময় চেয়েছেন মোদী। অন্যদিকে, প্রত্যেকটি প্রচার কর্মসূচীতে মোদীর নিশানা এড়াতে পারেনি দিল্লি। মোদীর ভাষায়, "গত ১১ বছর ধরে গুজরাট ও গুজরাটবাসীদের সম্মানহানির চেষ্টায় লাগাতার প্রচার চলছে। গোটা বিশ্ব যখন গুজরাট প্রসঙ্গে কথা বলে, তখন তার বিষয় থাকে শুধুই উন্নয়ন। কিন্তু দিল্লির প্রসঙ্গ এলেই, বিষয় হয় দুর্নীতি।"
বিজেপির তারকা নেতা নভজ্যোত সিং সিধুর ঝাঁঝাল বক্তব্য একদিকে যেমন উন্মাদনা এনেছে দলীয় কর্মীদের মধ্যে, তেমনই মোদী বিরোধীদেরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। গুজরাটে বিজেপির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই প্যাটেলকে 'দেশদ্রোহী' বলে কটাক্ষ করেছেন সিধু। প্যাটেলের নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রচারে গিয়েই জন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন সিধু। এসবের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পারদ চড়ছে মোদীগড়ে। রাজনৈতিক দূরদর্শীরা বলছেন, মোদীর পা গুজরাতের মাটিতে থাকলেও, চোখ দিল্লিতে। সুষমার ইঙ্গিত যদি সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে গুজরাতের ভোট মোদীর কাছে মক-টেস্ট। উন্নয়েনের পরীক্ষায় গুজরাটের মানুষ তাঁকে কত নম্বর দেয় সেটা যেমন দেখার, তেমনই নজর রাখতে হবে ভাটনগরের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষটিকে কেন্দ্র করে দিল্লির রাজনীতি কতটা বিবর্তিত হয় সেই দিকেও।